বাদাম রোজকার প্রণালীতে খানিকটা মুচমুচে ভাব এবং স্বাদ যোগ করার সর্বোত্তম উপায়গুলির একটি। পুষ্টিকর হওয়া বাদে এগুলি প্রচুর সক্রিয় জৈব যৌগ বহন করে যা নিরাময় করে এবং স্বাস্থ্যবর্ধনে সাহায্য করে। আখরোট তার থেকে কিছুই আলাদা নয়। আমরা প্রায় সবাই জানি যে বাদামের কি উপকারিতা রয়েছে মস্তিষ্ক এবং হৃদয়ের জন্য। তবে এই বাদামের আপনার স্বাস্থ্যে দেওয়ার মত অনেককিছু রয়েছে।
এটি ফাইবার, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং অসম্পৃক্ত চর্বি প্রদানকারী একটি ভাল উৎস যেটি আপনার খাদ্যাভ্যাসে একটি স্বাস্থ্যকর সংযোজন। এটির ব্যবহার বলা যায় খাবার, ওষুধ, অবলম্বন, রং এবং বাতির তেল হিসেবে। আখরোট যেরকম রয়েছে সেভাবেই খাওয়া যেতে পারে, দগ্ধ হতে পারে, আচারের আকারে খাওয়া যেতে পারে বা আখরোটের মাখন হিসেবেও খাওয়া যেতে পারে। আখরোট ব্রাউনির প্রণালীতেও ব্যবহার করা যেতে পারে, কেক, পাই, আইসক্রিমের টপিং এবং কিছু রান্নার আভরণ হিসেবেও ব্যবহার করা যেতে পারে। আখরোট খাওয়ার আরেকটি পদ্ধতি হল আখরোটের দুধ, যা স্মুদির ক্রিম জাতীয় ভীত হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে।
বিশ্বাস করা হয় যে আখরোট গাছের বয়স প্রায় 700 বি সি। চতুর্থ শতাব্দী এ ডি-তে, রোমানীয়রা প্রচুর ইউরোপীয় দেশে আখরোট প্রবর্তিত করে যেখানে সেটি সেই সময় থেকে আজও ফলানো হয়। আমরা যেই বাণিজ্যিক আখরোটের সাথে পরিচিত তা স্থানীয় মূলত ভারতের এবং ক্যাস্পিয়ান সমুদ্রের আশপাশের অঞ্চলের। ইংরেজ আখরোট হিসেবে পরিচিত, এটির নামকরন হয়েছে ইংরেজ বণিকদের আদলে যারা সারা বিশ্বে বাণিজ্যের জন্য ঘুরে বেড়াতো। কালো আখরোট হচ্ছে এটির আরেকটি প্রকার যা উত্তর আমেরিকার স্থানীয়। আখরোট এখন চিনেও ফলানো হয় এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে ক্যালিফোর্নিয়া ও অ্যারিজোনাতে।
জানতেন কি?
অন্যান্য বাদামের মত আখরোট প্রকৃতপক্ষে বাদাম নয় বরং এটি গোলাকার, এক বীজের আঁটিযুক্ত শাঁসালো ফল যা আখরোট গাছ থেকে গৃহীত। যেই আখরোটের সাথে আমরা পরিচিত সেটি পাওয়া যায় আখরোট ফলের বীজকে দুই ভাগে ভাগ করে।
আখরোটের বিষয়ে কিছু মৌলিক তথ্যঃ
- বোটানিকাল নামঃ জুগ্লান্স রেজিয়া (ইংরেজ আখরোট)
- পরিবারঃ জুগ্লানদাসি
- প্রচলিত নামঃ আখরোট
- ব্যবহৃত অংশঃ আখরোটের শাঁস হল সেই অংশ যা মূলত ব্যবহার হয়। এটির খোল পাতারও স্বাস্থপকারিতা রয়েছে বলে শোনা যায়।
- স্থানীয় অঞ্চল এবং ভৌগোলিক বণ্টনঃ যদিও একসময়ে আখরোট ভারত এবং উত্তর আমেরিকার স্থানীয় ছিল, এখন সেটি বাণিজ্যিকভাবে চিন, ইরান, তুরস্ক, মেক্সিকো, ইউক্রেন, চিলি, এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ফলানো হয়। 2016-17 সালে চিন সারা বিশ্বের বৃহত্তম আখরোট উৎপাদক হয়। চিন বিশ্বের আখরোট উৎপাদনের 50% ফলিয়েছে। ভারতে আখরোট চাষ করা হয় জম্মু ও কাশ্মীর, উত্তরাঞ্চল, হিমাচল প্রদেশ এবং অরুণাচল প্রদেশের মত উত্তর ও উত্তর-পূর্ব রাজ্যগুলি। জম্মু ও কাশ্মীর ভারতে আখরোটের বৃহত্তম উৎপাদক।
- মজাদার তথ্যঃ আদিম রোমান যুগে আখরোট ভগবানদের খাবার হিসেবে গণ্য করা হত। এবং এটি জুপিটারের নামের আদলে নামকরণ করা হয়েছে জুগ্লান্স রেজিয়া ।