হাইপারপ্রলিনিমিয়া টাইপ টু কি?
হাইপারপ্রলিনিমিয়া টাইপ টু হল একটি বিরল মেটাবলিক ডিজঅর্জার বা বিপাকীয় ব্যাধি, যা রক্তের প্রোলিন নামে একটি অ্যামিনো অ্যাসিডের অস্বাভাবিক উচ্চ-মাত্রার দ্বারা চিহ্নিত করা হয়। প্রোলিনের মাত্রা স্বাভাবিকের থেকে 10 থেকে 15 গুন্ বেশি লক্ষ্য করা যায় এবং তার ফলে ডেল্টা পাইরোলিন-5-কার্বোক্সিলেট ডিহাইড্রোজিনাস নামক এক ব্রেকডাউন এনজাইমের অভাব দেখা দেয়।
হাইপারপ্রলিনিমিয়ার প্রধান লক্ষণ এবং উপসর্গগুলি কি কি?
লক্ষণ এবং উপসর্গগুলি তীব্রতায় ভিন্ন রকমের হতে পারে এবং সাধারণত যেগুলি অন্তর্ভুক্ত :
- রক্তে প্রোলিনের মাত্রা স্বাভাবিকের থেকে 10 থেকে 15 গুন্ বেশি
- শরীরে পাইরোলিন-5-কার্বোক্সিলেট নামক এক যৌগের পরিমাণ অত্যধিক
- হালকা মানসিক প্রতিবন্ধকতা
- মেধার অক্ষমতা
- খিঁচুনি বা তড়কা
- নেফ্রোপ্যাথি
সাধারণত যে উপসর্গটি কম দেখা যায়, তা হলো স্কিজোফ্রেনিয়া
হাইপারপ্রলিনিমিয়ার সঙ্গে সংযুক্ত অবস্থাগুলি হল:
- লিভারের রোগ
- অপুষ্টি
- ল্যাকটিক অ্যাসিডোসিস
এর প্রধান কারণগুলি কি কি?
হাইপারপ্রলিনিমিয়া টাইপ টু হল জিনে একধরণের পরিবর্তন বা মিউটেশনের ফল, যা পাইরোলিন-5-কার্বোক্সিলেট ডিহাইড্রোজিনাস নামক এক এনজাইম উৎপাদনের নির্দেশ দেয়।
হাইপারপ্রলিনিমিয়া হল এমন এক স্বতঃস্ফূর্ত আবর্তক ব্যাধি, যেক্ষেত্রে আক্রান্ত ব্যক্তির বাবা-মা উভয়েরই মধ্যে পরিবর্তিত জিনের কপি থাকবে, কিন্তু কোনও লক্ষণ ও উপসর্গ দেখা যাবে না।
হাইপারপ্রলিনিমিয়া টাইপ এমন এক ব্যাধি, যা জন্মের সময় ঘটে এবং পুরুষ এবং নারী উভয়েই সমানভাবে প্রভাবিত হয়।
এটি কিভাবে নির্ণয় এবং চিকিৎসা করা হয়?
বিরল রোগের নির্ণয় করা প্রায়শই একটি চ্যালেঞ্জ এবং পুঙ্খানুপুঙ্খ চিকিৎসা সংক্রান্ত ইতিহাস, যত্নসহকারে শারীরিক পরীক্ষা এবং ল্যাব অনুসন্ধানের প্রয়োজন।
হাইপারপ্রলিনিমিয়া টাইপ টু-এর নির্ণয় চিকিৎসা ইতিহাস, উপসর্গ, রক্তে প্রোলিন উচ্চ-মাত্রা এবং প্রস্রাবে পাইরোলিন-5-কার্বোক্সিলেটের উচ্চ-মাত্রার ভিত্তিতে হয়।
হাইপারপ্রলিনিমিয়া টাইপ টু-এ রক্তে প্রোলিনের মাত্রা 1900 থেকে 2000 ইউনিট অবধি বৃদ্ধি পেতে পারে (রক্তে প্রোলিনের স্বাভাবিক মাত্রা প্রায় 450 ইউনিট )।
যেখানে প্রোলিন অক্সিডেজ নামক এনজাইমের অভাব থাকে, সেখানে হাইপারপ্রলিনিমিয়া টাইপ টু-র থেকে হাইপারপ্রলিনিমিয়া টাইপ ওয়ান আলাদা হওয়া উচিত। টাইপ টু-র 10 থেকে 15 গুন বেশির তুলনায় টাইপ ওয়ান-এ রক্তে প্রোলিনের মাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে 3 থেকে 10 গুন বেশি হয়।
হাইপারপ্রলিনিমিয়ার কারণ নির্ধারণের জন্য যে পরীক্ষাগুলি করা হয়, সেগুলি :
- নিউ বর্ন স্ক্রিনিং টেস্ট
- জেনেটিক টেস্টিং
জেনেটিক টেস্টিং ক্রোমোজোম, জিন অথবা প্রোটিনগুলির অস্বাভিকতাগুলি চিহ্নিত করে।
জেনেটিক টেস্টিংয়ের জন্য বিভিন্ন পদ্ধতি ব্যবহার করা যেতে পারে, যেমন :
- মলিকিউলার জেনেটিক টেস্ট
- ক্রোমোজোমাল জেনেটিক টেস্ট
- বায়োকেমিক্যাল জেনেটিক টেস্টোস্টেরোন
হাইপারপ্রলিনিমিয়ার কোনও নির্দিষ্ট চিকিৎসা নেই।
খাদ্যতালিকায় প্রোলিনের মাত্রা সীমাবদ্ধ করার ফলে উপসর্গগুলি সামান্য কমে, আবার কোনও পার্থক্য নাও হতে পারে।
ছোটোবেলায় থাকা কনভালশনের উপসর্গগুলি আপনা থেকেই ঠিক হয়ে যায় এবং প্রাপ্তবয়স্ক জীবন উপসর্গহীন বলেই মনে হয়।