হুপিং কাশি কি?
হুপিং কাশি, যা পার্টুসিস নামেও পরিচিত, একটি সংক্রামক ব্যাকটেরিয়াঘটিত সংক্রমণ, যা বর্ডিটেলা পার্টুসিসের দ্বারা সৃষ্ট হয় এবং এটি সকল বয়সের মানুষকে আক্রান্ত করতে পারে, কিন্তু যেসব শিশুদের টীকাকরণ করা হয়নি অর্থাৎ সঠিকভাবে রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতাযুক্ত অবস্থায় না থাকা গোষ্ঠীর মানুষেদের মধ্যে এটি বেশি দেখা যায়।
এর প্রধান লক্ষণ এবং উপসর্গগুলি কি কি?
হুপিং কাশির উপসর্গগুলি ছয় থেকে কুড়ি দিনের জন্য দেখা দেয়, যা সংক্রমণ হওয়ার ইনকিউবেশন পিরিয়ড বা রোগজীবাণুর উন্মেষপর্ব হিসাবে পরিচিত এবং এর উপসর্গের তিনটি পর্যায় রয়েছে:
- শ্লেষ্মাঘটিত পর্যায়টি প্রায় এক সপ্তাহ ধরে চলতে থাকে এবং সর্দি, চোখ দিয়ে জল পড়া, কনজাঙ্কটিভাইটিস, গলা ব্যথা, হাঁচি হওয়া, এবং শরীরের সামান্য তাপমাত্রা বাড়ার মতো উপসর্গগুলি দেখা দেয়।
- আক্রমণাত্মক পর্যায়টি এক সপ্তাহ থাকে এবং তীব্র কাশির তড়কা, কাশির সাথে সর্দি নির্গমন, বমি করা, এবং গুরুতর ক্ষেত্রে ত্বকে নীলচেভাবের মত উপসর্গগুলির সাথে দেখা দেয়।
- স্বাস্থ্যপুনরুদ্ধারকারী পর্যায়টি 3 মাস পর্যন্ত থাকে এবং রোগের প্রবলতা ও বারবার ঘটার উপসর্গগুলি ধীরে ধীরে হ্রাস পায়।
এর প্রধান কারণগুলি কি কি?
হুপিং কাশি একটি ব্যাকটেরিয়াঘটিত সংক্রমণ যা বর্ডিটেলা পার্টুসিস নামক জীবাণুর দ্বারা সৃষ্ট। এই ব্যাকটেরিয়া ফুসফুসের মধ্যে প্রবেশ করে এবং বায়ু চলাচলের পথে ফোলাভাব ও অস্বস্তির সৃষ্টি করে, বিশেষত প্রধান শ্বাসনালী ও তার দুটি শাখায়, যার ফলে বিভিন্ন শ্বাস-প্রশ্বাসজনিত সমস্যা সৃষ্টি হয়। সংক্রমণটি অত্যন্ত ছোঁয়াচে এবং যখন সংক্রামিত ব্যক্তি কাশে অথবা হাঁচে এবং একটি সুস্থ ব্যক্তির সাথে সরাসরি সংস্পর্শে আসে তখন নাক, মুখ অথবা চোখের মাধ্যমে সংক্রমণটি এক ব্যক্তি থেকে অন্য ব্যক্তির মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে।
এটি কিভাবে নির্ণয় করা হয় এবং এর চিকিৎসা কি?
হুপিং কাশি নির্ণয়ের পদ্ধতিগুলির মধ্যে রয়েছে:
- রোগীর ইতিহাস জেনে নেওয়া।
- শারীরিক পরীক্ষা করা।
- নাকের শ্লেষ্মার নমুনা অথবা পলিমেরেজ চেইন রিঅ্যাকশনের (পিসিআর) পরীক্ষার জন্য নাকের ঊষ্মার নমুনা সংগ্রহ।
- কাল্চার টেস্ট।
- পার্টুসিস সেরোলজিক্যাল টেস্ট।
হুপিং কাশির চিকিৎসার মধ্যে রয়েছে চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে শরীরে যত শ্রীঘ্র সম্ভব অ্যান্টিবায়োটিক প্রয়োগ করা।
প্রতিষেধক ব্যবস্থাপনাগুলির মধ্যে রয়েছে জাতীয়্ টিকাকরণ কর্মসূচী অনুযায়ী শিশু এবং প্রাপ্তবয়স্কদের পার্টুসিসের টিকা প্রদান। বাচ্চাদের ডিপথেরিয়ার সম্পূর্ণ ডোজ, টিটেনাস, এবং পার্টুসিসের টিকা দেওয়া হয়। যেসমস্ত প্রাপ্তবয়স্করা তাদের প্রাথমিক টিকার কর্মসূচী সম্পন্ন করেছেন, তাদের বুস্টার বা সহায়ক ডোজ দেওয়া হয়।