জাপানি এনকেফেলাইটিস কি?
জাপানি এনকেফেলাইটিস (জেই) হলো একটি রোগ যা মূলত ভাইরাস থেকে হয় এবং এই রোগ মানুষ এবং পশুকে একইভাবে সংক্রমিত করে। এনকেফেলাইটিস, সহজ করে বলতে গেলে হল মস্তিষ্কের একের থেকে বেশি অংশে জ্বালা করা। জাপানি এনকেফেলাইটিস হলো সাধারণ অসুস্থতা যা ভ্যাকসিন ব্যবহার করে প্রতিরোধ করা যায়। এটি দেখা গেছে যে এসিয়ান মহাদেশে এবং প্যাসিফিকের পশ্চিম দিকে এনকেফেলাইটিস হওয়ার প্রধান কারণ। বাচ্চা যাদের বয়স 3-6 বছরের মধ্যে তাঁরা সাধারণত বেশি প্রভাবিত হয়, ভারতে, প্রত্যেক বছর 1500-4000 এরকম ঘটনার বিবরণ দেওয়া হয়।
এর প্রধান লক্ষণ এবং উপসর্গগুলি কি কি?
বেশীরভাগ রোগীর কোনরকম উপসর্গ দেখা দেয় না। এটা দেখা গিয়েছে যে 1% এর কম রোগীর মধ্যে রোগ সম্বন্ধীয় লক্ষণ দেখা দেয়। প্রধান লক্ষণগুলি হল:
- জ্বর (38°C এর উপরে)।
- মাথাব্যথা।
- উদ্যমের অভাব।
- পাতলা মলত্যাগ করা।
- তীব্র পেশিতে ব্যথা হওয়া।
কিছু ক্ষেত্রে, নিম্নলিখিত লক্ষণগুলি দেখা দিতে পারে:
- খিঁচুনি।
- মোটর ফাঙ্কশনের অক্ষমতা।
- পেশির অস্বাভাবিকভাবে শক্ত হয়ে যাওয়া।
এর প্রধান কারণগুলি কি?
যেই ভাইরাস জাপানি এনকেফেলাইটিসের কারণ সেটা হল ফ্ল্যাভিভাইরাস জিনাস। এটি সাধারণ ভাবে মশার কামড়ের জন্য ছড়ায়। সংক্রমণ হওয়ার ঝুঁকি নির্ভর করে:
- আপনি যেখানে থাকেন বা পরিদর্শন করেন ( ওই জায়গাগুলি যেখানে জেই রোগের জীবাণু রয়েছে)।
- বছরের ওই সময় যখন আপনি ওই জায়গাগুলি দর্শন করেন।
- আপনি সেই জায়গায় কি রকম কাজ করেন (বাইরে বেশি সময় কাটানো)।
এটি কিভাবে নির্ণয় এবং চিকিৎসা করা হয়?
রোগ নির্ণয় করা হয় বিশদ ইতিহাস এবং শারীরিক পরীক্ষার ওপর নির্ভর করে। ডাক্তার রোগ নিশ্চিত করার জন্য যে পরীক্ষাগুলি করতে বলেন তা হল:
- রক্ত পরীক্ষা: ভাইরাসের বিরুদ্ধে অ্যান্টিবডি নির্ধারণ করার জন্য।
- লাম্বার পাঙ্কচার: এটা দেখার জন্য যে সেরিব্রোস্পাইনাল তরলে অ্যান্টিবডি আছে কি না।
- ব্রেন স্ক্যান: ব্রেনের ছবি নেওয়া যাতে চরিত্রগত পরিবর্তন দেখা যায়।
এই রোগ সারিয়ে তোলার জন্য কোন নির্দিষ্ট ওষুধ উপলব্ধ নয়। লক্ষণ থেকে রেহাই পাওয়ার জন্য সহায়ক উপায় নেওয়া যেতে পারে। ভবিষ্যতে যাতে সংক্রমণ আটকানো যায় তার জন্যে ভ্যাক্সিনেশন দেওয়া হতে পারে। এটি বিশেষত তাঁদের দেওয়া হয় যারা অন্য জায়গায় ভ্রমণ করে যেখানে এই রোগ খুবই প্রচলিত। যেসব শিশুদের বয়স 2 মাসের কম তাদের এই ভ্যাক্সিনেশন দেওয়া হয় না। যাদের ভ্যাক্সিনের কোন উপাদান থেকে প্রতিক্রিয়া হয় তাদেরকে ভ্যাকসিন দেওয়া হয় না।
নিজের যত্ন নেওয়ার কিছু টিপ্পনী:
- রেপেলেন্ট এবং নেট ব্যবহার করা যাতে মশাদের দ্বারা এই ভাইরাস প্রেরিত হওয়া এড়ানো যায়।
- আরামদায়ক জামাকাপড় পরা লম্বা হাতার সঙ্গে যাতে মশার কামড় এড়ানো যায়।
- নিজের চারপাশ পরিষ্কার রাখা এবং জমা জল সরিয়ে দেওয়া যাতে মশারা ডিম না পাড়তে পারে।