আমলা হল একটা সুপরিচিত ঘরোয়া নাম এবং ভারতে প্রাচীনতম আয়ুর্বেদিক প্রতিষেধকগুলির অন্যতম। এই দেশে এমন কোনও ব্যক্তি নেই যিনি এই উজ্জ্বল সবুজ রসালো ফলগুলির সাথে পরিচিত নন যা ইন্ডিয়ান গুজবেরি (আমলকী) নামেও জানা যায় এবং বিশ্ব জুড়ে ব্যবহৃত হয়।
যদি আপনি উদ্ভিদজাত ভেষজ ঔষধির একজন অনুরাগী অথবা ঘরোয়া প্রতিষেধকগুলির একজন ভক্ত হন আপনি হয়তো ইতিমধ্যেই এর হিতকর গুণগুলির অন্তত: একটি যেমন আরোগ্যকর গুণ থেকে উপকৃত হয়েছেন। হাতের নাগালে লভ্য এমন সুলভ এই ধরণের জীবাণু-প্রতিরোধী (অ্যান্টিবায়োটিক) এবং পুষ্টিকর গুণমান এড়ানো কঠিন। আয়ুর্বেদীয় ডাক্তাররা দাবি করেন যে এটা অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট এবং পুষ্টিসাধনের সবচেয়ে মূল্যবান উৎস। বস্তুত:, আমালকী নামটার অর্থ হল “মা” এবং “বাঁচিয়ে রাখা” যা এর আরোগ্যকর এবং সযত্নে লালন করার গুণগুলির বিষয়ে নির্দেশ করে।
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আয়ুর্বেদীয় গ্রন্থগুলির দুটো - চরক সংহিতা এবং সুশ্রুত সংহিতা একে একটা আয়ুবর্ধক ভেষজ হিসাবে উল্লেখ করেছে। শুধুমাত্র এটাই নয়, ভারতীয় পুরাণে এই ফলের একটা বিশেষ স্থান আছে যেখানে একে বলা হয় বিষ্ণুর অশ্রু এবং বৈষ্ণবীয় ঐতিহ্য এবং শৈব ঐতিহ্যে রুদ্রাক্ষ হিসাবে এটা সমান গুরুত্ব ধারণ করে। আমলা গাছ এবং ফল এভাবে ভারতে পূজিত হয়। অনেকের কাছে প্রাচীন ঐতিহ্য এবং যুক্তিগুলি কুসংস্কার মনে হয় কিন্তু আমলার উপকারিতা এবং হিতকর গুণগুলি দেখে আমি আবার ভাবতে বাধ্য হচ্ছি।
আমলার বিষয়ে কিছু মৌলিক তথ্য:
- উদ্ভিদবিদ্যাসংক্রান্ত নাম: ফিল্যানথাস এম্বলিকা বা এম্বলিকা অফিসিন্যালিস
- জাতি: ফিল্যানথাসিয়ে; ইউফরবিয়েসিয়া
- প্রচলিত নাম: ইন্ডিয়ান গুজবেরি, আমলা
- সংস্কৃত নাম: ধাত্রী, অমালকা, আমলকী
- ব্যবহৃত অংশসমূহ: ফল (টাটকা এবং শুকনো দুটোই), বীজ, ছাল, পাতা, ফুল।
- দেশীয় অঞ্চল এবং ভৌগোলিক বিস্তৃতি: আমলা হচ্ছে ভারতের দেশজ কিন্তু এটা চীন এবং মালয়েশিয়াতেও জন্মায়।
- কর্মশক্তি: কফ, পিত্ত এবং বাত নামক শরীরের সমগ্র তিন দোষের ভারসাম্য আমলা রাখে বলে ধারণা করা হয়। কিন্তু, আয়ুর্বেদীয় ডাক্তাররা দাবি করেন যে এটার একটা যথার্থ শীতল রাখার ক্রিয়া, খাওয়ার পরে পাকস্থলীতে একটা হালকা ভাবের অনুভূতি এবং শরীরে শুষ্ক প্রভাব থাকে।