ঘুমের ক্ষতি (স্লিপ ডিপ্রাইভেশন) কি?
ঘুমের ক্ষতি (স্লিপ ডিপ্রাইভেশন) বলতে পর্যাপ্ত ঘুমের অভাবকে নির্দেশ করে, যা বিভিন্ন কারণবশত ঘটতে পারে। এটি কোন রোগ নয় তবে বিভিন্ন রোগ বা জীবনধারার পরিস্থিতির উপসর্গগুলি ঘুমের অভ্যাসের ব্যাঘাত ঘটায়। ঘুমের অভাবের ফলে বিভিন্ন শারীরিক সমস্যা দেখা দিতে পারে তাই দ্রুত বিষয়টি সংশোধন করা উচিত।
এর সাথে জড়িত প্রধান লক্ষণ ও উপসর্গগুলি কি কি?
ঘুমের ক্ষতি (স্লিপ ডিপ্রাইভেশন) সাথে জড়িত যে বিশেষ লক্ষণ ও উপসর্গগুলি দেখতে পাওয়া যায় সেগুলি হল:
- ঘুমাতে অসুবিধা হওয়া।
- অস্বস্তিকর বা বিরক্তিকর আচরণ।
- মনোযোগের অভাব হওয়া।
- তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে উঠে পরা।
- ঘন ঘন দিনের বেলায় ঘুম পাওয়া।
- ঘুম থেকে ওঠার পরেও সতেজতার অভাব অনুভব হওয়া।
- সিদ্ধান্ত গ্রহণে ও চিন্তনে বাধা সৃষ্টি।
- নাকডাকা।
পাঁচটি সাধারণ স্লিপ ডিসঅর্ডার যা দেখতে পাওয়া যায় তার মধ্যে রয়েছে:
- ঘুমানোয় অসুবিধা বা ইনসোমনিয়া।
- শ্বাস প্রশ্বাস বাধাপ্রাপ্ত হওয়া বা স্লিপ আপ্নিয়া।
- নারকলেপ্সি বা দিনের বেলায় অতিরিক্ত ঘুম পাওয়া।
- পায়ে বিশ্রামহীনতা রোগের জন্য পায়ের নড়াচড়ায় অনিয়ন্ত্রন।
- স্লিপ ডিসঅর্ডারে ঘন ঘন চোখের নড়াচড়া।
এর প্রধান কারণগুলি কি কি?
ঘুমের ছন্দের ব্যঘাতের সাথে বিভিন্ন কারণ জড়িত। প্রধান কারণগুলি হল:
- কর্মস্থলে অনিয়মিত বা রাত্রে কাজ করা।
- অতিরিক্ত সময় ধরে কাজ করা।
- অ্যাস্থমা বা হাঁপানি রোগ।
- অবসাদ বা উদ্বিগ্নতা।
- মদ্যপানের অভ্যাস।
- মানসিক চাপ।
- বিশেষ কিছু ওষুধের ব্যবহার।
- বংশগত ইতিহাস।
- বার্ধক্যজনিত অবস্থা।
কিভাবে এটি নির্ণয় ও চিকিৎসা করা হয়?
চিকিৎসক আপনার পূর্বে ঘটা ঘুমের ভঙ্গিমার বিষয় এবং আপনার পরিবারের সদস্যদের কাছ থেকে রাতে আপনি কোন পর্যায়ে ঘুমাচ্ছন্ন থাকেন সে বিষয়েও জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারেন। আপনার ঘুমের ভঙ্গিমা এবং সংগৃহীত তথ্য অনুযায়ী পরিস্থিতি নির্ণয় করার জন্য একটি ঘুমের সময় তালিকার ব্যবহার করা হতে পারে।
ঘুমের ওষুধের দ্বারা ঘুমের ক্ষতি পরিচালিত হতে পারে, কিন্তু যদি এগুলি কম কার্যকারী হয় তাহলে ওষুধ বিহীন পদ্ধতির প্রচেষ্টা করা হতে পারে যেগুলি নীচে দেওয়া হলো:
স্ব-যত্ন টিপস
- নিজেকে আরামদায়ক একটি ঘুমের ভঙ্গিমায় সন্নিবেশিত করা।
- সমস্ত বৈদ্যুতিক যন্ত্রাংশের সুইচ বন্ধ করে দেওয়া ও বিছানা থেকে সেগুলি দূরে রাখা উচিত।
- ঘুমাতে সাহায্যকারী কোন আরামদায়ক পদ্ধতি গ্রহন করা।
- সঠিক সময় ঘুমাতে যাওয়া ও ঘুম থেকে ওঠার জন্য একটি বিশেষ সময়সূচী পালন করা।
- ঘুমাতে সাহায্য করবে এমন হালকা কিছু খাবার খাওয়া ও দুধ পান করা।
- রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে ডিনারে কখনও বেশি খাবার বা পানীয় গ্রহন করবেন না।
- বিছানায় ঘুমাতে গিয়ে যাতে অসুবিধা না হয় সেজন্য মোবাইল ফোন ও ল্যাপটপের ব্যবহার এড়িয়ে চলা।
- ধূমপান ও মদ্যপানের মতো অন্যান্য পানীয় যেমন চা ও কফি এগুলো সন্ধ্যা থেকে এড়িয়ে চলা।
- ঘুমের ওষুধের প্রতি নির্ভরশীলতা এড়িয়ে চলা।
- শোয়ারঘরে, বিশেষত বিছানায়, ঘুমানো ছাড়া অন্য যাবতীয় কাজ এড়িয়ে চলা।