যেভাবে উপরে বর্ণিত হয়েছে, একটি স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাসে সবকটি অপরিহার্য উপাদান সঠিক পরিমাণে থাকে। এর থেকেই বোঝা যায় যে খাদ্যাভ্যাসে আস্ত শস্যদানা, সবজি, ফল, বাদাম, সালাদ ইত্যাদির পর্যাপ্ত পরিমাণে উপস্থিত থাকতে হবে। এগুলির আপনার খাদ্যে একটি মূল উপাদান গঠন করা আবশ্যক, যাতে আপনার দৈনন্দিন শক্তির প্রয়োজনীয়তার অধিকাংশটুকু আপনি পান। WHO সুপারিশ করে দিনে অন্তত 400 গ্রাম তাজা ফল এবং সবজি একাধিক পরিবেশনায় ভাগ করে খাওয়া উচিৎ। এই খাবারে কার্বোহাইড্রেট, ভিটামিন, খনিজ বস্তু এবং চর্বি সঠিক পরিমাণে থাকে।
আপনার উচিৎ ব্রকোলি, শাক, আপেল, কলা, পেপে, কমলালেবু, বাঁধাকপি, টমেটো ইত্যাদির মত বিভিন্ন ধরণের ফল এবং সবজি আপনার খাদ্যাভ্যাসে অন্তর্ভুক্ত করা যাতে আপনি সর্ব্বোচ্চ ফলাফল অর্জন করতে পারেন। শক্তির জোগান দেওয়া বাদেও এই ফল এবং সবজি অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে সমৃদ্ধ যা আপনাকে সাহায্য করবে রোগের সাথে মোকাবিলা করতে।
সবজি খাওয়া সুপারিশ করা হলেও, আলু, মিষ্টি আলু এবং অন্যান্য মিষ্টি সবজি অতিরিক্ত খাওয়া উচিৎ নয় এতে শর্করাভাব বেশি থাকার জন্য। যদিও কার্বোহাইড্রেটের আপনার খাদ্যাভ্যাসে 45% থেকে 65% গঠন করা উচিৎ, আপনার শারীরিক ওজন এবং জীবনধারা অনুযায়ী। বেশিরভাগ ফল খেতে মিষ্টি হয় এবং এতে থাকে প্রাকৃতিক চিনি, ফ্রুকটোস। ফ্রুকটোস নিরাপদ বলে মনে করা হয় এবং স্থুলতার ঝুঁকি এতে কম আছে বলে মনে করা হয়। পরিমার্জিত বা প্রক্রিয়া মুক্ত চিনি, যা বাহ্যিকভাবে আপনার খাদ্যে যোগ করা হয়, তা নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।
WHO সুপারিশ করে এইসব চিনির সেবনের মাত্রা গোটা জীবনের জন্য কমিয়ে ফেলা, এবং তা বাচ্ছাদের ক্ষেত্রেও। সুপারিশ করা হয় যে দৈনিক 50গ্রামেরও কম ডোজে সেবন করার, যাতে এটি আপনার রোজকার প্রয়োজনীয়তার 5 থেকে 10% পূরণ করতে পারে। যদিও চর্বিকে বিভিন্ন লোক অস্বাস্থ্যকর মনে করে, WHO সুপারিশ করে যে আপনার খাবারের ক্যালোরির 30% হওয়া উচিৎ চর্বি থেকে, যার মধ্যে 10% হওয়া উচিৎ সুসিক্ত উৎস থেকে। অ্যাভোকাডো, বাদাম, মাছ এবং অন্যান্য মাংসযাত খাবার থেকেই প্রাকৃতিক চর্বির উৎস তৈরি করা ভাল।
তেল নির্বাচন করার সময়, সূর্যমুখী তেল বা নারকেল তেলই সেরা বলে মনে করা হয়। অ্যাভোকাডো, মাছ, ডিম এবং কিছু ধরণের মাংস একটি দ্বৈত উদ্দেশ্য সাধন করে এবং আপনাকে চর্বি এবং প্রোটিন উভয়েরই জোগান দেয়। WHO সুপারিশ অনুযায়ী আপনার খাবারে প্রোটিনের পরিমাণ হওয়া উচিৎ 35%, যা সংক্ষিপ্তভাবে আলোচনা করা হবে।
এবার, যেমন আমরা জানি যে নুনের উচ্চ পরিমাণ উচ্চ রক্তচাপের সাথে যুক্ত, যা হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়িয়ে তোলে। সেহেতু নুনের সেবন সর্বনিম্ন হওয়া উচিৎ। WHO সেইজন্য সুপারিশ করে যে সোডিয়াম/নুনের সেবন প্রতিদিন 5গ্রামেরও কম হওয়া উচিৎ।
সুষম খাদ্যাভ্যাসের গুরুত্ব এবং এর বিভিন্ন উপাদানগুলির ব্যপারে জানতে পড়তে থাকুন।