নিউরোএন্ডোক্রাইন টিউমার কি ?
নিউরোএন্ডোক্রাইন টিউমার কার্সিনয়েড নামেও পরিচিত, একাধিক কোষের এই টিউমার হরমোন নিঃসরণের পাশাপাশি স্নায়ুর বৈশিষ্ট্যসূচক, এদের নিউরোএন্ডোক্রাইন কোষ বলা হয়। এই টিউমারের বৃদ্ধি খুব ধীরে হয়। শরীরের যে কোনও অঙ্গে এটি বিকশিত হতে পারে। এটি ম্যালিগন্যান্ট (ক্যান্সারযুক্ত) অথবা বিনাইন (ক্যান্সারবিহীন) হতে পারে।
এর প্রধান লক্ষণ ও উপসর্গগুলি কি কি?
টিউমারের অবস্থানের ওপর নির্ভর করে উপসর্গ ভিন্ন হতে পারে। অবস্থান নির্বিশেষে নিচে কিছু সাধারণ উপসর্গ উল্লেখ করা হল, যা অবস্থান নির্বিশেষে হয়:
- গরম বের হওয়া (মুখ ও ঘাড়ে ঘাম ছাড়াই)।
- ডায়রিয়া।
- শ্বাস নিতে অসুবিধা।
- উচ্চ রক্তচাপ।
- ক্লান্তি, দুর্বলতা।
- তলপেটে ব্যথা, টান ধরা, পেটভার অনুভব।
- অস্বাভাবিকভাবে ওজন বৃদ্ধি অথবা হ্রাস।
- শ্বাসের সময় সাঁইসাঁই শব্দ, কাশি।
- পায়ের পাতা ও গোড়ালিতে ফোলাভাব।
- চামড়ায় ক্ষত, চামড়ায় ফ্যাকাশে ছোপ।
- রক্তে শর্করার মাত্রা বেশি অথবা কম।
এর প্রধান কারণগুলি কি কি?
নিউরোএন্ডোক্রাইন টিউমারের সঠিক কারণ এখনও জানা যায়নি। নিউরোএন্ডোক্রাইন টিউমারের বিকাশের সম্ভাবনা বৃদ্ধি পায় যদি নিম্নোলিখিত বংশগত অবস্থাগুলি থাকে:
- মাল্টিপল এন্ডোক্রাইন নিওপ্লাসিয়া টাইপ 1।
- নিউরোফাইব্রোমাটোসিস টাইপ 1।
- ভন হিপেল-লিনডাউ সিন্ড্রোম।
কিভাবে এটি নির্ণয় ও চিকিৎসা করা হয়?
নিউরোএন্ডোক্রাইন রোগের নির্ণয় করা হয় নিম্নলিখিত পরীক্ষাগুলির মাধ্যমে করা হয়:
- রক্ত পরীক্ষা।
- টিস্যুর বায়োপসি।
- জিনগত পরীক্ষা এবং কাউন্সেলিং।
- স্ক্যান, যার মধ্যে রয়েছে:
- আলট্রাসাউন্ড
- কম্পিউটারাইজড টোমোগ্রাফি
- ম্যাগনেটিক রিজোনেন্স ইমেজিং
- পজিট্রন এমিসন টোমোগ্রাফি
- অক্ট্রিওটাইড স্ক্যান - এই ধরনের স্ক্য়ানে একটি মৃদু তেজস্ক্রিয় তরল শিরার মধ্যে ইনজেকশন দিয়ে প্রবেশ করানো হয় এবং ক্যামেরার সাহায্যে ক্যান্সারযুক্ত কোষগুলি সনাক্ত করা হয়
- লেপ্রস্কপি
- নিউক্লিয়ার মেডিসিন ইমেজিং
অবস্থান, টিউমারের প্রবলতা এবং রোগীর সামগ্রিক স্বাস্থ্যের উপর নিউরোএন্ডোক্রাইন রোগের চিকিৎসা নির্ভর করে। এই রোগের জন্য যে চিকিৎসাগুলি উপলব্ধ, তা হল:
- অস্ত্রোপ্রচার: স্থানীয় কোনও অঙ্গে হওয়া বা লোকালাইজড টিউমার অস্ত্রোপ্রচার করে বাদ দেওয়া যেতে পারে এবং এটি চিকিৎসার প্রথম ধাপ হিসেবে বিবেচিত।
- কেমোথেরাপি, হরমোন থেরাপি/ও টার্গেটেড থেরাপি ব্যবহৃত হয় জটিল ও গুরুতর নিউরোএন্ডোক্রাইন টিউমারের চিকিৎসায়।
- ওষুধ প্রয়োগ: সোমাটোস্ট্যাটিন অ্যানালগ (অস্ট্রিওটাইড বা ল্যানরিওটাইড) অনেক হরমোনের বৃদ্ধি আটকে দেয় এবং উপসর্গগুলির তীব্রতা হ্রাস করে রোগের অগ্রগতিকে ত্বরান্বিত করে দেয়।
- রেডিওথেরাপি: এক্স-রে অথবা গামা রশ্মির সাহায্যে রক্ত সরবরাহ বন্ধ করে দিয়ে টিউমার হ্রাস করা করা অথবা তার বৃদ্ধি আটকে দেওয়া হয়।