টক্সোক্যারিয়াসিস কি ?
টক্সোক্যারিয়াসিস এক বিরল ধরণের সংক্রমণ যা গোলকৃমি নামক পরজীবীর কারণে হয়ে থাকে। এই পরজীবীগুলি প্রধানত বিড়াল ও কুকুরের মতো পশুর শরীরে খুঁজে পাওয়া যায়।
এর প্রধান লক্ষণ ও উপসর্গগুলি কি কি ?
টক্সোক্যারিয়াসিসের সাধারণ উপসর্গগুলি হলঃ
- একটানা কাশির উপস্থিতি।
- প্রচণ্ড জ্বর।
- মাথাযন্ত্রণা।
- পেটে ব্যথা।
কিছু কিছু ক্ষেত্রে, পরজীবীর লার্ভাগুলি লিভারে, ফুসফুসে ও চোখে সংক্রমণ ঘটাতে পারে এবং তার ফলে যে উপসর্গগুলি দেখতে পাওয়া যায় সেগুলি হল:
- খিঁচুনি।
- দৃষ্টিশক্তির সমস্যা হওয়া।
- চোখে ব্যথা হওয়া।
- নিশ্বাস নিতে অসুবিধা হওয়া।
- চামড়ায় ফুসকুড়ি দেখতে পাওয়া।
- ক্লান্ত হয়ে পড়া।
এটি উল্লেখ করা জরুরী যে বেশীরভাগ ব্যক্তিদের মধ্যে, কোন সংক্রমণের উপসর্গ নাও দেখা দিতে পারে কারণ কিছু মাসের মধ্যেই পরজীবীগুলি মারা যায়।
এর প্রধান কারণগুলি কি কি ?
টক্সোক্যারিয়াসিসের প্রাথমিক কারণ হল কুকুর ও বিড়ালের মতো পশুদের পাচনতন্ত্রে পরজীবী গোলকৃমির বসবাস। এই পরজীবীর ডিম গুলি এই পশুদের পায়খানার মাধ্যমে মাটির মধ্যে প্রবেশ করে। দূষিত মাটি, জল বা খাদ্যের যার মধ্যে ডিমগুলি রয়েছে, মাধ্যমে মানব শরীরে প্রবেশ করার ফলে সংক্রমণ সৃষ্টি হয়।
এই সংক্রমণটি সাধারণত শিশুদের মধ্যেই বেশি দেখা যায় কারণ তারা মাটি ও পোষা প্রাণীদের সাথে খেলা করে।এই সংক্রমণটি মানুষের দ্বারা ছড়ায় না।
কিভাবে এর নির্ণয় ও চিকিৎসা করা হয় ?
এই সংক্রমণটি বেশীরভাগ নির্ণয় করা হয় শারীরিক উপসর্গগুলি দেখে এবং তার পরে কিছু রক্ত পরীক্ষার মধ্যমে নির্ণয়টি নিশ্চিত করা হয়।
সংক্রমণটি অস্বস্তিজনক উপসর্গ সৃষ্টি করলে ও নিজে থেকে ভাল না হলে সেক্ষত্রে চিকিৎসার প্রয়োজন হয়।
টক্সোক্যারিয়াসিসের চিকিৎসার সবচেয়ে সাধারণ পথ হল ওষুধ প্রয়োগের দ্বারা শরীরের ভিতর পরজীবীর লার্ভাগুলিকে হত্যা করা। পাশাপাশি এই ওষুধগুলির সাথে, গুরুতর সংক্রমণের কারণে প্রদাহ কমাতে স্টেরয়েডজাতীয় ওষুধ ব্যবহার করতে দেওয়া হয়। পরজীবীর থেকে নিরাময় পেতে অ্যাল্বেন্ডাজোলের মত সাধারণ ওষুধের ব্যবহার করতে দেওয়া হয়।
এই সংক্রমণ প্রতিরোধ করতে সবচেয়ে সাধারণ পথ হল পোষা প্রাণীদের গায়ে হাত দেওয়া ও মাটি নিয়ে কাজ করার পর গরম জলে সাবান দিয়ে হাতটি পরিষ্কার করা উচিত। বাচ্চাদের ঘনঘন মুখের ভিতরে হাত দেওয়ার প্রবণতায় বাধা দেওয়া অতি আবশ্যক।