ম্যালিগন্যান্ট হাইপারথার্মিয়া কি?
শরীরের উচ্চ-তাপমাত্রা হাইপারথার্মিয়া নামে পরিচিত। ম্যালিগন্যান্ট হাইপারথার্মিয়া (এমএইচ/MH) হল জন্মসূত্রে অর্জিত একটি পারিবারিক অসুখ যাতে কোন ব্যক্তি সার্জারির সময় ব্যবহৃত বিশেষ ওষুধের (বিশেষকরে অ্যানেস্থেটিক বা অনুভূতিনাশক গ্যাস) দ্রুত প্রতিক্রিয়া অনুভব করেন। ম্যালিগন্যান্ট হাইপারথার্মিয়া গুরুতর রকমের পেশীর সঙ্কোচন এবং শরীরের তাপমাত্রা দ্রুতগতিতে বৃদ্ধি পাওয়ার রূপে প্রকট হয়। এই ধরনের অবস্থায় দেখা দেওয়া হাইপারথার্মিয়া সংক্রমণ এবং হার্ট স্ট্রোকের মতো অন্যান্য চিকিৎসাকাজনিত জরুরি অবস্থার থেকে একেবারেই আলাদা হয়।
এর প্রধান লক্ষণ ও উপসর্গগুলি কি কি?
এমএইচ-এর সাধারণ লক্ষণ ও উপসর্গগুলির মধ্যে রয়েছে:
- শরীরের তাপমাত্রা 105 ডিগ্রি ফারেনহাইট (40.6 ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড) পর্যন্ত ওঠা বা তার বেশি (আরও পড়ুন: জ্বরের চিকিৎসা)।
- পেশীর আড়ষ্ঠতা, অনমনীয়তা এবং ব্যথা (অজানা কারণে)।
- হৃদগতিতে দ্রুততা।
- অ্যাসিডোসিস।
- রক্তপাত।
- মূত্রের স্বাভাবিক রঙ পরিবর্তন, যা গাঢ় বাদামি রঙের হতে পারে।
এর প্রধান কারণগুলি কি কি?
এমএইচের কারণ হতে পারে:
- জন্মসূত্রে অর্জিত অবস্থা (এমনকি পিতা বা মাতার মধ্যে কোনও একজন এই রোগের বাহক হলেও, সন্তানের মধ্যে এমএইচ বিকশিত হতে পারে)।
- জন্মগতভাবে অর্জিত অন্যান্য পেশী সংক্রান্ত অসুখ হল:
- মাল্টিমিনিকোর মায়োপ্যাথি।
- সেন্ট্রাল কোর ডিজিজ।
এই উভয় রোগেই কঙ্কালের মাংসপেশী আক্রান্ত হয়, যার ফলে পেশীর দুর্বলতা দেখা দেয়।
এটি কিভাবে নির্ণয় এবং চিকিৎসা করা হয়?
সাধারণত, সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে অস্ত্রোপচারের সময় অ্যানেস্থেসিয়া দেওয়ার পর এই অবস্থা দেখা দেয়। ম্যালিগন্যান্ট হাইপারথার্মিয়ায় আক্রান্ত ব্যক্তি দ্রুত এবং প্রায়শই অনিয়মিত হৃদস্পন্দন উপলব্ধি করেন এবং কখনও সখনও অ্যানেস্থেসিয়ার মধ্যেই অজ্ঞাত কারণে মৃত্যু ঘটে। এজন্যই, চিকিৎসক অ্যানেস্থেসিয়া দেওয়ার আগে এমএইচ সংক্রান্ত পারিবারিক ইতিহাসের ব্যাপারে তথ্য জেনে নেন। এই অবস্থা নির্ণয়ের জন্য কিছু টেস্ট করা হতে পারে, যার মধ্যে রয়েছে:
- রক্ত পরীক্ষা, যেমন:
- ক্লটিং টেস্ট: প্রোথ্রম্বিন টাইম (পিটি/PT) এবং পার্শিয়াল থ্রম্বোপ্লাস্টিন টাইম (পিটিটি/PTT)।
- ব্লাড কেমিস্ট্রি প্যানেল, যার মধ্যে রয়েছে ক্রিয়েটিনিন ফসফোকাইনেজ (সিপিকে/CPK)।
- মাংসপেশীর প্রোটিন মায়োগ্লোবিনের মাত্রা মূল্যায়নের জন্য মূত্র পরীক্ষা।
- জিনগত পরীক্ষা।
- মাংসপেশীর বায়োপসি।
এমএইচের ব্যবস্থাপনার মধ্যে রয়েছে:
- ডেন্ট্রোলিন প্রয়োগ, এমএইচ সংক্রান্ত ঘটনাপর্বের সময় এটি পছন্দসই ওষুধ হিসেবে বিবেচিত।
- জ্বর অথবা পরবর্তীকালে গুরুতর জটিলতার ঝুঁকি কমাতে আক্রান্ত ব্যক্তিকে কুলিং ব্ল্যাঙ্কেটে জড়িয়ে ফেলা হয়।
- এমএইচের ঘটনাপর্ব চলার সময় আক্রান্ত ব্যক্তিকে শিরার মাধ্যমে তরল পদার্থ দেওয়া হয়, যা কিডনির ক্ষতি রোধে সহায়ক, এর ফলে কিডনির স্বাভাবিক ক্রিয়া সংরক্ষিত হয়।