গর্ভাবস্থায় মুড সুইং কি?
গর্ভবতী অবস্থায় আপনার জীবনে, সেই সঙ্গে শরীরেও অনেক পরিবর্তন আসে। এই জৈবিক পরিবর্তনগুলি হলো ভোরবেলায় শরীর খারাপ, কোষ্ঠকাঠিন্য, খাওয়ার তীব্র আকাঙ্খা, চুলকানি, পিঠব্যথা, যোনিতে ছত্রাক ঘটিত রোগ, মাথাব্যথা, পায়ে খিঁচ ধরা, ফুলে যাওয়া, ইত্যাদি। এর মধ্যে কিছু পরিবর্তনকে সামলানো খুব মুশকিল এবং আপনার অস্বস্তির কারণ হতে পারে, যার থেকে মেজাজে পরিবর্তন আসে। প্রত্যেক গর্ভবতী মহিলাই সাধারণত মুড সুইং বা মেজাজ পরিবর্তনের সম্মুখীন হন। কখনও-সখনও এই মেজাজ পরিবর্তন উদ্বিগ্নতা আবার কখনও বিষণ্নতার কারণ হতে পারে।
এর প্রধান লক্ষণ ও উপসর্গগুলি কি কি?
গর্ভবতী অবস্থায় আপনি মেজাজ পরিবর্তনের সম্মুখীন হতে পারেন, যেমন:
- গর্ভবতী হওয়ার জন্য হঠাৎ উত্তেজনা বোধ।
- মানসিক চাপ।
- আবেগবিহ্বল অনুভূতি।
- শিশুর প্রসব এবং জননী হতে চলা নিয়ে চিন্তা।
- উদাসীনভাব অথবা কোনও স্পষ্ট কারণ ছাড়াই।
কোনও কোনও সময় এই উপসর্গগুলি গুরুতর আকার নেয় এবং উপযুক্তভাবে সামলানোর দরকার পড়ে।
এর প্রধান কারণগুলি কি কি?
নিম্নলিখিত কারণে গর্ভাবস্থায় মেজাজ পরিবর্তন হতে পারে:
- হরমোনের পরিবর্তন।
- বিপাকীয় পরিবর্তন।
- ক্লান্তিভাব।
- শারীরিক চাপ।
মানসিক অবসাদ এবং উদ্বিগ্নতাও গর্ভবতী মহিলাদের মধ্যে হঠাৎ মেজাজ পরিবর্তনের জন্য দায়ী হতে পারে।
এটি কিভাবে নির্ণয় ও চিকিৎসা করা হয়?
গর্ভাবস্থায় মুড সুইং স্বাভাবিক ব্যাপার আর এজন্য কোনও রোগ নির্ণয়ের দরকার পড়ে না। কিন্তু, এই মেজাজ পরিবর্তন যদি আপনার দৈনন্দিন জীবনযাত্রায় প্রভাব ফেলতে শুরু করে অথবা নিম্নলিখিত উপসর্গের মধ্যে কোনও একটি লক্ষণ অনুভব করেন, তাহলে চিকিৎসক অথবা স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া উচিত:
- ঘুমে ব্যঘাত।
- ক্ষণিকের জন্য স্মরণশক্তি লোপ।
- উদ্বিগ্নতা।
- অত্যন্ত বিরক্তি বোধ।
- খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন।
- দীর্ঘক্ষণ কোনও কাজে মনোনিবেশে অসুবিধা।
এই লক্ষণগুলি আবার গর্ভধারণ সম্পর্কিত মানসিক অবসাদের উপস্থিতিরও ইঙ্গিত দিতে পারে। সাধারণ চিকিৎসক আপনাকে কিছু বিশেষ ওষুধ দেবেন চিকিৎসার জন্য অথবা তিনি কোনও মনোরোগ বিশেষজ্ঞের কাছে আপনাকে পাঠাতে পারেন কাউন্সেলিংয়ের জন্য। অন্যান্য পরিচালন পদ্ধতিগুলি হলো:
- গর্ভাবস্থার যোগব্যায়াম অথবা ধ্যান।
- নিয়মিত শারীরিক ক্রিয়াকলাপ।
- ইতিবাচক চিন্তা করুন এবং ইতিবাচক পরিবেশে থাকুন।
- হাঁটতে যান।
- বন্ধু-বান্ধন ও পরিবারের সঙ্গে সিনেমা দেখুন।
- বিরতি নিন এবং আরাম করুন।
- নিজের সঙ্গীর সঙ্গে নৈশভোজ সারুন।
- মালিশ।