টুলারেমিয়া কি?
টুলারেমিয়া একটা ব্যাকটেরিয়াঘটিত সংক্রমণ, যেটা কোনো সংক্রামিত পশুর সংস্পর্শে এলে মানুষের শরীরে প্রবেশ করে। এটা একটা বিরল ব্যাধি, কিন্তু এর বেশীরভাগ ঘটনাই উত্তর আমেরিকা এবং ইউরোপের কিছু জায়গা এবং এশিয়ায় হয়েছে বলে শোনা যায়।
এর প্রধান লক্ষণ ও উপসর্গগুলো কি কি?
টুলারেমিয়ার উপসর্গগুলো নীচে দেওয়া হল:
- জ্বর।
- ঘাম হওয়া।
- চোখে অস্বস্তি।
- মাথাব্যথা।
- পেশীতে ব্যথা।
- গাঁটে ব্যথা।
- শ্বাসকষ্ট।
- ওজন কমে যাওয়া।
- ত্বকে লাল দাগ দেখা যায়, যেটা পরে ক্ষততে পরিণত হয়।
- ত্বকে ঘা।
- মুখে ঘা।
- গলার লিম্ফ গ্রন্থিতে ফোলা।
ব্যাকটিরিয়ার সংস্পর্শে আসার 3 থেকে 5 দিন পরে উপসর্গগুলো দেখা দিতে শুরু করে।
এর প্রধান কারণগুলো কি কি?
টুলারেমিয়ার প্রাথমিক কারণ হল ফ্রান্সিসেলা টুলারেন্সিস নামক একটা ব্যাকটিরিয়া। এই রোগজীবাণুটি অনেক বন্য ইঁদুরের মধ্যে থাকতে পারে।
মানুষ সংক্রামিত পশু বা এমনকি এঁটেল, মশা এবং হর্সফ্লাইসের থেকে একটি কামড়ের মাধ্যমে সংক্রমণ পেতে পারে।
এই ব্যাকটেরিয়া ধারণকারী ময়লায় শ্বাস নিলেও সংক্রমণ হতে পারে।
কোনো সংক্রামিত পশুর সাথে সরাসরি সংস্পর্শ হলে বা এদের মৃতদেহ নড়াচড়া করলেও এই ব্যাধি ছড়িয়ে পড়তে পারে।
অর্ধেক রান্না করা এবং সংক্রমিত মাংস খেলেও সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়তে পারে।
এটি কিভাবে নির্ণয় ও চিকিৎসা করা হয়?
টুলারেমিয়া নির্ণয় করা কঠিন হতে পারে কারণ এই ব্যাধির উপসর্গগুলো অন্য সাধারণ ব্যাধির উপসর্গগুলোর সাথে বিভ্রান্ত করতে পারে। যাইহোক, টুলারেমিয়া বিশেষভাবে রক্তপরীক্ষা ও বুকের এক্স-রের দ্বারা নির্ণয় করা হয়। রোগীটি কোনো বন্য ইঁদুরের সংস্পর্শে থেকেছেন কিনা তার ইতিহাস এবং শারীরিক পরীক্ষাও এই ব্যাধির নির্ণয়ে সাহায্য করে।
রোগ নির্ণয় নিশ্চিত হওয়ার পরে, চিকিৎসকেরা চিকিৎসার গঠন হিসাবে অ্যান্টিবায়োটিকের ব্যবহারের পরামর্শ দেন। টুলারেমিয়ার চিকিৎসা করার জন্য সবচেয়ে সাধারণভাবে ব্যবহার করা অ্যান্টিবায়োটিকগুলো হল:
- স্ট্রেপ্টোমাইসিন।
- জেন্টামাইসিন।
- সিপ্রোফ্লক্সাসিন।
উপসর্গের তীব্রতার উপর ভিত্তি করে চিকিৎসা 3 সপ্তাহ ধরে চলতে পারে।
পশু এবং মাটিকে স্পর্শ করার সময় দস্তানা পরে এবং শুধুমাত্র ভালো করে রান্না করা মাংস খেয়ে টুলারেমিয়ার সংক্রমণ আটকানো যেতে পারে।
টুলারেমিয়ার চিকিৎসা সম্ভব কিন্তু যদি এটা সময়মতো চিকিৎসা না করানো হয় তাহলে এটা নানান জটিলতা আনতে পারে যেমন, নিউমোনিয়া, এবং হাড়ে সংক্রমণ।