রেসপিরেটরি ডিস্ট্রেস সিনড্রোম কি?
নেওন্যাট্যাল রেসপিরেটরি ডিস্ট্রেস সিনড্রোম (আরডিএস) একটি অবস্থা যার ফলে শ্বাস নিতে কষ্ট ও সমস্যা হয় এবং এটি প্রধানত অপরিণত শিশু এবং সদ্যজাতদের মধ্যে দেখা যায়। এটি প্রাপ্ত বয়স্কদের মধ্যে প্রায় দেখা যায়না বললেই চলে বা খুবই কম দেখ যায় এবং এটি অ্যাকিউট রেসপিরেটরি ডিস্ট্রেস সিনড্রোম (এআরডিএস) হিসাবে দেখা দেয়, যা প্রধানত আসল রোগ বা আঘাতের 24 থেকে 48 ঘন্টার মধ্যে হয়।
এটির প্রধান লক্ষণ এবং উপসর্গগুলি কি?
আরডিএস এর উপসর্গগুলি সাধারণত সদ্যজাতদের মধ্যে কখনো জন্মের কিছু মিনিটের মধ্যে বা জন্মের পরে কিছু ঘন্টার মধ্যে দেখা যায়, এবং এর মধ্যে থাকতে পারে:
- দ্রুত এবং/বা অগভীর শ্বাসপ্রশ্বাস।
- হাঁপিয়ে যাওয়া বা অ্যাপনেয়া (স্বল্প সময়ের জন্য শ্বাস নেওয়া বন্ধ হয়ে যাওয়া)।
- শ্বাস নেওয়ার সময় ঘোঁৎ ঘোঁৎ শব্দ করা।
- শ্বাসপ্রশ্বাস এর চলাচল ঠিক মত না হওয়া।
- শ্বাস নেওয়ার সময় নাকের ফুটো বড় হয়ে যাওয়া।
- প্রস্রাব কমে যাওয়া।
- ত্বকের রঙ এবং মিউকাস মেমব্রেনের রঙ বদলে যায় যা নীল রঙের হয়ে যায় (সায়ানসিস)।
এর প্রধান কারণ কি কি?
আরডিএস সদ্যজাতদের যাদের ফুসফুস এখনো সম্পূর্ণভাবে বিকাশ হয়নি তাদের মধ্যেই বিকশিত হয় এবং এটি প্রধানত সারফ্যাকটান্ট (একটি পিচ্ছিল পদার্থ যা পরিণত এবং সম্পূর্ণ ভাবে বিকাশ পাওয়া ফুসফুসের মধ্যে থাকে) এর অভাবের কারণে হয় যা বায়ু থলির চুপসে যাওয়া আটকায় ফুসফুসকে বায়ু দিয়ে ভর্তি করতে সাহায্য করার মধ্যমে। ফুসফুসের বিকাশের সময় জিনগত ত্রুটির কারণে আরডিএস হতে পারে। এটি অপরিণত বাচ্চাদের মধ্যে খুবই সাধারণ এবং পরিণত বাচ্চাদের মধ্যে সচরচর দেখা যায় না। মেকণিয়াম অ্যাস্পিরেশন, যেটা হল দুর্ঘটনাক্রমে যদি শিশু মায়ের গর্ভে থাকাকালীন নিজের পায়খানা খেয়ে ফেলে তাহলে তার ফলে আরডিএস হতে পারে।
এটি কিভাবে নির্ণয় এবং চিকিত্সা করা হয়?
চিকিত্সক সম্পূর্ণ পরীক্ষা করে তারপর নিচে উল্লেখ করা পরীক্ষাগুলি করার পরামর্শ দেয়:
- কোনও সংক্রমণ আছে কিনা তা জানতে রক্ত পরীক্ষা।
- বুকের এক্স-রে, ফুসফুসের গ্রাউন্ড গ্লাস আকার সনাক্ত করার জন্য, যা সাধারণত জন্মের 6 থেকে 12 ঘণ্টা পর দেখা যায়।
- রক্ত গ্যাস বিশ্লেষণ, শরীরের তরলের মধ্যে অস্বাভাবিক অক্সিজেনের মাত্রা এবং অ্যাসিডের মাত্রা সনাক্ত করার জন্য।
সদ্যজাত যারা এই সমস্যায় ভুগছে বা যাদের মধ্যে এই সমস্যা হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে তাদের ক্রিটিক্যাল কেয়ারে রাখা উচিত এবং একজন বিশেষজ্ঞ দ্বারা নজরে রাখা উচিত। শিশুদের সঠিক শারীরিক তাপমাত্রায় রাখতে হবে এবং তার সঙ্গে তাদের খুব যত্নসহকারে ধরতে হবে এবং আশেপাশের পরিবেশ শান্ত রাখতে হবে। তরল এবং পুষ্টি ভালোভাবে পরিচালনা করতে হবে এবং যদি কোনও সংক্রমণ থাকে তাহলে তার চিকিত্সা করতে হবে। পরিচালনার বা ব্যবস্থাপনার বিভিন্ন প্রকারের মধ্যে রয়েছে:
- যত্নশীল তত্ত্বাবধানে এবং সবসময়ে নজরে রেখে সদ্যজাতকে উষ্ণ, আদ্র অক্সিজেন দিতে হবে।
- অতিরিক্ত বা কৃত্তিম সারফ্যাকটান্ট দিতে হবে, যা সাধারণত শিশুর শ্বাসনালির মধ্যে দিয়ে সরাসরি দেওয়া হয়।
- ভেন্টিলেটরের পরামর্শ তখনই দেওয়া হয় যখন:
- রক্তে কার্বন ডাইঅক্সাইডের মাত্রা বেশি থাকে এবং অক্সিজেনের মাত্রা কম থাকে।
- রক্তে পিএইচ (অ্যাসিডিটি) কম থাকে।
- যখন শ্বাস নেওয়ার সময় প্রায় শ্বাস থেমে যায়।
- ক্রমাগত পসিটিভ এয়ারওয়ে চাপ (সিপিএপি) হলো চিকিত্সার আরেকটি পদ্ধতি যা ভেন্টিলেটরের মধ্যমে দেওয়া হয় বা সিপিএপি যন্ত্রের মধ্যমে দেওয়া হয়, যার মধ্যে নাকের ভিতরে বায়ু পাঠানো হয়, এবং যার সঙ্গে সহকারী ভেন্টিলেশনের প্রয়োজন পড়ে না।