গলায় ইনফেকশন কি?
গলা হল শরীরের সেই অঙ্গ যা খাবারকে ইসোফেগাস বা খাদ্যনালী এবং বায়ুকে ট্রাকিয়া (শ্বাসনালী) পর্যন্ত নিয়ে যায়। চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় গলাকে ফ্যারিংস বলা হয়। গলায় ইনফেকশন বা সংক্রমণ হল এমন এক অবস্থা, যাতে গলা ব্যথা হয় ও অস্বস্তি লাগে এবং খসখস করে। ভাইরাস গলায় সংক্রমণের সাধারণ কারণ, কিন্তু ব্যাক্টেরিয়াও এর কারণ হতে পারে।
এর প্রধান লক্ষণ এবং উপসর্গগুলি কি কি?
গলায় সংক্রমণের ক্ষেত্রে নিম্নলিখিত লক্ষণ ও উপসর্গগুলি সাধারণত অনুভূত হতে পারে:
- খাবার গিলতে অসুবিধে হওয়া।
- গলায় ব্যথা।
- কর্কশ স্বর।
- মাথাব্যথা।
- কাশি।
- গ্রীবার লসিকা গ্রন্থি ফুলে ওঠা।
- জ্বর।
- বমনেচ্ছা এবং বমি।
এর প্রধান কারণগুলি কি কি?
গলায় সংক্রমণের প্রধান কারণ হল ভাইরাস এবং ব্যাক্টেরিয়া।
- গলায় প্রায় 90% সংক্রমণ ভাইরাসের জন্য হয়। সাধারণত গলায় সংক্রমণের জন্য দায়ী ভাইরাসই ফ্লু, সর্দি, হুপিং কাশি, চিকেনপক্স এবং হামের কারণ।
- ব্যাক্টেরিয়া ঘটিত গলার সংক্রমণ সাধারণত স্ট্রেপ্টোকক্কাল সংক্রমণের কারণে।
ধূমপান, দূষণ এবং অ্যালার্জি গলায় সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়িয়ে তুলতে পারে।
এটি কিভাবে নির্ণয় এবং চিকিৎসা করা হয়?
চিকিৎসক সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির সম্পূর্ণ শারীরিক পরীক্ষা করবেন এবং জানতে চাইবেন যে তিনি এমন কোনও ব্যক্তির আশেপাশে ছিলেন কিনা যিনি কান, নাক বা গলায় সংক্রমণে আক্রান্ত। জ্বরের উপস্থিতি দেখার জন্য ডাক্তার শরীরের তাপমাত্রা মাপবেন এবং সেই সঙ্গে কান, নাক, গলা এবং গ্রীবার লসিকা গ্রন্থির পরীক্ষা করবেন। চিকিৎসক যদি গলায় সংক্রমণ সন্দেহ করেন, তাহলে তিনি স্ট্রেপ টেস্ট এবং গলার তরলের নমুনার ল্যাবোরেটরি টেস্ট করানোর পরামর্শ দিতে পারেন।
গলায় সংক্রমণ দূর করার জন্য নিম্নলিখিত উপায়গুলি নির্ধারিত:
- ব্যাক্টেরিয়া ঘটিত সংক্রমণের ক্ষেত্রে আন্টিবায়োটিক।
- ভাইরাল সংক্রমণের চিকিৎসা।
- গলাব্যথায় আরামের জন্য ইবুপ্রোফেন এবং অ্যাস্পিরিনের মতো ব্যথা উপশমকারী ওষুধ।
- ডিহাইড্রেশন এড়াতে বেশি করে জলপান।
প্রেসক্রিপশন ছাড়া গলার লজেন্স এবং ঠাণ্ডা আমেজ আনা মিস্ট ভেপোরাইজার গলাব্যথা এবং অন্যান্য সাধারণ উপসর্গ থেকে থেকে রেহাই দিতে সাহায্য করে।
পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার অভ্যাস মেনে চলা গলার সংক্রমণ রোধে সহায়ক।