বাইপোলার ডিসঅর্ডার - Bipolar Disorder in Bengali

Dr. Ayush PandeyMBBS,PG Diploma

November 28, 2018

March 06, 2020

বাইপোলার ডিসঅর্ডার
বাইপোলার ডিসঅর্ডার

বাইপোলার ডিসঅর্ডার কাকে বলে?

বাইপোলার ডিসঅর্ডার একটি মানসিক স্বাস্থ্য সম্বন্ধীয় অবস্থা, যেখানে কোনও ব্যক্তির মেজাজের পরিবর্তন ঘটে চরম আনন্দ এবং বিষন্নতা যেকোন একটিতে। একে ম্যানিক ডিপ্রেসন’ও বলে, যাতে ব্যক্তিটির রোজকার জীবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

এর প্রধান লক্ষণ ও উপসর্গগুলি কি কি?

যে ধরণের মেজাজে একজন ব্যক্তির সর্বোচ্চ শক্তিস্তর লক্ষ্য করা যায়, তাকে ম্যানিয়া বলে।

  • এই রকম মেজাজ থাকাকালীন, তারা অত্যধিক আনন্দ ও ইতিবাচকতা দেখায়, এমনকি স্বতঃস্ফূর্ত কাজকর্মগুলিতেও, যেমন, উদারভাবে উপহার দেওয়া বা প্রবল উদ্দীপনা নিয়ে কেনাকাটা করা।
  • তারা আবার খিটখিটে হয়ে যেতে পারে এবং হ্যালুসিনেশন বা অমূলক জিনিস প্রত্যক্ষ  করতে পারে অথবা অবাস্তব জিনিসে বিশ্বাস করতে পারে।

ঠিক এর উল্টোদিকে আছে অবসাদের মতো মেজাজ যেখানে একজন ব্যক্তি বিষন্ন অনুভব করতে পারে, মনমরা এবং সবকিছুতে অনুৎসাহী হতে পারে।

  • বিষন্নতার সময়কাল বলতে রোগ সম্পর্কিত বিষন্নতার সময়কালকে বোঝায়, যেখানে একজন ব্যক্তি অন্য কারোর সাথে কথা বলতে চায় না বা প্রাত্যহিক কাজকর্মগুলি করতে চায় না।
  • এমনকি তাদের মধ্যে আত্মহত্যার চিন্তা এসে যায়।

এই দু’টি মেজাজের মধ্যেই, একজন বাইপোলার ডিসঅর্ডারের রোগীর স্বাভাবিক ব্যবহার করার  অবস্থাও থাকে। যদিও কোনও নির্দিষ্ট ধরণ নেই এবং প্রতিটা অবস্থা কয়েক সপ্তাহ থেকে কয়েক মাস পর্যন্ত হতে পারে।

বাইপোলার ডিসঅর্ডারের প্রধান কারণগুলি কি কি?

বাইপোলার ডিসঅর্ডারের কারণগুলি জানা নেই। এর উপর প্রচুর গবেষণা চলছে, কিন্তু শুধু ঝুঁকির কারণগুলিই এখন পর্যন্ত জানা সম্ভব হয়েছে।

  • মস্তিষ্কের গঠনগত কারণকে এই অবস্থা সৃষ্টির জন্য দায়ী করা হয়।
  • যদি রোগীর বাবা-মা বা দাদু-ঠাকুমার বাইপোলার ডিসঅর্ডার থাকে, তাদের সন্তানদেরও এই রোগ হবার  উচ্চ-সম্ভাবনা থেকে যায়।

অন্যান্য যে কারণগুলি বাইপোলার ডিসঅর্ডারের জন্য দায়ী সেগুলি হল, খুব বেশি মানসিক চাপ, মানসিক আঘাত অথবা শারীরিক কোনও অসুস্থতা থেকেও হতে পারে।

কিভাবে এর রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসা করা হয়?

বাইপোলার ডিসঅর্ডারের ক্ষেত্রে রোগ নির্ণয় করা কঠিন, কারণ এর কোনও শারীরিক উপসর্গ নেই এবং যেহেতু ভিন্ন ব্যক্তির মেজাজ ভিন্ন ভিন্ন প্রকারের হয়।

  • মানসিক রোগের চিকিৎসক বিভিন্ন রকমের ক্রিয়াকলাপ ও কাজের মাধ্যমে একজন ব্যক্তির মানসিক স্বাস্থ্য সম্পূর্ণ পরীক্ষা করে দেখেন। চিকিৎসার ক্ষেত্রে রোগীর প্রাত্যহিক ভাবে লিখে রাখা মেজাজ সম্পর্কিত দিনলিপিও যথেষ্ট সাহায্য করে। 
  • কিছু মানসিক স্বাস্থ্য সম্পর্কিত পরীক্ষা আছে, যার মাধ্যমে মানসিক অবস্থার উপসর্গগুলি বিচার করে বাইপোলার ডিসঅর্ডার রয়েছে কিনা বোঝা যায়।
  • ডাক্তার অন্যান্য অসুখের সম্ভাবনা সম্বন্ধে পরিষ্কার হয়ে নেওয়ার জন্য এর সাথেই কিছু শারীরিক পরীক্ষা এবং কিছু রকমের রক্ত পরীক্ষা করেন।

বাইপোলার ডিসঅর্ডারের চিকিৎসায় মেজাজ পরিমার্জনা করার জন্য ওষুধ, থেরাপি, জীবনশৈলীতে সংশোধন প্রভৃতি ব্যবস্থা নেওয়া হয়।

  • বিষন্নতা-দূরকারী ও মনোরোগ-দূরকারী ওষুধ দেওয়া হয়।
  • থেরাপি হিসেবে আন্তঃব্যক্তিগত থেরাপি যেখানে প্রাত্যহিক কাজকর্মগুলি যেমন ঘুমানো, খাওয়া প্রভৃতির উপর নিয়ন্ত্রণ পাওয়ার চেষ্টা করা হয়।
  • জ্ঞান সম্বন্ধীয় যে থেরাপি করা হয়, তাতে একজন মানসিক রোগের চিকিৎসক রোগীকে তার আচরণ নিয়ন্ত্রনের জন্য তার চিন্তাধারায় পরিবর্তন আনতে বলেন।

অন্যান্য নিজের যত্ন নেওয়ার পদ্ধতিগুলি হল, নিজের কোনও প্রিয়জনের কাছ থেকে সহযোগিতা চাওয়া, প্রাত্যহিকভাবে নির্দিষ্ট নিত্যকর্মসূচি মেনে চলা, মেজাজ বদল যখন হয় তা বুঝে বিশেষজ্ঞের সাহায্য দ্বারা তার উপর নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করতে হবে।



তথ্যসূত্র

  1. Millman ZB,Weintraub MJ,Miklowitz DJ. Expressed emotion, emotional distress, and individual and familial history of affective disorder among parents of adolescents with bipolar disorder. Psychiatry Res. 2018 Dec;270:656-660. PMID: 30384286
  2. Holder SD. Psychotic and Bipolar Disorders: Bipolar Disorder. FP Essent. 2017 Apr;455:30-35. PMID: 28437059
  3. Miller TH. Bipolar Disorder. Prim Care. 2016 Jun;43(2):269-84. PMID: 27262007
  4. Grande I,Berk M,Birmaher B,Vieta E.Bipolar disorder .Send to Lancet. 2016 Apr 9;387(10027):1561-72. PMID: 26388529
  5. National Institute of Mental Health [Internet] Bethesda, MD; Bipolar Disorder. National Institutes of Health; Bethesda, Maryland, United States

বাইপোলার ডিসঅর্ডার জন্য ঔষধ

Medicines listed below are available for বাইপোলার ডিসঅর্ডার. Please note that you should not take any medicines without doctor consultation. Taking any medicine without doctor's consultation can cause serious problems.