স্ট্রোক কি?
স্ট্রোক একটি সম্ভাব্য মারাত্মক স্নায়ু সম্পর্কিত শারীরিক অবস্থা , যা যখন মস্তিষ্কের কোনো এক অংশে রক্ত সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায় তখন ঘটে। দ্রুত এবং সক্রিয় চিকিৎসা পদ্ধতি মস্তিষ্ককে দ্বীর্ঘস্থায়ী ক্ষতি এবং অক্ষমতা থেকে বাঁচাবে।
এই রোগের প্রধান লক্ষণ এবং উপসর্গগুলি কি?
লক্ষণ এবং উপসর্গগুলি পরিবর্তন হয় এবং হটাৎ ঘটে এবং প্রতিটি ব্যক্তির ক্ষেত্রে আলাদা হয়। এগুলিকে এফ.এ.এস.টি হিসাবে চিহ্নিত করা হয় :
- মুখ (ফেস ) - চোখ বা ঠোঁটের সাথে মুখও একদিকে বেঁকে যায় এবং হাসতে অক্ষম হয়ে পরে।
- হাত (আর্মস)- দুর্বলতা বা অবসতার কারণে দুটো হাতই তুলতে অক্ষম।
- বক্তৃতা (স্পিচ) - জেগে থাকা অবস্থায় কথা বলতে অক্ষম।
- সময় (টাইম) - তৎক্ষণাৎ চিকিৎসা ব্যবস্থার জন্য কল করুন।
অন্যান্য উপসর্গগুলোর অন্তর্ভুক্ত হলো :
- কোনো এক দিকের বা কোনো বিশেষ অঙ্গের সম্পূর্ণ প্যারালাইসিস যেমন মুখের এক পাশের।
- আবঝা দৃষ্টি বা অন্ধ হয়ে যাওয়া।
- ঝিমুনি বা মাথা ঘোরা।
- ধন্দ।
- ভারসাম্য এবং সমন্বয়ের সমস্যা।
- কিছু গিলতে সমস্যা।
- চেতনা হারিয়ে ফেলা।
- শরীরের এক বা দুই পাশে অবসতা।
এই রোগের প্রধান কারণ কি ?
- মস্তিষ্কে রক্ত সরবরাহের ব্লকেজের ফলে ইসকেমিক স্ট্রোক হয়। রক্তনালীর দেওয়ালে ভেতর থেকে প্লেক (কলেস্টেরল এবং ক্যালসিয়াম) জমা হওয়ার কারণে ব্লকেজ হয়।
- মস্তিষ্কে কোনো একটি ধমনী ফেটে যাওয়ার কারণে হেমোরেজিক স্ট্রোক (সেরেব্রাল বা ইন্ট্রাক্রেনিয়াল) হয়। হেমারেজ স্ট্রোকের আরেকটি প্রধান কারণ হলো উচ্চ রক্ত চাপ।
- ধমনীর আংশিক ব্লকেজের কারণে ট্রানসিয়েন্ট ইসকেমিক আক্রমণ , যাকে মিনি স্ট্রোক বা ওয়ার্নিং স্ট্রোকও বলে , হয়। এটি একঘন্টার কম সময় অবধি স্থায়ী থাকে এবং একটি আসন্ন গুরুতর স্ট্রোকের সতর্কতার সংকেত।
এই রোগের নির্ণয় এবং চিকিৎসা কিভাবে হয় ?
আপনার চিকিৎসা ইতিহাস , পারিবারিক ইতিহাস এবং শারীরিক পরীক্ষার ওপর ভিত্তি করে , ডাক্তার নির্ণয় করতে পারবেন। তিনি মুখ, হাত এবং পায়ের অবসতাও পরীক্ষা করবেন ; ঝাপসা দৃষ্টি ; ধন্দ; এবং কথা বলতে সমস্যা এগুলোও পরীক্ষা করবেন। রক্ত পরীক্ষা , পাল্স রেট এবং রক্ত চাপের পরীক্ষা, সিটি স্ক্যান , সিটি এনজিওগ্রাম , এমআরআই স্ক্যান , গ্রাস পরীক্ষা , ক্যারোটিড আল্ট্রাসাউন্ড এবং ইলেক্ট্রোকার্ডিওগ্রাম পরিচালনা করা যেতে পারে।
ইসকেমিক স্ট্রোকের চিকিৎসার মধ্যে রয়েছে থ্রোম্বোলিসিস, থ্রমবেকটমি, অ্যান্টিপ্লেটেলেট থেরাপি, অ্যান্টিকোয়াগুলেন্ট থেরাপি , অ্যান্টিহাইপারটেনসিভ ড্রাগস্ , স্ট্যাটিনস এবং ক্যারোটিড এন্ডারটেরেক্টমি।
অস্ত্রোপচারের দ্বারা মস্তিষ্ক থেকে রক্ত অপসারণ করা হয় এবং মস্তিষ্কের মধ্যে উচ্চ চাপকে নিয়ন্ত্রণ করা হয় এবং এই ভাবে হেমোরেজিক স্ট্রোকের চিকিৎসা করা হয়।