ইয়জ কি?
ইয়জ হল একটা ছোঁয়াচে রোগ, যার কারণ হল ব্যক্টেরিয়া ট্রেপোনেমা পারটেনিয়ু। এ এক এমন রোগ যা ত্বক, হাড় এবং গাঁটকে প্রভাবিত করে এবং প্রাথমিক প্রাদুর্ভাবের কয়েক বছর পর লক্ষণ ফুটে ওঠে। শুষ্ক আবহাওয়ার চেয়ে ক্রান্তীয় আবহাওয়ায় ইয়জের ঝুঁকি বেশি। ব্যাক্টেরিয়া শরীরে প্রবেশ করে ত্বকের মাধ্যমে। যে ব্যাক্টেরিয়ার কারণে ইয়জ হয়, তার সঙ্গে সিফিলিস হওয়ার জন্য দায়ী ব্যাক্টেরিয়ার সাদৃশ্য রয়েছে; তবে ইয়জ যৌন সংক্রামক নয়, কিন্তু সংক্রমিত ব্যক্তির সংস্পর্শে আসলে ছড়িয়ে পড়ে।
এর প্রধান লক্ষণ এবং উপসর্গগুলি কি কি?
ত্বকের যে জায়গা দিয়ে ব্যাক্টেরিয়া প্রবেশ করে, সেই অংশে ফোলা ভাব দেখা দেয়। তা সাধারণত যন্ত্রণাহীন হয় এবং সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির চুলকানি অনুভূত হতে পারে। প্রাথমিক কালশিটে ভাব সেরে ওঠার সময় বা তার পরে আরও অনেক কালশিটেভাব ফুটে ওঠে। ইয়জের প্রাথমিক অবস্থায় অন্যান্য সাধারণ লক্ষণ এবং উপসর্গগুলি হল:
- হাড়ে ব্যথা।
- ফোলা হাড় এবং আঙুল।
- ত্বকে দাগ পড়া।
- ক্ষতের সঙ্গে ঘা এবং যন্ত্রণাদায়ক ফাটল।
প্রাথমিক পর্যায়ে যদি ঠিক করে না সারানো হয়, তাহলে পরবর্তীকালে ফোলাগুলি গুরুতরভাবে হাড়ের গঠন এবং কার্যকারিতায় প্রভাব ফেলতে পারে।
এর প্রধান কারণগুলি কি কি?
ইয়জ কুণ্ডলাকৃতি ব্যক্টেরিয়া ট্রেম্পোনেমা পারটেনিয়ু কারণে হয়, যা ত্বকের সরাসরি সংস্পর্শের ফলে আক্রান্ত ব্যক্তির দেহ থেকে সুস্থ ব্যক্তির দেহে প্রেরিত হয়। খুবই বিরল হলেও, এই ব্যাক্টেরিয়ায় সংক্রমিত কোনও পোকার কামড়েও এই অবস্থা হতে পারে।
এটি কিভাবে নির্ণয় এবং চিকিৎসা করা হয়?
রোগ নির্ণয় সাধারণত শারীরিক পরীক্ষার মাধ্যমে হয়, তারপরে ডাক্তার বিভিন্ন রকমের পরীক্ষা করানোর পরামর্শ দেন রোগ নির্ণয়ের ব্যাপারে সুনিশ্চিত হওয়ার জন্য। অণুবীক্ষণ যন্ত্রের তলায় আক্রান্ত ত্বক বা ক্ষতের টিস্যু পর্যবেক্ষণ স্টেজ 1-এর অবস্থা নির্ণয়ে সহায়ক। স্টেজ 3 নির্ণয়ের ক্ষেত্রে ভিডিআরএল টেস্ট এবং ট্রেপোনেমাল অ্যান্টিবডি টেস্ট উপযোগী।
ডাক্তার সাধারণত নিম্নলিখিত ওষুধগুলি নেওয়ার পরামর্শ দেন:
- ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশনের “ইয়জ ইরাডিকেশান স্ট্র্যাটেজি” অনুযায়ী ওরাল অ্যাজিথ্রোমাইসিন 30 এমজি/কেজি হল অনুমোদিত চিকিৎসা পদ্ধতি।
- অ্যাজিথ্রোমাইসিনে সাড়া না দেওয়া ব্যক্তিদের ইন্ট্রামাস্কিউলার বেঞ্জাথিন পেনিসিলিন ব্যক্তিদের দেওয়া হয়।
অ্যান্টিবায়োটিক থেরাপির পর সম্পূর্ণ রোগ নিরাময়ের যাচাইয়ের জন্য ডাক্তার সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে চার সপ্তাহের জন্য পর্যবেক্ষণে রাখেন। নিরাময়ের পর ইয়জে ফের আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা বিরল।