শিউলি একটি অতি সুন্দর এবং ঔষধি ফুল গাছ। এর সুন্দর সাদা ফুলের শীতল এবং শান্ত সুবাস অনেকই পছন্দ করেন। এর ঔষধি গুণের জন্য আয়ুর্বেদ শাস্ত্রে এর অবস্থান খুবই উচ্চে। সাধারণ ভাবে এই গাছ পারিজাত বা রাতের জেসমিন নামে পরিচিত। ভারতীয় পৌরাণিক কাহিনী এবং লোককথাতে এই গাছটির একটি রহস্যময় স্থান রয়েছে। ভগবৎ গীতা এবং হরি-বংশ পুরাণে পারিজাত ফুল এবং গাছের উল্লেখ আছে। ভারতীয় পৌরাণিক সাহিত্য অনুসারে, পারিজাত একটি স্বর্গীয় গাছ। আপনি জানলে আশ্চর্য হবেন যে পারিজাত ফুল শুধু রাত্রিবেলাতেই ফোটে, এবং সকাল হতে না হতেই গাছ থেকে সব ফুল ঝড়ে পড়ে যায়। এই গাছ "রাতের রাণী" নামে বিখ্যাত। আশ্চর্যের ব্যাপার, এই গাছের বৈজ্ঞানিক নামের অর্থ "দুঃখের বৃক্ষ"।
শিউলি বা পারিজাত একটি গাছ অথবা গুল্মের মত বেড়ে উঠতে পারে। গুল্মটির উচ্চতা প্রায় 10-11 মিটার পর্যন্ত হয়। এর গায়ের পরতের মত বাকল রুক্ষ এবং ধূসর রঙের হয়। গাছের লম্বা পাতাগুলিতে রোম থাকে। এর ডালের প্রান্তে সাদা রঙের ফুল থোকায় থোকায় ফুটে থাকে। গাছের বাদামী রঙের বীজ গোল বা হৃদয়াকৃতির হয়। এই গাছ অল্প ছায়া-যুক্ত জায়গায় ভাল হয় এবং দৈনন্দিন খুব বেশি যত্নের প্রয়োজন হয় না।
শিউলি সম্পর্কে কিছু মৌলিক তথ্য:
- বৈজ্ঞানিক নাম: নিকট্যান্থেস আরবর-ট্রিস্টিস
- পরিবার: ওলিয়েসি
- সংস্কৃত নাম: পারিজাত, শেফালি, শেফালিকা
- সাধারণ নাম: পারিজাত, হারসিংগার, দুঃখের বৃক্ষ, রাতের রাণী, রাতের জেসমিন, কোরাল জেসমিন, শিউলি, রাত কি রাণী
- যে অংশ ব্যবহৃত হয়: পাতা, ফুল, বীজ
- স্থানীয় অঞ্চল এবং ভৌগলিক বিতরণ: শিউলি দক্ষিণ এশিয়ার গাছ। এই গাছ মূলত পাওয়া যায় উত্তর ভারতে, নেপালে, পাকিস্তানে এবং থাইল্যান্ডে।
আপনি জানতেন কি?
ভারতবর্ষের অঙ্গরাজ্য পশ্চিম বঙ্গ রাজ্যের অফিসিয়াল ফুল হল শিউলি। এটি হিন্দু উৎসবগুলিতে দেবী দুর্গা এবং শ্রীবিষ্ণুর জন্য একটি উৎসর্গ হিসাবে ব্যবহৃত হয়।