সোয়াইন ফ্লু কাকে বলে?
সোয়াইন ফ্লু একপ্রকার ভাইরাস যা মূলত শূকরদের আক্রমণ করে কিন্তু মানুষের মধ্যেও এর বিশ্বব্যাপী প্রকোপ দেখা গেছে।
এটি এইচ1এন1 ভাইরাস নামেও পরিচিত এবং এটি ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসের একটি প্রকার।
এর প্রধান লক্ষণ ও উপসর্গগুলি কি?
- সোয়াইন ফ্লুতে সাধারণ ফ্লু এর উপসর্গগুলি দেখতে পাওয়া যায়, এবং এটি অত্যন্ত সংক্রামক।
- যে মানুষের নাক দিয়ে জল পড়ে, গলা চুলকায় এবং প্রচন্ড কাশি হয় তার শ্বাসতন্ত্রের উপর এর সবথেকে বেশি প্রভাব পড়ে।
- সংক্রমণের কারণে জ্বর আসে এবং দুর্বলতা ও ক্লান্তি দেখা দেয়। ক্ষুধাও কমে যেতে পারে।
- অন্যান্য উপসর্গের মধ্যে থাকে চোখ কড়কড় বা চোখ দিয়ে জল পড়া।
- সোয়াইন ফ্লুতে আক্রান্ত ব্যক্তির পেটে ব্যথা, বমিভাব ও বমিও হতে পারে।
এর প্রধান কারণগুলি কি?
- এইচ1এন1 ভাইরাসের সংক্রমণকে সোয়াইন ফ্লু বলা হয় তার কারণ এই ভাইরাসটির সাথে শুকরদের আক্রমণকারী ভাইরাসটির সাদৃশ্য আছে। এই ভাইরাসের স্ট্রেইনগুলি মানুষ, পাখি ও শুকরদের উপর প্রভাববিস্তার করে।
- পশুদের মধ্যে এই ভাইরাসের সংক্রমণ ঘটে ভাইরাস সমৃদ্ধ বায়ুতে শ্বাসগ্রহণের মাধ্যমে।
- ভাইরাসপূর্ণ বায়ুতে শ্বাস নেওয়ার ফলে এই ভাইরাস মানুষের শরীরে প্রবেশ করে ও সংক্রমণ ঘটায়।
- অর্থাৎ পোলট্রির কর্মীদের সোয়াইন ফ্লুতে আক্রান্ত হওয়ার উচ্চ সম্ভাবনা থাকে।
- যখন বিশ্বব্যাপী সোয়াইন ফ্লুএর প্রকোপ দেখা দিয়েছিল তখন মানুষের মধ্যে এর দ্রুত সংক্রমণ ঘটেছিল কারণ এই রোগটির বিরুদ্ধে তাদের কোন প্রতিরোধ ব্যবস্থা ছিলনা।
কিভাবে এটি নির্ণয় করা হয় এবং এর চিকিৎসা কি?
- সোয়াইন ফ্লু প্রাদুর্ভাবের সন্দেহ করা হচ্ছে এমন সময়ে যদি ফ্লুএর মত উপসর্গ দেখা দেয় তবে চিকিৎসক রোগ নির্ণয়ের সময়ে সোয়াইন ফ্লুর সন্ধান করবেন।
- সোয়াইন ফ্লুর একটি নির্ণয় পদ্ধতি হল নাসিকাক্ষরণ বা গলা থেকে নমুনা সংগ্রহ করে তাকে মাইক্রোস্কোপের নিচে পরীক্ষা করা।
- এছাড়া কিছু আণবিক পরীক্ষা এবং দ্রুত ইনফ্লুয়েঞ্জা নির্ণায়ক পরীক্ষা আছে, কিন্তু সেগুলি তুলনামূলক কম কার্যকরী।
চিকিৎসা
- ভাইরাল রোগে আক্রান্তদের এন্টিভাইরাল ওষুধ দেওয়া হয়।
- অধিকাংশ ক্ষেত্রে রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি এবং আলাদা করে রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়, কারণ এই ভাইরাসটি অত্যন্ত সংক্রামক।
- কিছু নির্দিষ্ট ওষুধের প্রতি যদি ভাইরাসটি প্রতিরোধ সৃষ্টি করে তবে অন্য ধরণের অ্যান্টিভাইরাল ওষুধ দেওয়া হতে পারে।
- এই ভাইরাসের বিরুদ্ধে টিকাকরণ সৃষ্টি করা হয়েছে যা অত্যন্ত কার্যকরী। যেহেতু পোলট্রি ও মানুষের মধ্যে এই রোগটি আগুনের মত ছড়িয়ে পড়ে তাই মহামারীর সময়কালে টিকা নেওয়া অত্যন্ত প্রয়োজনীয়, বিশেষত শিশু, বৃদ্ধ ও অন্তঃসত্ত্বা মহিলাদের জন্য।