খিটখিটে মেজাজ কি?
খিটখিটে মেজাজ মানে অহেতুক প্রতিক্রিয়া বোঝায়। এটাকে মেজাজের উপর কম নিয়ন্ত্রণ হিসাবে চিহ্নিত করা হয়, যেটার ফল হয় আকষ্মিক মৌখিক বা আচরণগত বিস্ফোরণ, যদিও এই মেজাজের প্রকাশ বাইরে থেকে বোঝা যায় না। এটা দীর্ঘস্থায়ী, সাধারণ বা কম সময়ের জন্য হতে পারে। খিটখিটে মেজাজ একটা স্বাভাবিক বিরক্তির প্রকাশ হতে পারে বা কোনো অন্তর্নিহিত রোগের ফলে হতে পারে।
এর প্রধান লক্ষণ ও উপসর্গগুলো কি কি?
খিটখিটে মেজাজের সাধারণ উপসর্গগুলি হলো:
- বদমেজাজ বা অল্পতেই রেগে যাওয়া।
- অত্যধিক হতাশা।
দীর্ঘকালীন ও অত্যধিক খিটখিটে মেজাজের উপসর্গগুলি হলো:
- প্রচন্ড প্রতিক্রিয়া যেটা প্রকাশ পায় সম্পর্কহীন ব্যক্তির উপর।
- হতাশা, মানসিক চাপ এবং দুশ্চিন্তা অহেতুক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে।
- দীর্ঘকালীন খিটখিটে মেজাজের কারণে মানসিক চাপ দেখা দেয়।
- কর্মক্ষেত্রে রোগীর, আত্মীয় এবং সহযোগীদের কষ্ট।
এর প্রধান কারণগুলি কি কি?
খিটখিটে মেজাজ সবসময়ই কোনো অন্তর্নিহিত কারণের জন্য হয় না। এটা নিয়মিত বিরক্তি, বারবার উসকানো বা দীর্ঘ মানসিক চাপের কারণেও হয়।
খিটখিটে মেজাজের সাধারণ কারণগুলি হোলো:
- বিভিন্ন অসুখ যেমন পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিনড্রোম, মেনোপস, হাইপারথাইরয়েডিসম, দাঁতে ব্যথা, ফ্লু, এবং কানে সংক্রমণ।
- মানসিক অসুখ যেমন চাপ, দুশ্চিন্তা, হতাশা, বাইপোলার অসুখ, সীত্সফ্রেনীয়্যা, মনোযোগের ঘাটতি ও অতি মাত্রায় সক্রিয় এবং অটিজম। এটা সাধারণত কিশোর এবং তরুনাবস্থায় দেখা যায়।
- শিশুদের মধ্যেও খিটখিটে মেজাজের উপসর্গ এবং সাথে বেপরোয়া আচরণ দেখা দিতে পারে।
- মহিলাদের মধ্যে খিটখিটে মেজাজ পরিষ্কার দেখা যায় মাসিকের আগে, পেরিনাটাল এবং পেরিমেনোপসাল কালে।
- কাজ পাগল জীবনও খিটখিটে মেজাজের সাথে জুড়ে থাকে।
- দীর্ঘ মানসিক চাপ।
- মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ করার অক্ষমতা।
- মদ্যপানের অভ্যেস।
এটি কিভাবে নির্ণয় ও চিকিৎসা করা হয়?
রোগীর ইতিহাস ভাল করে শুনে এবং তার মূল্যায়ন করে তারপর এই রোগের সনাক্তকরণ করা হয়। পরিবারের সদস্যদেরও বলা হয় উপসর্গগুলির ইতিহাস জানাতে, যেটা সনাক্তকরণের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয়ও।
আপনার চিকিৎসক আপনাকে এই রোগের মূল কারণ অনুসন্ধান করার পরামর্শ দিতে পারেন।
খিটখিটে মেজাজের চিকিৎসার মধ্যে রয়েছে মূল সাস্থ্যের অবস্থার এবং আরও অন্যান্য কারণ যা এই রোগ সৃষ্টি করছে তার পরিমাপ করা এবং তা নিয়ন্ত্রণ করা।
খিটখিটে মেজাজের চিকিৎসার জন্য কগ্নিটিভ আচরণগত থেরাপী এবং মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি যেমন, ধ্যান করা এবং মনোযোগী হতে পরামর্শ দেওয়া হয়।
আপনার চিকিৎসক আপনাকে কিছু ওষুধ দিতে পারেন যেমন অবসাদ কমানোর ওষুধ এবং মেজাজ ঠিক রাখার ওষুধ।
খিটখিটে মেজাজ দূর করতে আরাম করা খুবই প্রয়োজনীয়, যেমন:
- কোনো শারীরীক কসরত করা যেমন হাঁটা বা সাঁতার কাটা।
- বই পড়া, গান শোনা।
- শ্বাসের ব্যায়াম করা।