কারটিনিন পাল্মিটয়েল্ট্রান্সফেরাস 1এ এর অভাব কি?
কারটিনিন পাল্মিটয়েল্ট্রান্সফেরাস 1এ এর অভাব বা সিপিটি 1এ এর অভাব এমন এক শারীরিক অবস্থা যেখানে স্নায়ুতন্ত্র ক্ষতিগ্রস্ত হয়, সেই সঙ্গে যকৃৎ বা লিভারও প্রায় বিকল হয়ে আসে। সমস্যাটি একটানা উপবাস অথবা অসুস্থতার সঙ্গে জড়িত এবং যেখানে শরীর জমা ফ্যাট বা চর্বি থেকে প্রয়োজনীয় শক্তি উৎপাদন করতে বাধাপ্রাপ্ত হয়, বিশেষ করে একটানা উপোস করার সময়। এই ধরণের শারীরিক সমস্যা জিনগত কারণে হয় আর শৈশবেই এর লক্ষণ প্রথম প্রকাশ পায়।
কারটিনিন পাল্মিটয়েল্ট্রান্সফেরাস 1এ এর অভাবের প্রধান লক্ষণ ও উপসর্গগুলি কি কি?
এই রোগের উপসর্গগুলিকে তিনভাগে ভাগ করা যেতে পারে:
শিশুদের মধ্যে:
- যকৃৎ বা লিভারে ফোলাভাব
- রক্তে কেটোনের মাত্রা কম থাকা
- রক্তে রাসায়নিক কার্নিটাইনের উচ্চমাত্রা থাকা
- রক্তে শর্করার মাত্রা কমে যাওয়া
- পেশীর দুর্বলতা
প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে:
- পেশীতে টান ধরে, যকৃতের কোনও রকম সমস্যা বা রক্তে শর্করার মাত্রাজনিত কোনও সমস্যা ছাড়াই বিশেষ করে ব্যায়াম করার সময় বা পর
গর্ভবতী মায়ের ক্ষেত্রে:
- গর্ভবতী মায়ের লিভার বিকল হয়ে যাওয়া
কারটিনিন পাল্মিটয়েল্ট্রান্সফেরাস 1এ এর অভাবের প্রধান কারণগুলি কি কি?
এই অসুখ জিনগত, যদি বাবা-মা উভয়েই এই জিনের ধারক হয় তখন তাদের থেকেই সন্তানের দেহে এই রোগ আসে। কোনও শিশুর দেহে এই ধরণের শুধুমাত্র একটি পরিব্যক্ত বা মিউটেশন হওয়া জিনের উপস্থিতি তাকে এই অসুখের বাহক করে তোলে তবে তার দেহে কোনও রকম উপসর্গ ফুটে ওঠে না। এই ধরণের অসুখ মহিলা ও পুরুষ উভয়েই শরীরে দেখা যায়।
কিভাবে কারটিনিন পাল্মিটয়েল্ট্রান্সফেরাস 1এ এর অভাবের রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসা হয়?
সিপিটি 1এ এর ক্ষেত্রে নিম্মলিখিত রোগনির্ণয় পদ্ধতির সাহায্য নেওয়া হয়:
- শারীরিক নানান উপসর্গের পর্যবেক্ষণ
- কেটোনের মাত্রা, লিভার বা যকৃতের কার্যাবলী ও অ্যামোনিয়ার মাত্রা জানার জন্য পরীক্ষা
- এনজাইমের সক্রিয়তা দেখার জন্য ত্বকের নানান পরীক্ষা বা টেস্ট
- প্লাজমা ও সিরাম পরীক্ষা
সিপিটি 1এ এর সমস্যার মূল চিকিৎসা হলো হাইপোগ্লাইসিমিয়া (রক্তে কম মাত্রায় শর্করা থাকা) এড়িয়ে চলা। আর তা সুনিশ্চিত করতে বারবার খাবার খেতে হবে, কম ফ্যাটযুক্ত ও উচ্চ শর্করা আছে, এমন সব খাদ্য তালিকায় রাখতে হয় এবং নিয়ম করে তা মেনে চলতে হবে। রোগীর যদি তীব্র হাইপোগ্লাসিমিয়া দেখা দেয়, তাহলে সঙ্গে সঙ্গে শরীরে ডেক্সট্রোজ প্রয়োগ করা জরুরি।
যে সমস্ত মহিলারা এই অসুখে আক্রান্ত তাদের সন্তান ধারণ ও জন্ম দেওয়ার ক্ষেত্রে জটিলতা হয়। এজন্য সন্তানসম্ভবা মায়ের গর্ভাবস্থার ওপর যত্নসহকারে নজর রাখতে হয়। রক্তে হঠাৎ করে যদি শর্করার মাত্রা কমে যায় তাই হাতের কাছে চকোলেট বা ক্যান্ডি অথবা লজেন্স রাখা দরকার।