গর্ভাবস্থায় পায়ে টান ধরা কাকে বলে?
গর্ভাবস্থায় পায়ে টান ধরা একটি অত্যন্ত সাধারণ ঘটনা, প্রায় 50% অন্তঃসত্বা মহিলা এই অসুবিধায় ভোগেন। পায়ে টান ধরে সাধারণত সন্ধ্যে বা রাতে, বিশেষত তৃতীয় ত্রিমাসিকের (গর্ভাবস্থার শেষ তিন মাস) সময়। এটি যন্ত্রণাদায়ক, অস্বস্তিকর একটি অনুভূতি যা দৈনন্দিন কাজকর্মে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে।
এর প্রধান লক্ষণ এবং উপসর্গগুলি কি কি?
গর্ভাবস্থা এমন একটি সময় যখন সকল মহিলা একাধিক শারীরিক ও মানসিক পরিবর্তনের মধ্যে দিয়ে যান। এই সময় পায়ে টান ধরা সাধারণত কোনো বিশেষ চিন্তার কারণ নয়। এমনকি এর কোনো নির্দিষ্ট কারণও না থাকতে পারে। পায়ে টান ধরার পাশাপাশি আরও যেসব লক্ষণ ও উপসর্গগুলি এই সময় দেখতে পাওয়া যায় সেগুলি হল
- ঘন ঘন মাথা যন্ত্রণা।
- পেটে ব্যাথা এবং কোমরে ব্যথা।
- স্নায়ুর চাপ।
- পিঠের নিম্নাংশে যন্ত্রণা।
পেশীর ব্যথা সাধারণভাবে কয়েক সেকেন্ড থেকে সর্বোচ্চ 10 মিনিট অবধি থাকতে পারে।
এর প্রধান কারণগুলি কি?
গর্ভাবস্থায় পায়ে টান ধরার কোন নির্দিষ্ট কারণ নেই; তবে ওজনবৃদ্ধিকে এর জন্য কিছুটা দায়ী করা যেতে পারে। গর্ভে শিশুর উপস্থিতির জন্য কিছু রক্তবাহে অতিরিক্ত চাপ পড়লে পায়ে রক্তসংবহন কমে যেতে পারে। পায়ের পেশিগুলির হঠাৎ সংকোচনের ফলে পায়ে টান ধরে যা পেশীর চাপবৃদ্ধির সম্ভাবনা বাড়িয়ে দেয়। শরীরে ক্যালসিয়াম ও সোডিয়ামের মতো কিছু মিনারেল বা খনিজ কমে যাওয়ার ফলেও পেশীতে টান ধরতে পারে।
কিভাবে একে নির্ণয় এবং এর চিকিৎসা করা হয়?
চিকিৎসক সাধারণত শারীরিক পরীক্ষা এবং অসুস্থতার উপস্থিত লক্ষণগুলি দেখেই টান ধরার কারণ চিহ্নিত করেন।
অসুবিধাগুলির উপশমের জন্য ওষুধ দেওয়া যেতে পারে এবং শরীরে মিনারেলের অভাব থাকলে বাইরে থেকে তা সরবরাহ করা যেতে পারে। কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রে কোনরকম ওষুধ বা চিকিৎসা ছাড়াই টান ধরার সমস্যা দ্রুত সেরে যায়।
নিজের যত্ন নেওয়ার জন্য যা করতে পারেন:
- পায়ের গুলির পেশিতে টান ধরলে তা কমানোর জন্য গুলির পেশীর প্রসারণ বা ব্যায়াম করা যেতে পারে।
- পা টেপা (ম্যাসাজ) ব্যথা কমাতে সাহায্য করে।
- পেশীর ব্যথা কমাতে প্রচুর পরিমাণে জল খান।
- নিয়মিত ব্যায়াম শরীরের পেশী ও গাঁটগুলিকে সক্রিয় রাখে যা টান ধরার সমস্যা কমায়।
- পায়ে রক্তসংবহন বাড়ানোর জন্য স্টকিংস পরা যেতে পারে।
- পা উপরের দিকে করে রাখলে টান ধরার তীব্র ব্যথা কমে।
- গরম সেঁক পায়ের ব্যথায় যথেষ্ট উপকার দেয়।