সুইমার’স ইয়ার (কানের ছিদ্রপথে সংক্রমণ) কাকে বলে?
সুইমার’স ইয়ার, যার অপর নাম ওটিটিস এক্সটারনা, হল বহিঃকর্ণনালিকার সংক্রমণ। এই নালিটি কানের ভিতরে আওয়াজ পৌছে দেয়। জলে বহুক্ষণ সময় কাটায় এমন মানুষদের মধ্যে সাধারণত দেখা যায় বলে এই সংক্রমণকে সুইমার’স ইয়ার বলে।
এর প্রধান লক্ষণ ও উপসর্গগুলি কি?
সুইমার’স ইয়ারের মৃদু উপসর্গের মধ্যে পড়ে কানের ব্যথা ও চুলকানি। কান লাল হয়ে যেতে পারে, এমনকি কান থেকে সামান্য তরলের ক্ষরণও দেখা যেতে পারে।
সংক্রমণ যত অগ্রসর হতে থাকে, ব্যথার তীব্রতা, লালভাব, এবং চুলকানি তত বৃদ্ধি পায়। তরলের সাথে কান থেকে পুঁজ বেরোনো শুরু হয়। রোগী শ্রবণে সমস্যার অভিযোগও করতে পারে।
সংক্রমণ যথেষ্ট অগ্রসর পর্যায়ে পৌঁছে গেলে উপরোক্ত সমস্যাগুলি আরো খারাপ অবস্থায় পৌছে যায়। উপরন্তু সংক্রমণের কারণে জ্বর এবং লসিকাগ্রন্থির স্ফীতিও দেখা দিতে পারে।
এর প্রধান কারণগুলি কি?
- সুইমার’স ইয়ার ঘটে মূলত ব্যাকটেরিয়া, ছত্রাক ও ভাইরাসের মত জীবাণুর ফলে।
- কানের ভিতরের আর্দ্রতা ব্যাকটেরিয়ার বংশবিস্তারের জন্য উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করে। এই কারণে জলে বেশিক্ষণ সময় কাটায় এমন মানুষদের এই সংক্রমণের সম্ভবনা বেশি হয়।
- কানখুস্কি, পিন, এমনকি আঙুল দিয়েও বারবার কান খুঁচালে সংক্রমণের সম্ভাবনা বৃদ্ধি পায়।
- ইয়ারফোন বা কানের অলংকারের মতো বহিরাগত বস্তুও সংক্রামক জীবাণু বহন করতে পারে।
- ত্বকের এলার্জি আছে এমন মানুষের মধ্যে এই সংক্রমণে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে।
কিভাবে এটি নির্ণয় করা হয় এবং এর চিকিৎসা কি?
রোগীর চিকিৎসার ইতিহাস ও উপসর্গগুলির উপর নির্ভর করে চিকিৎসক কানের পরীক্ষা শুরু করেন।
- ওটোস্কোপ নামক একটি বিশেষ যন্ত্রের সাহায্যে কর্ণগহ্বরের ভিতরে কোন লালভাব, পুঁজ বা বর্জ্য আছে কিনা তা পরীক্ষা করা হয়।
- কর্ণপটহ যদি গুরুতর ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে থাকে তবে কোন জীবাণুর কারণে সংক্রমণ ঘটেছে তা জানতে অতিরিক্ত তদন্তের প্রয়োজন পড়ে।
চিকিৎসা
- এর প্রাথমিক চিকিৎসা হল অ্যান্টিমাইক্রোবিয়ালের সাহায্যে জীবাণুগুলি ধ্বংস করা।
- একটি বিশেষপ্রকৃতির মৃদু অম্লীয় দ্রবণের সাহায্যে কান পরিষ্কার করা হয় এবং বর্জ্য অপসারণ করা হয়।
- স্টেরয়েডযুক্ত কানের ড্রপ ব্যবহারের মাধ্যমে কর্ণনালিকার প্রদাহ কমানো হয়।
- কোন গুরুতর জটিলতা ছাড়া সাধারণত 10-12 দিনের মধ্যেই এই সংক্রমণের নিরাময় ঘটে।