ফাইব্রোসিস্টিক স্তন বা ফাইব্রোসিস্টিক ব্রেস্ট ডিজিজ কাকে বলে?
বেনাইন ফাইব্রোসিস্টিক স্তন রোগটিতে স্তনের পেশীকলাতে বা টিসুতে বিপজ্জনক নয় (নন-ক্যান্সারাস) এমন পিন্ডের উপস্থিতি বা দড়ির মতো দাগ দেখা যায়। এই নন-ক্যান্সারাস পিন্ডগুলি বেশিরভাগ স্তনের বাইরের দিকে এবং উপরের ভাগে অনুভব করা যায়। এটা খুবই সাধারণ একটি সমস্যা, যেটা 20 থেকে 50 বছর বয়সের মহিলাদের মধ্যে দেখা যায়।
এর প্রধান লক্ষণ ও উপসর্গগুলি কি কি?
ফাইব্রোসিস্টিক স্তনের উপসর্গগুলি মাসিক চলাকালীন বা তার ঠিক আগে হরমোনের পরিবর্তনের কারণে আরো বেশী করে দেখা যায়। এই উপসর্গগুলির মধ্যে আছে:
- স্তনে ব্যথা (আরো পড়ুন: স্তনে ব্যথার কারণ)
- স্তনে নরম ভাব যা স্পর্শ করলে অনুভব করা যায়
- স্তন ভারী বা স্ফীত অনুভব করা
- স্তনে পিন্ডের উপস্থিতি
- স্তনবৃন্ত থেকে তরল নির্গত হওয়া
- মাসিকের পূর্বে স্তনের ব্যথা বৃদ্ধি পাওয়া
স্তনে অনুভূত হওয়া পিন্ডটি নরম ও রবারের মতো বোধ হয়। স্পর্শ করলে, মনে হয় সেগুলো যেন একটু সরে সরে যাচ্ছে। মাসিকের পূর্বে এই পিন্ডগুলি আকারে একটু বড় হয়ে যেতে পারে।
এটা জানা দরকার যে এই বেনাইন ফাইব্রোসিস্টিক স্তনের উপস্থিতি কোনভাবেই একজন মহিলার স্তনের ক্যান্সারের ঝুঁকিকে বাড়ায় না। এই ফাইব্রোসিস্টিক স্তনের পরিবর্তন হওয়া ক্ষতিহীন এবং এর জন্য যে অস্বস্তি অনুভূত হয় তার চিকিৎসা করা যেতে পারে।
এর প্রধান কারণগুলি কি কি?
ডাক্তার ফাইব্রোসিস্টিক স্তনের আসল কারণগুলি চিহ্নিত করতে ব্যর্থ। যাইহোক, বেশীরভাগ ডাক্তার মনে করেন জন্মদায়ক হরমোন যেমন ইস্ট্রজেন এই রোগের কারণ হতে পারে। এই অবস্থটি মেনোপজের পরে আর থাকে না, তাই বেশীরভাগ ডাক্তার বিশ্বাস করেন যে জন্মদায়ক বছরগুলিতে হরমোনের পরিবর্তন এর একটা কারণ হতে পারে।
কিভাবে এর রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসা করা হয়?
ফাইব্রোসিস্টিক স্তনের রোগ নির্ণয়ের প্রথম স্তর হল শারীরিক পরীক্ষা, যাতে ডাক্তার মাংস পিন্ডটিকে সনাক্ত করতে পারেন এবং স্তনের পেশীকলার বা টিসুর গঠনবিন্যাসে কোন অস্বাভাবিকতা আছে কিনা তা পরীক্ষা করতে পারেন। শারীরিক পরীক্ষার সাথে সাথে, ডাক্তার কনফার্মেটরি ইমেজিং টেস্টও দিতে পারেন যেমন মেমোগ্রাম এবং স্তনের আলট্রাসাউন্ড।
তাছাড়াও টিসুর বায়োপসি করা হতে পারে, যাতে পিন্ডটি ক্ষতিকারক কিনা সেটা জানা যায়।
যদি রোগীর এই উপসর্গগুলি দেখা যায় তবেই চিকিৎসার প্রয়োজন হয়। স্তনের নরম ভাব কমাতে ব্যথা উপশমকারী ওষুধ দেওয়া হয়। যাইহোক, ডাক্তার অবস্থা সামাল দেবার জন্য রোগীকে নিজের যত্ন নেবার কিছু উপায় অবলম্বন করতে বলতে পারেন। যার মধ্যে আছে:
- উপযুক্ত আকারের ব্রা পড়া যেটি স্তনকে ভালভাবে সাপোর্ট দেয়
- ব্যথা কমার জন্য গরম সেঁক দেওয়া
- প্রদাহজনক নয় এমন ধরণের খাবার খাওয়া
যদি কোনো রোগীর উপসর্গগুলি উদ্বেগজনক হয়, তবে উপসর্গগুলিকে, বিশেষত ব্যথা ও নরম ভাবকে রোধ করার জন্য ডাক্তার জন্ম নিয়ন্ত্রণকারী ওষুধ বা অন্যান্য ওষুধ দিতে পারেন।