অতিরিক্ত ব্যায়াম কি?
যদিও সুস্থ ও কর্মক্ষম শরীরের জন্য ব্যায়াম করা দরকার, কিন্তু আমাদের শরীর একটা সীমা পর্যন্তই শারীরিক চাপ সহ্য করতে পারে এবং সেই সীমা অতিক্রম করাকেই অত্যধিক ব্যায়াম করা বলা হয়। অত্যধিক ব্যায়াম করা অনেক সমস্যা ডেকে আনতে পারে এবং এমন কি ব্যক্তির রোজকার কাজকর্মও ব্যাহত হতে পারে।
এর প্রধান লক্ষণ ও উপসর্গগুলি কি কি?
অতিরিক্ত ব্যায়ামের লক্ষণ ও উপসর্গগুলি নিচে উল্লেখ করা হল:
- ক্লান্তি।
- খিটখিটে ভাব ও মেজাজ পরিবর্তন।
- ঘুমে ব্যাঘাত।
- অত্যধিক ওজন হ্রাসের ফলে শরীরের ভর সূচক স্বাভাবিকের চেয়ে নিচে নেমে যায়।
- উদ্বিগ্নতা।
- প্রায়ই ঠাণ্ডা লেগে যাওয়া।
- অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে ভারীভাব এবং পেশীতে ব্যথা অনুভব।
- হতাশার অনুভুতি।
- অত্যধিক ব্যায়ামের ফলে চোট-আঘাত।
এর প্রধান কারণ কি কি?
অতিরিক্ত ব্যায়ামের সমস্যার প্রধান কারণগুলি হল:
- সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি যদি ব্যায়াম না করেন, তাহলে কম্পালসিভ এক্সারসাইজ বা ব্যায়ামের বাধ্যবাধকতার লক্ষণের ফলে হতাশা, উদ্বিগ্নতা, খিটখিটে ভাব এবং অন্যান্য সমস্যা দেখা দেয়।
- বুলিমিয়া নার্ভোসা, খাওয়া-দাওয়া সংক্রান্ত বিকার, এক্ষেত্রে অত্য়ধিক ব্যায়ামের পর সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি অত্যধিক খাবার খান। বুলিমিয়া নার্ভোসাগ্রস্ত ব্যক্তিরা নিজের শরীরের আকার ও ওজন সম্পর্কে খুব খুঁতখুঁতে ও প্রায় বিমুগ্ধ থাকেন এবং নানান উপায়ে ওজন কমাতে চেষ্টা করে, কারণ তাঁরা নিজেদেরকে মোটা মনে করেন।
এটি কিভাবে নির্ণয় ও চিকিৎসা করা হয়?
কোনও ব্যক্তি যদি ব্যায়াম করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ না করতে পারেন এবং অত্যধিক ব্যায়াম করার লক্ষণ যদি থেকে থাকে, তাহলে তাঁর উচিত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া। চিকিৎসক শারীরিক পরীক্ষা করবেন এবং অবস্থার সম্বন্ধে কিছু প্রশ্ন করবেন। চিকিৎসক অত্যধিক প্রশিক্ষণের কারণ সনাক্ত করবেন এবং কম্পালসিভ এক্সারসাইজ অথবা বুলিমিয়া নার্ভোসার ব্যাপারে সন্দেহ হলে তিনি কোনও কাউন্সিলরকে দেখানোর পরামর্শ দেবেন।
অবস্থার চিকিৎসার জন্য নিম্নলিখিত পদ্ধতি ব্যবহার করা হতে পারে:
- অ্যান্টি-ডিপ্রেসেন্ট ওষুধ।
- কগনিটিভ আচরণগত থেরাপি।
- সহায়ক দল।
অতিরিক্ত ব্যায়াম করা কমানো এবং পরিচালনা করতে জীবনযাপনে কিছু পরিবর্তন নিম্নলিখিত:
- যে মাত্রায় আপনি ব্যায়াম করছেন তার সঙ্গে ভারসাম্য রেখে খাদ্য গ্রহণ করুন।
- ব্যায়ামের সময় প্রচুর পরিমানে তরল পদার্থ গ্রহণ করবেন।
- প্রচণ্ড ঠাণ্ডা অথবা গরমে ব্যায়াম করা এড়ান।
- রাতে অন্তত 8 ঘণ্টা ঘুমাবেন।
- দু’টো ব্যায়ামের অবধির মধ্যে কম করে ছয় ঘণ্টা বিশ্রাম নেবেন।
- সপ্তাহে একদিন ব্যায়াম থেকে বিরতি নিন।