ফুস্ফুসে সংক্রমণ কি?
ভাইরাস, ছত্রাক অথবা ব্যাকটেরিয়ার আক্রমন দ্বারা ফুস্ফুসে সংক্রমণ ঘটে। ভাইরাসঘটিত ফুস্ফুসে সংক্রমণ ব্যাকটেরিয়াঘটিত ফুস্ফুসে সংক্রমণের থেকে বেশি ঘটে। সাধারণতভাবে পরিলক্ষিত ফুস্ফুসে সংক্রমণগুলি হল যক্ষ্মা, ব্রঙ্কাইটিস, ব্রঙ্কিওলাইটিস, ফ্লু এবং নিউমোনিয়া।
এর প্রধান লক্ষন ও উপসর্গগুলি কি কি?
যে ব্যাক্তির ফুস্ফুসে সংক্রমণ হয়েছে তার নিম্নলিখিত উপসর্গগুলি দেখা যায়:
- নিশ্বাস নিতে অসুবিধা।
- বুকে ব্যাথা।
- মাথা ব্যাথা।
- ক্ষুধামান্দ্য।
- জ্বর ও শরীর ঠান্ডা হয়ে যাওয়া।
- কাশির সাথে শ্লেষ্মা নির্গমণ।
- নিশ্বাস নেওয়ার সময় শব্দ হওয়া।
- সাধারণ ব্যাথা ও ক্লান্তির অনুভূতি।
- ডায়রিয়া, অস্বস্তি ও বমি ফুস্ফুসে সংক্রমণ থাকা শিশুদের মধ্যে পরিলক্ষিত হয়।
এর প্রধান কারনগুলি কি কি?
ফুস্ফুসে সংক্রমণের কারণগুলি হল ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস বা মাইকোপ্লাজমা, যা একটি বিশেষ ধরণের ব্যাকটেরিয়া। ফুস্ফুসে সংক্রমণের জন্য দায়ী সাধারণ ব্যাকটেরিয়াগুলি হল স্ট্রেপ্টোকক্কাস নিউমোনি, স্ট্যাফাইলোকক্কাস অরেয়াস, হেমোফিলাস স্পেসিস এবং মাইকোব্যাক্টিয়াম টিউবারকুলোসিস। সাধারণত যেসকল ভাইরাসগুলি ফুস্ফুসে সংক্রমণ সৃষ্টির জন্য দায়ী সেগুলি হল রেস্পিরেটরি সিনসিশিয়াল ভাইরাস, ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস, রেস্পিরেটরি অ্যাডিনোভাইরাস এবং প্যারাইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস। অ্যাসপারগিলোসিসের মত ছত্রাকও সাধারণত ফুস্ফুসের সংক্রমণ সৃষ্টি করে।
নিম্নলিখিত প্রকারের সংক্রমণগুলি ব্যাকটেরিয়া এবং ভাইরাসের দ্বারা ঘটে থাকে:
- যক্ষ্মারোগ।
- নিউমোনিয়া।
- ইনফ্লুয়েঞ্জা।
- ব্রঙ্কিওলাইটিস।
- ব্রঙ্কাইটিস।
কিভাবে এটি নির্ণয় করা হয় এবং এর চিকিৎসা কি?
ফুস্ফুসে সংক্রমণ নির্ণয়ের জন্য ডাক্তার নিম্নলিখিত পরীক্ষাগুলি করার পরামর্শ দিতে পারেন:
- সংক্রমণের সময় সৃষ্টি হওয়া অ্যান্টিবডিগুলির উপস্থিতি জানার জন্য রক্ত পরীক্ষা।
- ব্যাকটেরিয়া বা ভাইরাসের উপস্থিতি সনাক্ত করার জন্য শ্লেষ্মা পরীক্ষা।
- ফুসফুসের পর্যবেক্ষণের জন্য বুকের এক্স-রে বা সিটি স্ক্যানের মত ইমেজিং বা প্রতিবিম্বকরণ দ্বারা পরীক্ষা।
ফুস্ফুসে সংক্রমণের অন্তর্নিহিত কারণের ওপর সঠিক চিকিৎসা নির্ভর করে। রোগ নিরাময় করতে ডাক্তার অ্যান্টিবায়োটিক বা অ্যান্টিফাঙ্গালের মত ওষুধগুলি নির্ধারণ করতে পারেন। কিছু ক্ষেত্রে ফুস্ফুসের ভিতরে অস্ত্রোপচার বা ভিতর থেকে ফুস্ফুসকে পরিষ্কার করা হয় সম্পূর্ণভাবে সংক্রমণ দূর করার জন্য।
ফুস্ফুসকে সংক্রমণের হাত থেকে বাঁচানোর জন্য আত্মসুরক্ষার উপায় হিসাবে নিম্নলিখিত উপায়গুলি অবলম্বন করা হয়:
- প্রচুর পরিমাণে জলীয় পদার্থ পান করা।
- ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধগ্রহন।
- শরীরকে পর্যাপ্ত বিশ্রাম প্রদান।
- বাতাসকে আর্দ্রতা প্রদানকারী যন্ত্রের ব্যাবহার অথবা স্টিম নেওয়া বা বাষ্প শ্বসন।
- ভালো করে নিশ্বাস নেওয়ার জন্য চিৎ হয়ে ঘুমানো।
- ফুস্ফুসকে সরাসরি ক্ষতির হাত থেকে বাঁচাতে ধূমপান না করা।
- নিশ্বাস নিতে সমস্যা হলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া।