ডার্মাটাইটিস হারপেটিফরমিস (ত্বকের চুলকানি) কি?
ডার্মাটাইটিস হারপেটিফরমিস (ডিএইচ), হল গ্লুটেন খাওয়ার ফলে হওয়া একধরণের ত্বকের ফুসকুড়ি অর্থাৎ ব়্যাশের সমস্যা সেই সঙ্গে ত্বকে ফোসকা পড়া। অসুখটি ডুরিং’স রোগ নামেও পরিচিত এবং এটি হল অন্ত্রের বাইরে সিলিয়াক রোগের প্রাদুর্ভাব। এটি একটি অটোইমিউন সংক্রান্ত সমস্যা, ডিএইচ রোগে আক্রান্ত রোগীর ক্ষুদ্রান্ত্র গ্লুটেনের প্রতি সংবেদনশীল হয়। যাদের সিলিয়াক রোগ আছে তাদের আগে থেকেই ডার্মাটাইটিস হারপেটিফরমিস থাকে। ভারতের উত্তরাংশে সচরাচর এই রোগটি দেখা যায়।
ডার্মাটাইটিস হারপেটিফরমিসের প্রধান লক্ষণ ও উপসর্গগুলি কি কি?
এই রোগে যে উপসর্গগুলি শরীরে ফুটে ওঠে:
- শরীরের উভয় দিকে ফুলে ওঠা বা ফোসকা পড়া এবং তাতে চুলকানি ভাব
- ছোটো ছোটো একগুচ্ছ ফোঁড়া হওয়া
- দাঁতের এনামেলের ক্ষতি হওয়া
ডার্মাটাইটিস হারপেটিফরমিস অসুখে সাধারণত যারা আক্রান্ত হন:
- 15-40 বছর বয়েসী ককেশীয় প্রজাতির মানুষেরা
- পুরুষরাই বেশিরভাগ আক্রান্ত হন
- 20 বছরের কম বয়সী মহিলা
- যেসব ব্যক্তির জিনগত সমস্যা থাকে
ডার্মাটাইটিস হারপেটিফরমিসের প্রধান কারণগুলি কি কি?
ত্বকের টিস্যু বা শরীরকলাতে ইমিউনোগ্লোবুলিন এ জমা হলে, তা পরবর্তীকালে ক্ষতের আকার নেয়। যাঁদের ডিএইচ থাকে, তাঁদের হাইপোথাইরয়েডিজম থাকতে পারে। এর ফলে যেসকল জটিলতাগুলি দেখা যায়:
- দাঁতের বিভিন্ন রকম সমস্যা
- হৃদযন্ত্রের সমস্যা
- বারবার মিসক্যারেজ বা গর্ভপাত হওয়া
- মেদযুক্ত যকৃতের কারণে লিভার বা যকৃতের নানারকম সমস্যা
কিভাবে এই রোগ নির্ণয় করা হয় ও এর চিকিৎসা কি?
ডিএইচ রোগ নির্ণয়ে যেসব পদ্ধতি অবলম্বন করা হয়:
- ত্বকের বায়োপসি
- পুষ্টির অভাব হচ্ছে কি না তা নির্ধারণ করা
- রক্ত পরীক্ষা
- ক্ষুদ্রান্ত্রের বায়োপসি
ডিএইচ রোগের চিকিৎসায় সালফোন বা সালফা জাতীয় ওষুধের প্রয়োগ করা হয়, ওষুধের মাত্রা রোগীর সহ্যক্ষমতার ওপর নির্ভর করে। অনেক সময় আবার কিছু স্টেরয়েড প্রয়োগ করারও প্রয়োজন পড়ে।
নিজের যত্ন নেওয়ার উপায়গুলি:
- গ্লুটেন-জাতীয় খাদ্য এড়িয়ে চলুন।
- রোগ কি অবস্থায় আছে আর ওষুধে কাজ হচ্ছে কি না তা জানার জন্য নিয়মিত ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া।
- বাজার থেকে প্যাকেটজাত কোনও খাবার কেনার আগে ভালো করে দেখে নেওয়া যে সেটি গ্লুটেন-মুক্ত লেখা আছে কি না।
- খাদ্য তালিকায় মাংস, দুগ্ধজাত খাবার, ফল ও সব্জি রাখা।
- দানাশস্য, শুঁটিজাতীয় বীজশস্য, বাদাম, বীজ ও কন্দ জাতীয় খাদ্য তালিকায় রাখা নিরাপদ বিকল্প হিসেবে।
গ্লুটেনজাতীয় দ্রব্য এড়িয়ে চললে ডিএইচ সমস্যা মোকাবিলা করা যায় কারণ এটি গ্লুটেন-প্রণোদিত সমস্যা। ডিএইচ রোগের একটি অবশ্যম্ভাবী আরোগ্য সমাধান আছে কারণ প্রায়শই দেখা গিয়েছে খাদ্য তালিকা থেকে গ্লুটেনযু্ক্ত খাবার বর্জন করে ডিএইচ রোগে আক্রান্ত ব্যক্তি উপকার পেয়েছেন। অতএব, জীবনশৈলীর পরিবর্তন করে ডিএইচ রোগকে নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়।