ব্যাকটেরিয়াল ইনফেকশন বা জীবাণুঘটিত সংক্রমণ কি?
স্বাভাবিকভাবে, শরীরের মধ্যে উপস্থিত, ব্যাকটেরিয়া কোনও ক্ষতির করণ হয় না কিন্তু এখানে পরিবেশের মধ্যে শরীরের বাইরেও কিছু অন্যান্য ব্যাকটেরিয়া উপস্থিত আছে। এই ব্যাকটেরিয়া শরীরের প্রবেশ করে সংক্রমণ সৃষ্টি করে এবং একে প্যাথোজেনিক ব্যাকটেরিয়া বলা হয়। নির্দিষ্ট পরিস্থিতিতে, অভ্যন্তরীণ সিম্বাওটিক ব্যাকটেরিয়াও দুর্বল অনাক্রম্যতা এবং তাদের অত্যধিক বৃদ্ধি কারণে সংক্রমণ ঘটাতে পারে। ব্যাকটেরিয়ার মাধ্যমে সংক্রামিত হতে পারে এমন অঙ্গগুলি হল ফুসফুস, গলা, অন্ত্র ও চামড়া। ব্যাকটেরিয়াল ইনফেকশন একজন সংক্রমিত ব্যক্তির থেকে একটি সুস্থ ব্যক্তির মধ্যে ছড়িয়ে যেতে পারে। সুতরাং, নিজের এবং আশেপাশের স্বাস্থ্য বজায় রাখতে এবং সংক্রমণ ছড়ানো আটকাতে সমস্ত প্রয়োজনীয় সতর্কতা নেওয়া উচিত।
এর প্রধান লক্ষণ এবং উপসর্গগুলি কি কি?
ব্যাকটেরিয়াল ইনফেকশনের উপসর্গগুলি সংক্রামিত জায়গাটা এবং সংক্রমণের তীব্রতার উপর ভিত্তি করে পরিবর্তিত হয়। ব্যাকটেরিয়াল ইনফেকশনের সাধারণ উপসর্গগুলি হল:
- কাশি।
- জ্বর।
- মাথা ব্যাথা।
- শরীর ঠান্ডা হয়ে যাওয়া।
- ঘাম।
- পেশী ব্যথা।
- ক্লান্তি।
- শ্বাস নিতে অসুবিধা।
- সংক্রমণের জায়গায় ব্যথা এবং অস্বস্তি।
- সংক্রমণের জায়গায় ফোলা এবং লালভাব।
- খিদে হারানো।
এর প্রধান কারণগুলি কি কি?
সাধারণ সংক্রমণ-সৃষ্টিকারী ব্যাকটেরিয়াগুলি হল:
- স্ট্রেপ্টোকক্কাস
- স্টেফাইলোকক্কাস
- ই.কোলাই
- ক্লেবসিয়েল্লা
- সিউডোমোনাস
- মাইকোব্যাকটেরিয়াম
ব্যাকটেরিয়াল ইনফেকশনের ঝুঁকি বাড়তে পারে এমন বিষয়গুলি হল:
- কাটা এবং ক্ষত।
- ব্যাকটেরিয়াল ইনফেকশনের সাথে যুক্ত কোনো ব্যক্তির সাথে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ।
- সংক্রামিত খাদ্য এবং জল খাওয়া।
- সংক্রামিত কোনো ব্যক্তির মলের সংস্পর্শে আসা।
- সংক্রামিত ব্যক্তির হাঁচির সময় নির্গত কণায় শ্বাস নেওয়া।
- পরোক্ষ ভাবে সংক্রমণ যেমন, সংক্রামিতের উপরিভাগ ছোঁয়া।
এটি কিভাবে নির্ণয় এবং চিকিৎসা করা হয়?
ডাক্তার নিম্নলিখিত পদ্ধতিতে এই রোগ নির্ণয় করেন:
- ব্যক্তির চিকিৎসার ইতিহাস সম্বন্ধে খোঁজ নেওয়া।
- ব্যক্তির শারীরিক পরীক্ষা।
- রেডিওগ্রাফিক ফলাফল।
- রক্ত এবং প্রস্রাব পরীক্ষার মত ল্যাব টেস্ট।
ব্যাকটেরিয়ার ধরন এবং আক্রান্ত অংশটির ওপর ভিত্তি করে ব্যাকটেরিয়াল ইনফেকশনের সঠিক চিকিৎসা করা হয়। সাধারণত ব্যাকটেরিয়াল ইনফেকশনের চিকিৎসার জন্য ডাক্তারের পরামর্শে টপিকাল, মৌখিক, বা ইনজেকশনযোগ্য অ্যান্টিবায়োটিক থেরাপি করা হয়। যদি আগে দেওয়া ওষুধ যথেষ্ট পরিমান ব্যাকটেরিয়া সরাতে না পারে তবে কখনও কখনও ডাক্তারকে অ্যান্টিবায়োটিক পরিবর্তন করতে হয়।