ম্যাস্টোসাইটোসিস কাকে বলে?
ত্বকে বা অভ্যন্তরীণ অঙ্গে, যেমন প্লীহা, যকৃৎ বা অস্থিমজ্জায়, ম্যাস্ট কোষের অতিরিক্ত সঞ্চয়কে ম্যাস্টোসাইটোসিস বলে। কয়েকটি অস্থির ভিতরের ফাঁপা কেন্দ্রস্থলে ম্যাস্ট কোষের উৎপাদন হয়, এবং একজন সুস্থ ব্যক্তির দেহে সংক্রমণের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার জন্য এই কোষগুলি দায়ী। কিন্তু, ম্যাস্ট সেল ডিসঅর্ডার রয়েছে এমন মানুষের ক্ষেত্রে ম্যাস্ট কোষগুলি অনুপযুক্ত সময়ে সক্রিয় হয়ে ওঠে অথবা অতিরিক্ত পরিমাণে তৈরি হয় এবং শরীরে সঞ্চিত হতে থাকে, এর ফলে ম্যাস্টোসাইটোসিস হয়।
ম্যাস্টোসাইটোসিস দুইপ্রকারের হয়:
- কিউটেনিয়াস ম্যাস্টোসাইটোসিস: এই প্রকারটিতে রোগীর ত্বক প্রভাবিত হয়। সাধারণত শিশুদের মধ্যে এটি দেখতে পাওয়া যায়।
- সিস্টেমিক ম্যাস্টোসাইটোসিস: একাধিক অঙ্গে এর প্রভাব পড়ে, এটি মূলত প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে দেখা যায়।
এর প্রধান লক্ষণ ও উপসর্গগুলি কি?
কোন অঙ্গটি প্রভাবিত হয়েছে তার উপর নির্ভর করে ম্যাস্টোসাইটোসিসের ভিন্ন উপসর্গ দেখতে পাওয়া যায়। ম্যাস্টোসাইটোসিসের প্রকারের ভিত্তিতে যে উপসর্গগুলি দেখতে পাওয়া যায় সেগুলো নিচে দেওয়া হল:
- কিউটেনিয়াস ম্যাস্টোসাইটোসিস: ত্বকে অস্বাভাবিক বৃদ্ধি ও কিছুক্ষেত্রে ফোস্কা দেখা যায় যা সারা দেহে ছড়িয়ে পড়তে পারে।
- সিস্টেমিক ম্যাস্টোসাইটোসিস: কিছু রোগীর ক্ষেত্রে 15-20 মিনিটের জন্য গুরুতর উপসর্গ দেখা দিতে পারে, যেমন:
এর প্রধান কারণগুলি কি কি?
ম্যাস্টোসাইটোসিসের কারণ এখনো অবধি জানা যায়নি, তবে জিনের মিউটেশন এবং জিনগত পরিবর্তন এই রোগটির উৎপত্তিতে অংশগ্রহণ করে বলে জানা গেছে।
কিভাবে এটি নির্ণয় করা হয় এবং এর চিকিৎসা কি?
ম্যাস্টোসাইটোসিসের নির্ণয়ের পদ্ধতিগুলো নিচে দেওয়া হল:
- কিউটেনিয়াস ম্যাস্টোসাইটোসিস: এটি নির্ণয়ের প্রথম ধাপ হল ত্বকের পরীক্ষা। ত্বকবিশেষজ্ঞ চামড়ার ক্ষতিগ্রস্থ অংশটি ঘষে দেখতে পারেন সেখানে লালভাব, প্রদাহ বা চুলকানি আছে কিনা। নিশ্চিত নির্ণয়ের জন্য স্কিন বায়োপ্সির প্রয়োজন হয়।
- সিস্টেমিক ম্যাস্টোসাইটোসিস: এটির নির্ণয়ের জন্য একাধিক পরীক্ষা করতে হয়, যেমন:
- রক্তপরীক্ষা : রক্তের টোটাল ব্লাড কাউন্ট এবং ট্রিপটেসের মাত্রা জানার জন্য।
- ডুয়াল এনার্জি এক্স-রে এবসরপ্সমেট্রি (ডি. ই.এক্স.এ) : অস্থির ঘনত্ব পরীক্ষা করতে।
- আলট্রাসাউন্ড স্ক্যান: যেকোন রকম শারীরিক পরিবর্তন যেমন প্লীহা বা যকৃতের আয়তনবৃদ্ধি পরীক্ষা করতে।
- অস্থিমজ্জার বায়োপ্সি: নির্ণয়করণ নিশ্চিত করতে।
যদিও এই সমস্যার কোন নিরাময় নেই, তবু যথাযথ যত্নের সাহায্যে উপসর্গগুলির উপশম সম্ভব। ম্যাস্টোসাইটোসিসের প্রকার ও প্রবলতার উপর এর চিকিৎসা নির্ভর করে।
- কিউটেনিয়াস ম্যাস্টোসাইটোসিস: টপিক্যাল স্টেরয়েড ক্রিম ও এন্টি-এলার্জিক কিউটেনিয়াস ম্যাস্টোসাইটোসিসের উপসর্গগুলির উপশমে সাহায্য করে।
- সিস্টেমিক ম্যাস্টোসাইটোসিস : আনুষঙ্গিক রক্তের সমস্যাগুলির চিকিৎসা সিস্টেমিক ম্যাস্টোসাইটোসিসের উপসর্গের উপশমে সাহায্য করে।