জগ্রেন্স সিনড্রোম কি?
1933 সালে ডাক্তার হেনরিক জগ্রেন অটোইমিউন রোগ হিসেবে এই উপসর্গটিকে প্রথমবার চিহ্নিত করেন, এই অসুখে শরীরের আর্দ্রতা উৎপাদনকারী কোষগুলি নষ্ট হয়ে যায়। 40 বছরের বেশি বয়সী ব্যক্তিদের মধ্যেই রোগটি বেশিরভাগ দেখা যায় এবং বিশেষত মহিলারাই আক্রান্ত হন। প্রায়শই, এটা আবার রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস অথবা লুপাস রোগের মতো অন্যান্য অটোইমিউন রোগে জটিলতা হিসেবে প্রকট হয়।
এর প্রধান লক্ষণ ও উপসর্গ কি?
প্রধান উপসর্গগুলির মধ্যে রয়েছে:
- চোখের শুষ্কতার ফলে ঝাপসা দৃষ্টির সঙ্গে জ্বালা, চুলকুনি আর ব্যথাভাব এবং ফোলা চোখ
- মুখের শুষ্কতার ফলে:
- মুখ অথবা গলায় খাবার এঁটে যাওয়া।
- গলার স্বর কর্কশ এবং মসৃণ লালচে জিভ।
- ঠোঁটের কোণা শুকনো ফাঁটা।
- স্বাদের অনুভূতি পরিবর্তন।
- দাঁতের ক্ষয়, মুখে ঘা এবং মুখে ছত্রাকের সংক্রমণ।
- শুকনো চুলকুনিযুক্ত ত্বক।
- গাঁট ও পেশীতে ব্যথা।
- লসিকা গ্রন্থি ফুলে ওঠা।
- মহিলাদের ক্ষেত্রে যোনির শুষ্কতা।
- রোদ থেকে গায়ে ফুসকুড়ি।
এর প্রধান কারণ কি?
এর কারণ এখনও অজানা, কিন্তু এই রোগে আক্রান্তদের অধিকাংশেরই রক্তে একটি অস্বাভাবিক রকমের প্রোটিনের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়। দেহের রোগপ্রতিরোধক ব্যবস্থা প্রথমে নাক, চোখ এবং মুখের চারপাশে থাকা শরীরের আর্দ্রতা সৃষ্টিকারী গ্রন্থিগুলিকে নিশানা করে।
এটি কিভাবে নির্ণয় এবং চিকিৎসা করা হয়?
উপসর্গ দেখার জন্য ডাক্তার প্রথমে আপনার চোখ ও মুখ পরীক্ষা করবেন। কখনও কখনও রোগ নির্ণয় মুশকিল হয়ে যায়, কারণ নানান ওষুধের পাশ্বপ্রতিক্রিয়ার ফলে মুখ ও চোখের শুষ্কতা দেখা দেয়। রোগ নির্ণয় নিশ্চিত করার জন্য রক্ত পরীক্ষা, চক্ষু পরীক্ষা, সায়ালোগ্রাফি (লালার প্রবাহ দেখার জন্য লালা গ্রন্থিতে ইঞ্জেকশনের মাধ্যমে রঞ্জক প্রবেশ করানোর পর এক্স-রে করা হয়), স্যালাইভারি সিন্টিগ্রাফি (রক্তে তেজস্ক্রিয় আইসোটোপ ইঞ্জেকশনের মাধ্যমে প্রবেশ করিয়ে দেখা হয়, তা লালা গ্রন্থিতে পৌঁছতে কতোটা সময় লাগছে) এবং ঠোঁটের বায়োপসির মতো নির্দিষ্ট কিছু পরীক্ষা করা হয়।
লুব্রিকেটিং আই ড্রপ ব্যবহার করে চোখের শুষ্কতা সামাল দেওয়া যেতে পারে। বারবার জল পান, চ্যুইং গাম এবং লালা উদ্রেগকারী বিকল্পের ব্যবহার মুখের শুষ্কতা কমাতে পারে। মুখে ইস্ট সংক্রমণের চিকিৎসায় অ্যান্টিফাংগাল ওষুধের ব্যবহার হয়। রোগপ্রতিরোধী ব্যবস্থাকে নিয়ন্ত্রণে আনতে মাঝেমধ্যে ইমিউনোসাপ্রেসান্ট ওষুধের ব্যবহার করা হয়।