শিশুর ইনফ্লুয়েঞ্জা বলতে কি বোঝায়?
ইনফ্লুয়েঞ্জা বা ফ্লু হল এমন একটি শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণ যা সহজেই এক ব্যক্তি থেকে অন্য ব্যক্তির মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে। শিশুদের ক্ষেত্রে, সাধারণ ঠাণ্ডা লাগা বা পেটের রোগ সহ অন্যান্য অসুস্থতার সঙ্গে এই অবস্থাটি গুলিয়ে যেতে পারে। যেহেতু ইনফ্লুয়েঞ্জার উপসর্গগুলি খুব গুরুতর হতে পারে, কারণ এর সংক্রমণ খুবই দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে তাই তাৎক্ষণিক চিকিৎসার ব্যবস্থা করা এক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
এর প্রধান লক্ষণ এবং উপসর্গগুলি কি কি?
যদি আপনি এই উপসর্গগুলো লক্ষ্য করেন তবে আপনি নিশ্চিত হতে পারেন যে আপনার বাচ্চার ফ্লু হয়েছে:
- একটি প্রচন্ড পরিমাণের জ্বর - 102 ডিগ্রি ফ্যারেনহাইট থেকে বেশি এবং 104 ডিগ্রি ফ্যারেনহাইট পর্যন্ত ছুঁয়েছে
- জ্বরের সঙ্গে কাঁপুনি এবং প্রচন্ড ঠান্ডার অনুভূতি।
- অবসাদ এবং ক্লান্তি
- গলা ব্যথা এবং কাশি
- সারা শরীরে ব্যথা, পেট ব্যথা এবং বমিভাব
এর প্রধান কারণগুলি কি?
ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসের কারণেই ইনফ্লুয়েঞ্জার সৃষ্টি হয়। তিন ধরনের ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসের মধ্যে, টাইপ এ (A) এবং বি (B) বার্ষিক প্রকাশ ঘটায় এবং টাইপ সি (C) এলোমেলোভাবে, ভিন্ন অসুস্থতা ঘটিয়ে থাকে। যখন বাচ্চারা সংক্রমিত কারোর সংস্পর্শে আসে অথবা সংক্রমিত শ্লেষ্মা বা লালার মাধ্যমে ভাইরাসের কাছে উন্মুক্ত থাকে তখন ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ে। সংক্রামিত লোকেদের খুব কাছাকাছি থাকার ফলে যখন তারা হাঁচি দেয় বা তাদের নাক ঝাড়ে তখনও ভাইরাসটি ছড়িয়ে পরতে পারে।
কিভাবে এটির নির্ণয় এবং চিকিৎসা করা হয়?
ইনফ্লুয়েঞ্জার নির্ণয় করা অত্যন্ত সহজ, বিশেষ করে শিশুদের ক্ষেত্রে, এবং অধিকাংশ চিকিৎসক শিশুর একটি সহজ পরীক্ষার মাধ্যমে সঠিকভাবে এই অবস্থার নির্ণয় করতে পারেন। যেহেতু ফ্লুকে অন্যান্য অবস্থার সঙ্গে ভুল করার সম্ভাবনা থাকতে পারে, তাই তুলো দিয়ে নাক থেকে মুছে নেওয়া শ্লেষ্মা পরীক্ষা করার জন্য ল্যাব বা পরীক্ষাগারে পাঠানো হতে পারে।
ফ্লুয়ের জন্য বাচ্চাদের চিকিৎসা করতে, চিকিৎসকরা নিম্নলিখিত চিকিৎসাগুলির নির্দেশ দিয়ে থাকেন:
- জ্বর এবং ব্যথার জন্য ওষুধ
- পেট ঠিক করার ওষুধ
- একই ধরণের অবস্থা যেমন হাঁপানির জন্য ওষুধ
- প্রচুর পরিমাণে বিশ্রাম
- প্রচুর পরিমাণে তরল পান করা
- কনজেশন বা বদ্ধভাব, নাক দিয়ে জল পড়া বা কাশির ওষুধ
- রোগটি আবার হওয়াকে প্রতিরোধ করতে ফ্লুয়ের টীকা
- ঘরোয়া যত্ন (স্যালাইন নাকের ড্রপ, হিউমিডিফায়ার বা ঘরে আর্দ্রতা বজায় রাখার যন্ত্র)
- প্রতিরোধক ব্যবস্থা যেমন যতবার শিশুটি হাত দিয়ে নাক এবং মুখ ঢেকে কাশি দিয়েছে বা হাঁচি দিয়েছে ততবার হাত ধোওয়ানো; নাক এবং মুখ একটি মোটা কাপড় বা ন্যাপকিন দিয়ে ঢেকে দেওয়া; হাত না ধুয়ে খাবার না ছুঁতে দেওয়া
ফ্লুয়ের একবার হবার পর আবার হওয়া খুবই সাধারণ, এবং চিকিৎসকেরা জ্বর ছাড়ার পর শিশুটিকে স্কুলে অথবা খেলতে পাঠানোর আগে অন্তত 24 ঘন্টার জন্য শিশুটির দিকে লক্ষ্য রাখার পরামর্শ দিয়ে থাকেন।