ক্লসট্রিডিয়াম ডিফিসাইল কোলাইটিস কি?
ক্লসট্রিডিয়াম ডিফিসাইল (সি.ডিফিসাইল) হল এক ধরণের রোগজীবাণু যা মাটিতে, হাওয়ায়, জলে আর মলে পাওয়া যায়। সি.ডিফিসাইল সংক্রমণ মলাশয়ের (বৃহদান্ত্র) প্রদাহের কারণ হতে পারে, অন্যান্য সমস্যা ছাড়া। এই সংক্রমণ কোন সাধারণ সংক্রমণ নয় এবং এক্ষেত্রে হাসপাতালে ভর্তি করার প্রয়োজন পড়ে।
এই রোগের মূল লক্ষণ ও উপসর্গগুলি কি কি?
- যখন সি. ডিফিসাইল মলাশয়কে আক্রান্ত করে, তখন তা মলাশয়ের অভ্যন্তরস্থ ত্বকে প্রদাহের কারণ হতে পারে, তার থেকে জ্বরও হতে পারে।
- উপসর্গের মধ্যে পেটে ব্যথা বা পেটে মোচড়ও হতে পারে।
- অন্যান্য উপসর্গ হল পেট খারাপ, দিনে অনেকবার জলের মতো মলত্যাগ করা। মলের সাথে রক্ত নির্গমণও খুবই স্বাভাবিক।
- পেট খারাপ হলে শরীরে জলশুন্যতা দেখা দিতে পারে এবং শরীরে খনিজের অসামঞ্জস্যতা তৈরি হয়।
- পরিস্থিতি গুরুতর হলে, যদি মলাশয় ফেটে যায় আর সংক্রমণ শরীরের অন্য অঙ্গে ছড়িয়ে পরে, তাহলে জীবন নিয়ে টানাটানি হতে পারে।
এই রোগের মূল কারণগুলি কি কি?
- সবচেয়ে সাধারণ কারণ সি.ডিফিসাইল কোলাইটিসের হল সাম্প্রতিক কালের অ্যান্টিবায়োটিক্সের দ্বারা চিকিৎসা পদ্ধতি। যখন কোন মানুষ অ্যান্টিবায়োটিক্স গ্রহণ করে, তখন মলাশয়ে রোগজীবাণুর ভারসাম্য নষ্ট হয়, ফলশ্রুতিতে সি.ডিফিসাইল রোগজীবাণুর পরিমাণ বেড়ে যায়।
- অ্যামোক্সিসিলিন, সেফালোস্পরিন্স, পেনিসিলিন আর এরিথ্রোমাইসিন হল কিছু অ্যান্টিবায়োটিক্স যা কোলাইটিসের কারণ হয়।
- এটি জরুরী নয় যে, যে ব্যক্তির শরীরে এই রোগজীবাণু আছে তাঁদেরই কোলাইটিস হবে। এই রোগজীবাণু আগে থেকেই অন্ত্রে থাকতে পারে আর তার কোন উপসর্গই হয়তো দেখা যায় না। ব্যক্তিবিশেষটি এই জীবাণুর শুধুই বাহক হতে পারে।
- এই সংক্রমণ হাসপাতাল থেকেও বাহিত হতে পারে।
এই রোগ কিভাবে নির্ণয় হয় এবং কিভাবে এর চিকিৎসা হয়?
এই রোগ নির্ণয় করতে হলে, ডাক্তারকে রোগীর ইতিহাস ও রোগী কি কি ওষুধ সাম্প্রতিক অতীতে খেয়েছেন তা জানতে চান।
- শ্বেতকণিকার মাত্রা বেড়ে যায় এই রকম সংক্রমণে আর তা রক্ত পরীক্ষায়ও ধরা পড়ে।
- একটি বিশেষ প্রকারের মল পরীক্ষাও হয় যা সি.ডিফিসাইলের মাধ্যমে উৎপন্ন বিষক্রিয়া নির্ণয় করে, এবং এই রোগ নির্ণয় করতে সাহায্য করে।
- কোলনোস্কপি আর সিগমোইডোস্কপি হল কিছু পরীক্ষা যা ডাক্তাররা করতে বলেন মলাশয়ের অবস্থা জানার জন্য।
প্রাথমিক চিকিৎসা হল সেই অ্যান্টিবায়োটিকটি বন্ধ করা যা সংক্রমণের কারণ। অ্যান্টিবায়োটিক্স যেমন মেট্রোনাইডাজোল সি.ডিফিসাইলের বিরুদ্ধে খুব কার্যকরী।
- জলশূন্যতা এবং ইলেক্ট্রোলাইট অসামঞ্জস্য দূর করতে, শরীরে তরল প্রয়োগ করা হয়।
- সম্পূর্ণ জীবাণু শরীর থেকে বহিষ্কার না হওয়ার ফলে যদি এই রকম আবার ঘটে, তাহলে আরও কড়া অ্যান্টিবায়োটিক্স বা অন্য কোন ওষুধ দেওয়া হয়। সেই অ্যান্টিবায়োটিকটিকে চিহ্নিত করা খুবই জরুরী যা সেই রোগজীবাণুটিকে সম্পূর্ণ ভাবে শরীর থেকে নিষ্কাশন করবে।