ভারতবর্ষ, আপনারা অনেকেই জানেন, প্রকৃতির আশীর্বাদ ধন্য এবং লোক-প্রতিকার এবং বিকল্প চিকিৎসার দেশ। এই প্রতিবেদনে, আমরা শ্বেত মুসলি নামে একটি প্রাকৃতিক বিরল ঔষধিকে সবার দৃষ্টিগোচর করতে এবং অন্বেষণ করতে যাচ্ছি।
শ্বেত মুসলি একটি বিরল ভারতীয় ঔষধি, যা সাধারণত বিশ্বের অন্য কোথাও পাওয়া যায় না। এটি পাওয়া যায় শুধু ভারতের জঙ্গলে। অত্যন্ত সুখের বিষয়, বিজ্ঞানের অগ্রগতির সাথে সাথে গবেষকরা শ্বেত মুসলির আয়ুর্বেদিক উপকারিতাগুলি অনুসন্ধান করতে পারছেন।
আন্তর্জাতিক বাজারে এই ঔষধির চাহিদা ক্রমশই বৃদ্ধি পাচ্ছে। এর কারণগুলি হল এর উপকারিতা, বিশেষত এই ঔষধি পুরুষদের যৌন স্বাস্থ্য সম্পর্কিত সমস্যার সমাধানের জন্য অত্যন্ত উপকারী। শ্বেত মুসলি একটি উৎকৃষ্ট এ্যাডাপটোজেন (মানসিক চাপ বিরোধী ঔষধি)। আয়ুর্বেদ চিকিৎসকদের কাছে এই ঔষধি "শ্বেত স্বর্ণ" অথবা দিব্য ঔষধি নামে সুপরিচিত।আয়ুর্বেদ চিকিৎসকরা ইংগিত করেন, ভায়গ্রার মতনই শ্বেত মুসলি পুরুষদের যৌন অবস্থার উন্নতি ঘটাতে সক্ষম। অধিকন্তু, এর কোন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই, যা বাণিজ্যিক ভাবে উপলব্ধ রাসায়নিক পরিপূরকগুলিতে (যেমন ভায়গ্রা) সাধারণত পাওয়া যায়।
শুধু ভারতবর্ষেই নয়, সমগ্র বিশ্বে ভায়েগ্রার মতন বাণিজ্যিক ঔষধগুলির প্রাকৃতিক বিকল্প হিসাবে শ্বেত মুসলির জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পাচ্ছে। শ্বেত মুসলির ইতিহাস অনেক প্রাচীন।"রাজ নিঘণ্টু" নামক প্রাচীন ভারতীয় গ্রন্থে এর প্রথম উল্লেখ পাওয়া যায়। এই বইটি হল আয়ুর্বেদের মেটেরিয়া মেডিকা (নির্দিষ্ট ঔষধি সম্পর্কে, বিশেষ করে তাদের চিকিৎসা-বিদ্যাগত বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে বিষদ তথ্য সম্বলিত বই)।
যদিও ভারতবর্ষে এটি একটি সাধারণ জংলি উদ্ভিদ, কিন্তু অযৌক্তিক ভাবে কেটে ফেলা এবং চাষ করার জন্য এটির অস্তিত্ব বিপন্ন হয়ে পড়েছে। আইইউসিএন (প্রকৃতি সংরক্ষণের জন্য আন্তর্জাতিক ইউনিয়ন) বিপন্ন উদ্ভিদের তালিকাতে এই ঔষধিটি যুক্ত করেছে, যার অর্থ এই ঔষধি সংরক্ষিত না হলে তা শীঘ্রই বিলুপ্ত হয়ে যাবে। কিন্তু দুঃখের বিষয়, এই বিপদ নির্বিশেষে, ক্রমবর্ধমান বৈশ্বিক চাহিদা এবং নতুন বৈজ্ঞানিক অগ্রগতিগুলি নগদ ফসলের আকারে মাঠের খামারগুলিতে শ্বেত মুসলিকে রেখেছে।
শ্বেত মুসলি সম্পর্কে কিছু মৌলিক তথ্য:
- বোটানিক্যাল নাম: ক্লোরোফাইটাম বোরিভিলিয়েনাম অথবা এ্যাস্পারাগাস এ্যাডসেনডেন্স
- পরিবার: লিলিএসি
- সাধারণ নাম: শ্বেত মুসলি অথবা সফেদ মুসলি, সাদা মুসলি, ভারতীয় স্পাইডার গাছ
- সংস্কৃত নাম: মুসলি
- যে অংশ ব্যবহৃত হয়: শিকড় এবং বীজ
- প্রকৃতিগত অঞ্চল এবং ভৌগলিক বিতরণ: শ্বেত মুসলি শুধুমাত্র ভারতবর্ষে পাওয়া যায়। ভারতবর্ষে গুজরাট, মহারাষ্ট্র, এবং রাজস্থান শ্বেত মুসলির প্রধান উৎস।
- কর্মশক্তিসম্বন্ধীয় বিজ্ঞান: বাত এবং পিত্ত দোষ হ্রাস করে কিন্তু কফ বৃদ্ধি করে।