উচ্চ ট্রাইগ্লিসারাইড কি?
ট্রাইগ্লিসারাইড একধরনের লিপিড যা আপনার রক্তপ্রবাহে দেখা যায়। সম্পূর্ণ কোলেস্টেরলের পরীক্ষায় আপনি যে চারটি সংখ্যা দেখতে পান তার একটি হল ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রা। খাদ্যতালিকার অধিকাংশ চর্বিজাতীয় পদার্থগুলিই হল ট্রাইগ্লিসারাইড, যেগুলি প্রাথমিকভাবে ফ্যাট বা চর্বি কোষে জমা হয় এবং পরে মুক্ত হয়ে রক্তপ্রবাহের মাধ্যমে শরীরে ছড়িয়ে পড়ে। রক্তপ্রবাহে ট্রাইগ্লিসারাইডের উচ্চমাত্রা, যা হাইপারট্রাইগ্লিসারাইডিমিয়া নামেও পরিচিত, শরীরের জন্য খুবই ক্ষতিকারক হতে পারে।
এর প্রধান লক্ষণ এবং উপসর্গগুলি কি কি?
সাধারণত, উচ্চ মাত্রার ট্রাইগ্লিসারাইডের নির্দিষ্ট কোনও উপসর্গ থাকে না।
যদিও, তারা নির্দিষ্ট কিছু রোগের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয় যেমন:
- আর্টেরিওস্কেলেরোসিস - রক্তবাহক ধ্মনীগুলিকে সংকীর্ণ এবং কঠিন করে তোলে।
- করোনারি হার্ট ডিজিজ - হৃৎপিন্ডের রক্তবাহক ধমনীগুলিকে কঠিন এবং সংকীর্ণ করে তোলে।
- স্ট্রোক - মস্তিষ্কে রক্ত সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়।
- প্যানক্রিয়াটাইটিস, যেটি গুরুতর পেটে ব্যথার কারণ হয়।
এর প্রধান কারণগুলি কি কি?
উচ্চ ট্রাইগ্লিসারাইড একাধিক কারণে বা অন্তর্নিহিত অবস্থার কারণে হতে পারে যেমন:
- স্থূলতা।
- অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস।
- থাইরয়েডের কম সক্রিয়তা।
- লিভার এবং কিডনির রোগ।
- জিনগত প্রভাব।
- প্রাত্যহিকভাবে যতটা ক্যালরি ব্যবহার হয় তার থেকে অতিরিক্ত ক্যালরির খাদ্যগ্রহণ।
- অলস জীবনযাপন।
- অত্যধিক মদ্যপান।
- ধূমপান।
- ওষুধ, যেমন ডায়রিটিক্স (যা শরীর থেকে অতিরিক্ত জল বের করে দেয়), স্টেরয়েডস, জন্ম নিরোধক ওষুধ এবং ইমিউনোসাপ্রেসেন্টস (রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতা নিবারক ওষুধ)।
- যেসব মহিলা হরমোন থেরাপি নিচ্ছেন বা পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোমে আক্রান্ত মহিলাদের ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রা বৃদ্ধির ঝুঁকি বেশি।
এটি কিভাবে নির্ণয় করা হয় এবং এর চিকিৎসা কি?
- চিকিৎসাগত ইতিহাস এবং অন্যান্য পরীক্ষাগুলির দ্বারা ট্রাইগ্লিসারাইডের উচ্চ মাত্রা নির্ণয় করা হয়।
- আপনার রক্ত প্রবাহে উচ্চ ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রা সনাক্ত করার জন্য লিপিড প্রোফাইল পরীক্ষার পরামর্শ দেওয়া হয়। 150 এমজি/ ডিএল এর নীচে ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রা স্বাভাবিক হিসাবে ধরা হয়।
- রক্তের নমুনা সংগ্রহের আগে আপনার ডাক্তার আপনাকে 12 ঘন্টা উপোশের নির্দেশ দেবেন।
- উচ্চ ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রার চিকিৎসায় অন্তর্নিহিত কারণগুলির মোকাবিলা এবং তাদের নিয়ন্ত্রণ করার লক্ষ্য রাখা হয়।
- হরমোনের মাত্রা ঠিক রাখতে একজনের সঠিক ওজন বজায় রাখা উচিত এবং যে কোন অন্তর্নিহিত কিডনি বা লিভারের রোগের চিকিৎসা করা উচিত।
- আপনার ডাক্তার আপনাকে নির্দিষ্ট কিছু ওষুধ যেমন স্টয়াটিন, নিয়াসিন বা ওমেগা-3 ফ্যাটি অ্যাসিড সম্পূরক হিসাবে সেবনের পরামর্শ দিতে পারেন।
নিজের যত্ন নেওয়া:
- ধূমপান বা মদ্যপান এড়িয়ে চলা।
- স্বাস্থ্যকর খাদ্যগ্রহণ।
- নিয়মিত হাঁটতে যাওয়া এবং প্রয়োজন অনুযায়ী শরীরচর্চা করা।