ঘামাচি কি?
হিট ব়্যাশ, চলতি ভাষায় যাকে আমরা ঘামাচি বলি, তা হলো ত্বকের এমন একটি অবস্থা যার ফলে চামড়াতে চুলকুনি হয় এবং শরীরের বিভিন্ন অংশে লাল ছোপ দেখা দেয়। সাধারণত বছরের যে মাসগুলিতে প্রচণ্ড গরম থাকে এবং শরীরে স্বাভাবিকের থেকে বেশি ঘাম হয়, সে সময় ঘামাচি হয় এবং সাধারণত ত্বকের এই সমস্যা খুব অস্বস্তিকর।
এর লক্ষণ ও উপসর্গগুলি কি কি?
ঘামাচির প্রধান লক্ষণ ও উপসর্গগুলি শরীরে পরিষ্কারভাবে ফুটে ওঠে এবং সহজেই তা চেনা যায়।
এই উপসর্গগুলির মধ্যে রয়েছে:
- চামড়ার উপর লাল ছোপ ফুটে ওঠা।
- খুব ছোটো ছোটো ফোস্কার মতো ওঠা।
- ত্বকে প্রচণ্ড চুলকুনি হয়।
- গায়ের জামা কাপড় চামড়ার সঙ্গে ঘষা লাগলে খুব অস্বস্তিবোধ হয়।
- ত্বক রুক্ষ হয়ে ওঠা এবং খসখসে হওয়া।
এই ধরণের উপসর্গগুলি সাধারণত ঘাড়-গলা, কাঁধ, বুক এবং পিঠে দেখা যায়। কিছু ক্ষেত্রে ঘামাচি কনুইয়ের ভাঁজে এবং কুঁচকিতেও হয়।
এর প্রধান কারণগুলি কি কি?
আমাদের শরীর যখন সরাসরি তাপের সংস্পর্শে আসে, তখন প্রচুর ঘাম বের হয়। অত্যাধিক তাপ এবং আর্দ্রতার কারণে রোমকূপ বন্ধ হয়ে গেলে ত্বকে প্রদাহ দেখা দেয়। আর তার ফলে চামড়া চুলকোতে শুরু করে এবং ছোটো ছোটো ফুসকুড়ি ওঠে এবং জায়গাটা লাল হয়ে যায়।
কিভাবে নির্ণয় ও চিকিৎসা করা হয়?
ঘামাচি খুব সাধারণ ব্যাপার এবং সাধারণত এর ফলে শরীরে কোনও রকম জটিলতা দেখা দেয় না। ঘামাচির উপসর্গ কয়েক দিন থেকে কয়েক সপ্তাহ পর্যন্ত থাকে এবং সাধারণত কোনও রকম চিকিৎসা ছাড়াই ত্বক থেকে নির্মূল হয়ে যায়। যাইহোক, ঘামাচির সমস্যা যেহেতু বেশ অস্বস্তিকর হয়ে ওঠে অনেক ক্ষেত্রেই, তাই চিকিৎসক ঘামচির সমস্যাকে প্রতিরোধ করতে ও ত্বককে প্রশমিত করতে কিছু ব্যবস্থা নেওয়ার পরামর্শ দিতে পারেন।
ঘামাচি প্রতিরোধক ব্যবস্থা:
- ত্বক বা চামড়ায় যাতে ঠিকমতো হাওয়া লাগে, তার জন্য ঢিলেঢালা পোশাক পড়ুন।
- ঠাণ্ডা এবং শুকনো পরিবেশে থাকুন।
- শারীরিক কসরৎ বা ব্যায়ামের পরেই স্নান করে নিন।
- ত্বকের জ্বালাভাব আটকাতে নরম জামা-কাপড় পড়ুন।
ঘরোয়া পদ্ধতিতে প্রতিকার নেওয়া যেতে পারে যেমন, ঠাণ্ডা অ্যালোভেরা জেল ব্যবহারের পাশাপাশি ঘামাচি হওয়া জায়গাটা ঠাণ্ডা জল দিয়ে ধুয়ে ফেললে চুলকুনির থেকে উপশম পাওয়া যায়।
রোমকূপে যদি সংক্রমণ হয়, সেক্ষেত্রে আলাদা করে চিকিৎসার প্রয়োজন হতে পারে।