স্পন্ডাইলোসিস কি?
স্পন্ডাইলোসিস একটা ব্যাধি যার কারণে হাড়ে এবং সাথে কোমলাস্থি এবং ডিস্কেও পরিবর্তন হয়। সময়ের সাথে স্পন্ডাইলোসিসের ফলে মেরুদন্ডের টিসু (ডিস্ক) যেটা মেরুদন্ডের (ভার্টিব্রা) হাড়কে আসনের মতো ঢেকে রাখে সেটা ভেঙে যায়। শেষপর্যন্ত স্পন্ডাইলোসিস ফলে মেরুদন্ড শক্ত হয়ে যায় বা অস্টিওআর্থ্রাইটিস হয়। বিশেষ করে এটা ঘাড়ের ভার্টিব্রাকে এবং পিঠের নিম্নভাগে, মানে, লাম্বার এলাকাকে আক্রমণ করে।
এর প্রধান লক্ষণ ও উপসর্গগুলি কি কি?
স্পন্ডাইলোসিসের প্রধান লক্ষণ ও উপসর্গগুলি এর প্রকৃতির উপর নির্ভর করে:
লাম্বার স্পন্ডাইলোসিস
- ভোরবেলায় পিঠে শক্তভাব ও পিঠে ব্যথা।
- অনেকক্ষণ বসে থাকলে ব্যথা।
- ঝুঁকলে বা কিছু জিনিস তুললে ব্যথা।
সার্ভাইকাল স্পন্ডাইলোসিস
- মাথার পিছনদিকে মাথা ব্যথা।
- পায়ে ও বাহুতে দূর্বলতা ও অসাড়তা।
- ঘাড়ে শক্তভাব।
- ভারসাম্যের অভাব।
- ঘাড়ে ব্যথা যেটা কাঁধের নিচ পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়তে পারে।
- পায়ে বা কাঁধে অস্বাভাবিক অনুভুতি।
- প্রস্রাব ও পায়খানা নিয়ন্ত্রণে অসুবিধা।
থোরাসিক স্পন্ডাইলোসিস
- পিছনে ঝুঁকলে পিঠের মাঝখানে ব্যথার অনুভুতি।
- যখন মেরুদন্ড সামনে ও পিছনে নাড়ানো হয় তখন ব্যথা।
এর প্রধান কারণগুলো কি কি?
স্পন্ডাইলোসিসের প্রধান কারণগুলো হলো;
- বয়স বৃদ্ধি।
- অতীতে কোনো ঘাড়ে চোট, যেমন মোটর দূর্ঘটনায় আঘাত পাওয়া।
- প্রচন্ড আর্থ্রাইটিস।
- অতীতে মেরুদন্ডে আঘাত পাওয়া।
এটি কিভাবে নির্ণয় ও চিকিৎসা করা হয়?
নিম্নলিখিত উপায়ে স্পন্ডাইলোসিসের নির্ণয় করা হয়:
- বিশদ ইতিহাস এবং পিঠ ও ঘাড়ের নমনীয়তা দেখার জন্য শারীরীক পরীক্ষা।
- হাঁটা লক্ষ করা।
- পা, বাহু এবং হাতের শক্তি ও প্রতিক্রিয়া পরীক্ষা।
- দরকার পড়লে এক্স-রে, এম আর আই বা সিটি স্ক্যান করা হয়।
নিম্নলিখিত উপায়ে স্পন্ডাইলোসিসের চিকিৎসা করা হয়:
- ব্যথা কমানোর জন্য দোকান থেকে কেনা ওষুধ।
- ব্রেস বা নরম কলার।
- আক্রান্ত অঞ্চলের পেশীর শক্তি বাড়াতে ব্যায়াম করা।
- শারীরিক থেরাপি।
- প্রচন্ড ব্যথাতে ইন্জেক্সন বা ব্যথা কমানোর ওষুধ।
- গুরুতর ক্ষেত্রে যেখানে ইন্জেক্সন বা ব্যথা কমানোর ওষুধ কোনো কাজ দেয় না বা দৈনন্দিন জীবনের কাজকর্ম ব্যহত হয় সেখানে অস্ত্রোপচার করা হয়।