এইচ. পাইলোরি কি?
এইচ.পাইলোরি (হেলিওব্যাক্টার পাইলোরি) হলো একটা ব্যাক্টেরিয়াম যা আমাদের শরীরে ঢুকে পেটে আশ্রয় গ্রহণ করে। অনেক সময় এটা সহভোজীর মত আচরণ করে (পেটেই থেকে যায় এবং কোন সমস্যা সৃষ্টি করে না); কিন্তু কিছু ব্যক্তির মধ্যে মানানসই অবস্থা পেয়ে এটি বাড়তে থাকে এবং পেটে আলসার সৃষ্টি করে। এটির ফলে সাধারণত একটি ক্রনিক অবস্থার সৃষ্টি হয় যাকে জিইআরডি (গ্যাস্ট্রো-ইসোফিগাল রিফ্লাক্স রোগ)বলা হয় এবং যা আন্টিবায়োটিক দ্বারা সহজে সারিয়ে তোলা যায় ।
এর প্রধান লক্ষণ এবং উপসর্গগুলি কি কি?
যখন এইচ.পাইলোরি পেটে ঢোকে, এটি পেটে অ্যাসিড উৎপাদন বাড়িয়ে তোলে এবং পেটের ভিতরের আস্তরণের ক্ষতি করে যার ফলে পেটে আলসার হতে পারে (মাঝে মাঝে এটা অনেকগুলি গ্যাস্ট্রিক আলসারের কারণ হতে পারে)। আলসারের উপসর্গগুলি হলো:
- উপরের পেটে ব্যথা করা (আরও পড়ুন: পেটে ব্যথার কারণ)।
- তলপেটে ব্যথা, খাবার খেলে এই ব্যথা বেড়ে যায় এবং খাওয়ার কিছু ঘণ্টার পর ঠিক হয়ে যায়; দীর্ঘক্ষণ উপোস এবং দেরি করে খাওয়ার পর এই ব্যথা বেড়ে যায়।
- বমি বমি ভাব।
- বমি করা (মাঝে মাঝে বমিতে রক্ত থাকা)।
- তলপেট ফেঁপে যাওয়া।
- ঢেঁকুর ওঠা।
- ওজন কমে যাওয়া এবং অ্যানিমিয়া।
- কালো রঙের মল।
এর প্রধান কারণগুলি কি কি?
কেমন করে এইচ.পাইলোরি শরীরে ঢোকে তা অজানা কিন্তু শরীরে ঢুকে গেলে এটি পেটের আস্তরণে আলসারের সৃষ্টি করে। এইচ.পাইলোরি নিজেই হল গ্যাস্ট্রিক আলসারেশনের কারণ কিন্তু কিছু নির্দিষ্ট ঝুঁকির কারণ আছে, যা একজন ব্যক্তিকে ব্যক্টেরিয়ার দ্বারা সংক্রামিত হওয়ার সম্ভাবনাকে বাড়িয়ে দেয়।
এই ঝুঁকির করণগুলির মধ্যে রয়েছে:
- কোন ব্যক্তির সংস্পর্শে থাকা যে এইচ.পাইলোরি রোগে আগে থেকেই সংক্রামিত।
- খারাপ মনের জল (এরকম জল পান করলে এই সংক্রমণ হতে পারে)।
- উচ্চ-ঘন বসতি পূর্ণ এলাকায় থাকা।
- খুবই খারাপ ব্যক্তিগত অস্বাস্থ্যকর অবস্থায় থাকা।
এটি কিভাবে নির্ণয় এবং চিকিৎসা করা হয়?
উপযুক্ত চিকিত্সার ইতিহাস এবং তার সঙ্গে পুঙ্খানুপুঙ্খ রোগ সম্পর্কিত পরীক্ষা গ্যাট্রো-ইসোফিগাল রিফ্লাক্স রোগ (জিইআরডি) নির্ণয় করতে পারে। এইচ.পাইলোরি সংক্রমণ নির্ণয় করার জন্য কিছু নির্দিষ্ট গবেষণা করা জরুরী। সেই গবেষণাগুলি হল:
- মল পরীক্ষার সঙ্গে রক্ত পরীক্ষা যেমন সিবিসি।
- নিশ্বাসের ইউরিয়া পরীক্ষা।
- ডাইজেস্টিভ ট্র্যাক্টের উপরের অংশের এন্ডোস্কোপি।
সাধারণত এইচ.পাইলোরি সংক্রমণ মৌখিক ওষুধের দ্বারা চিকিৎসা করা হয়, যার মধ্যে নিচে উল্লেখ করা ওষুধের কমবিনেশন থাকে:
- অ্যান্টিবায়োটিক্স- ওষুধ যেমন অ্যামক্সিসিলিন, মেট্রোনিডাযোল, টিনিডাযোল, ক্ল্যারিথ্রোমাইসিন ইত্যাদি যা ব্যাক্টেরিয়া দূর করতে সাহায্য করে।
- প্রোটন পাম্প ইনহিবিটরস এবং হিসটামিন ব্লকার্স- এই ওষুধগুলি অ্যাসিড কমাতে সাহয্য করে পেটে আর আলসার সারাতে সাহায্য করে
- বিস্মুথ সাবস্যালিসাইক্লেট- এটি আলসারকে ঢেকে ভিতরের আস্তরণেকে সুরক্ষিত করে