মুখের জ্বালা পোড়া কি?
মুখের জ্বালা পোড়া (বিএমএস) বা ঝলসে যাওয়া মুখ হল এমন একটা অবস্থা যেখানে জিভ, টাকরা, এবং ঠোঁটের ওপর একটা মানুষ তীব্র জ্বলন্ত সংবেদন অনুভব করেন।
এটা একটা বিরল অবস্থা এবং উপসর্গ ও কারণগুলো মূলত ব্যক্তি বিশেষে পরিবর্তিত হয়।
এর প্রধান লক্ষণগুলো এবং উপসর্গগুলো কি?
মুখের জ্বালা পোড়ার প্রধান লক্ষণগুলো এবং উপসর্গগুলো হল:
- জিভে একটা জ্বলন্ত সংবেদন, যা বেদনাদায়ক হতে পারে এবং একটা পোড়ানো ক্ষতের মত অনুভব হতে পারে।
- গরম চা, বা অ্যাসিডিক পানীয়ের মত বিশেষ পানীয়গুলোতে চুমুক দেওয়া অবস্থাটা গুরুতর করে তুলতে পারে।
- একজন ব্যক্তির মুখের ঠোঁট বা কোণেও জ্বলন্ত অনুভূতি হতে পারে।
- স্বাদ উপলব্ধি পাল্টে যাওয়ায় খাওয়া কষ্টকর হয়।
- কদাচিৎ, একটা রোগী মুখে অসাড় অবস্থার (কিছু না অনুভব করার) অভিযোগও করতে পারে।
এটার মূল কারণগুলো কি?
বিএমএস -এর প্রধান কারণগুলো অন্তর্ভুক্ত করা হল:
- প্রাথমিক বিএমএস কোন নির্দিষ্ট অবস্থা বা কারণগুলির সাথে সংযুক্ত নয়। কারণ সচরাচর ইডিওপ্যাথিক, অথবা অজানা থাকে।
- দ্বিতীয় শ্রেণীর বিএমএস একটা নির্দিষ্ট বাহক, অথবা নিম্নাবস্থিত রোগের কারণে হয়।
- মুখের সংক্রমণ যেমন ক্যান্ডিডা, বা মুখে আলসারের কারণে জ্বলন্ত সংবেদন হতে পারে।
- যখন মুখের লালা তৈরি কমে যায় তখন এক্সেরোস্টোমিয়া বা শুষ্ক মুখ দেখা যায়। মুখের শুষ্কতাও বিএমএস সৃষ্টি করে।
- যে মানুষের ডায়াবেটিস অথবা থাইরয়েড রোগ আছে তারা প্রায়ই মুখে জ্বালার অভিযোগ করেন। হরমোনের অসামঞ্জস্য এক্সেরোস্টোমিয়ার কারণ, যা জ্বলন্ত সংবেদনের সৃষ্টি করে।
- অ্যাসিড রিফ্লাক্স বা জিইআরডি -র মত পাচকস্থলীসংক্রান্ত অবস্থাগুলোও মুখের জ্বালার কারণ হতে পারে।
- অ্যাক্রিলিকের তৈরি দাঁতের পাটি যার প্রান্তে ধার থাকে তার ফলেও আলসার হতে পারে এবং গালের ভিতরের ভাগে ও মুখের তলদেশে জ্বালা করে।
কিভাবে এটাকে নির্ণয় এবং চিকিৎসা করা যায়?
- রোগীর উপসর্গ এবং শারীরিক পরীক্ষার উপর ভিত্তি করে বিএমএস এর রোগ নির্ণয় অত্যন্ত সহজ। যাইহোক, কারণ নির্ধারণ করতে কিছু পরীক্ষা করা যেতে পারে।
- ডায়াবেটিস, থাইরয়েড রোগগুলোর জন্য রক্ত পরীক্ষা।
- লালার পরিমাণ এবং গুণমান নির্ণয়ের জন্য লালা পরীক্ষা।
বিএমএস এর চিকিৎসাগুলো হল:
- প্রাথমিক মুখের জ্বালা পোড়া কোন নিম্নাবস্থিত কারণের সাথে সংযুক্ত নয় এবং জ্বলন্ত সংবেদন উপশমের দ্বারা চিকিৎসা হয়। এটার জন্য, যেমন নির্দিষ্ট খাদ্যতালিকাগত পরিবর্তন করা অপরিহার্য:
- মশলাদার খাবার, অ্যাসিডিক (আম্লিক) খাবার এবং অস্বস্তিদায়ক আহার ত্যাগ করুন। ধূমপান এবং মদ্যপানও উপসর্গগুলোকে বাড়াতে পারে, তাই, তাদের ত্যাগ করুন
- প্রয়োজনীয় পুষ্টি সমৃদ্ধ একটা ভাল সুষম খাদ্য খান।
- দ্বিতীয় শ্রেণীর মুখের জ্বালা পোড়া চিকিৎসার জন্য কারণ চিহ্নিত করুন।
- খাদ্যতালিকাগত পরিবর্তন এবং অ্যান্টাসিড ওষুধের দ্বারা অ্যাসিড রিফ্লাক্সের নিয়ন্ত্রণ করা হয়।
- ইন্সুলিন, ওষুধ, এবং ব্যায়াম দ্বারা হরমোনাল ব্যাধি নিয়ন্ত্রণ করা যায়।
- সংক্রমণের ক্ষেত্রে ফাংগাল ওষুধগুলো এবং অ্যান্টিবায়োটিক কার্যকর হয়।
- আইস চিপস চিবানো, ঠান্ডা পানীয় পান অথবা আক্রান্ত এলাকার ওপর অ্যালো ভেরা নির্যাস লাগানোর সাহায্যে বাড়িতে যত্ন করা যায়।