সারাংশ
শরীরে যকৃত থেকে চর্বি উৎপন্ন হয় যাকে কোলেস্টরল বা লিপিড বলা হয়। শরীরে কোলেস্টরলের দৈনিক প্রয়োজনীয়তা খাদ্যতালিকায় থাকা ডিমের কুসুম, দুগ্ধজাত পদার্থ, এবং মাংস থেকে মিটে যায়। শরীরের বিভিন্ন জৈবিক কার্যপ্রণালির জন্য উপযুক্ত পরিমাণে কোলেস্টরল জরুরি। ইস্ট্রোজেন, প্রোজেস্টেরন, টেস্টোস্টেরন, কর্টিসল, এবং অল্ডোস্টেরন জাতীয় হরমোন উৎপাদনের জন্য এটি আবশ্যক। অধিকন্তু, পাচক লবণের (বাইল সল্ট) মধ্যে কোলেস্টরল আছে যা প্রকৃতভাবে চর্বি হজম করতে কাজে লাগে। এছাড়া এটি শরীরে ভাইটামিন A, D, E এবং K গ্রহণে সহায়ক হয়। তাছাড়া, এটি কোশের ঝিল্লির (সেল মেমব্রেন) গুরুত্বপূর্ণ উপকরণ এবং কোশের গঠন ঠিক রাখতে সাহায্য করে। সূর্যালোকের উপস্থিতিতে কোলেস্টরলের সাহায্যে শরীরে ভাইটামিন D উৎপন্ন হয়। রক্তের মধ্যে প্রোটিনের (লাইপোপ্রোটিন) সঙ্গে কোলেস্টরল চলাচল করে। ভাল কোলেস্টরল (বেশি ঘনত্বের লাইপোপ্রোটিন- HDL) হার্টের সুরক্ষায় কাজ করে, যেখানে অতিরিক্ত খারাপ কোলেস্টরল (কম ঘনত্বের লাইপোপ্রোটিন- LDL) এবং খুব কম ঘনত্বের লাইপোপ্রোটিন- VLDL) হৃদরোগের আশঙ্কা বাড়ায়।
শরীরের খারাপ কোলেস্টরল অতিরিক্ত থাকলে বুকে ব্যাথা বা অ্যানজাইনা, হৃদরোগের আক্রমণ, স্ট্রোক এবং ডায়বিটিস হতে পারে। শরীরে কোলেস্টরলের মাত্রা বৃদ্ধির কারণ হল চর্বি সমৃদ্ধ খাদ্যতালিকা, স্থূলত্ব এবং নিষ্ক্রিয় জীবনযাত্রা। রক্তে কোলেস্টরল বৃদ্ধি পেলে রক্তনালীর মধ্যে প্লাক জমে এবং তা থেকে বিভিন্ন ধরনের হৃদরোগ (কার্ডিওভাসকিউলার) দেখা দেয়। উচ্চ রক্তচাপ, সিগারেট খাওয়া, এবং স্থূলত্ব হৃদরোগের আশঙ্কা আরও বাড়িয়ে দেয়। কোনও কোনও ব্যক্তির ক্ষেত্রে বংশগত জিন কোলেস্টরলের মাত্রা বৃদ্ধির কারণ হয়। জীবনশৈলীর পরিবর্তন, যেমন আদর্শ ওজন রাখা, ভাজা এবং চর্বিসমৃদ্ধ খাবারের পরিমাণ সীমিত করা এবং ধূমপান ত্যাগ করা শরীরে কোলেস্টরলের মাত্রা বৃদ্ধি হতে দেয় না। অতিরিক্তভাবে কিছু ওষুধের সঙ্গে স্ট্যাটিন জাতীয় ওষুধ একসঙ্গে প্রয়োগ করার পরামর্শ দেওয়া হয় যাতে কোলেস্টরলের মাত্রা কমে।