গনোরিয়া কি?
গনোরিয়া একটি যৌন সংক্রামক রোগ যা নেইসেরিয়া গনোরিয়া ব্যাকটেরিয়ার দ্বারা সৃষ্ট। এটি সাধারণত সংক্রামিত ব্যক্তির সাথে অসুরক্ষিত যৌন মিলনের দ্বারা ছড়িয়ে পড়ে।
এটির প্রধান লক্ষণ এবং উপসর্গগুলি কি কি?
গনোরিয়া রোগীদের সাধারণত কোন লক্ষণ এবং উপসর্গ থাকে না এবং, যদি থাকেও, তবে তা খুবই লঘু প্রকারের। মুত্র ত্যাগের সময় যন্ত্রনা ও জ্বালা অনুভূতি, গনোরিয়ার একটি সাধারণ লক্ষণ।
পুরুষদের মধ্যে যে উপসর্গগুলি দেখা যায় সেগুলি হল:
- লিঙ্গ থেকে সাদা, হলুদ বা সবুজ রঙের তরলের নির্গমণ
- অন্ডকোষে ফোলাভাব বা ব্যাথা হওয়া (খুবই কম ক্ষেত্রে দেখা যায়)
মহিলাদের মধ্যে যে উপসর্গগুলি দেখা যায় সেগুলি হল:
- মাসিকচক্রের মধ্যবর্তি সময়ে যোনি থেকে অস্বাভাবিক রক্তপাত
- যোনি থেকে তরল নির্গমন বৃদ্ধি পাওয়া
পুরুষ ও মহিলা উভয়ের মধ্যেই যেসব সংক্রমণের উপসর্গগুলি দেখা যায়:
এর প্রধান কারণগুলি কি কি ?
এই ব্যাকটেরিয়াটি সংক্রামিত মানুষের বীর্যে (কাম), প্রি-কাম এবং সংক্রামিত ব্যক্তির যোনি তরলের মধ্যে পাওয়া যায়, এবং তাই এটি প্রধানত অসুরক্ষিত ভ্যাজাইনাল, এনাল অথবা ওরাল যৌনমিলনের দ্বারা সংক্রামিত হয়। ওই জীবাণুযুক্ত তরল লেগে থাকা হাত দিয়ে চোখ স্পর্শ করলে চোখেও এই সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়তে পারে। সন্তানের জন্মের সময় সংক্রামিত মায়ের থেকে নবজাতকের মধ্যেও এটি ছড়িয়ে পড়তে পারে।
এটি কিভাবে নির্ণয় করা হয় এবং এর চিকিৎসা কি?
প্রাথমিকভাবে, চিকিৎসক বিস্তারিত ভাবে সব ইতিহাস জানবেন, এবং একটি সম্পূর্ণ শারীরিক পরীক্ষা করবেন। এর উপর ভিত্তি করে, চিকিৎসক নিম্নলিখিত পরীক্ষাগুলির পরামর্শ দেবেন:
- সংক্রামিত জায়গাটি থেকে সোয়াব সংগ্রহ করে তা পরীক্ষা করে দেখা
- গনোরিয়া টেস্ট-কালচার,অণুবীক্ষণ যন্ত্রের মাধ্যমে নমুনার পরীক্ষা এবং নিউক্লেইক অ্যাসিড এমপ্লিফিকেশন টেস্ট (এনএএটি )
- টেস্টের জন্য মুত্রের নমুনা সংগ্রহ করা
চিকিৎসা পদ্ধতির মধ্যে রয়েছে :
- ডুয়াল থেরাপি অ্যান্টিবায়োটিক, যার একটি ডোজ মুখে এবং একটি ইনজেকশনের মাধ্যমে শরীরের মাংসপেশির ভিতরে দেওয়া হয়।
- কোনো ব্যক্তি যদি সংক্রামিত ব্যক্তির সাথে যৌন সংস্পর্শে আসেন (রোগ নির্ণয়ের ৬০ দিনের মধ্যে) তবে তাকেও বাধ্যতামূলক পরীক্ষা ও চিকিৎসার পরামর্শ দেওয়া হয়।
- গনোরিয়া আক্রান্ত ব্যক্তির ফলো-আপ টেস্ট বা পরবর্তীকালীন পরীক্ষাগুলিও করা দরকার।
- যাদের গনোরিয়ার চিকিৎসা চলছে তাদের ক্লমেডিয়ার চিকিৎসাও করানো উচিত।
- চিকিৎসা শেষ না হওয়া পর্যন্ত যৌন সংসর্গ এড়িয়ে চলা উচিত (একটি একক ডোজ নেওয়ার পরে 7 দিন অপেক্ষা করুন যৌন মিলনের আগে)।