ভাঙা কনুই কি?
ভাঙা কনুই বা ফ্র্যাকচার্ড এলবো মানে হলো, হাতের অগ্রভাগ যে জোড় বা গাঁটের মাধ্যমে ঊর্ধ্ববাহুর সঙ্গে যুক্ত, তা ভেঙে যাওয়া। কনুইয়ের জোড় তিনটি হাড় দিয়ে গঠিত - হিউমেরাস, রেডিয়াস এবং উলনা। সাধারণত, এই ধরনের ফাটল বা ভাঙার ঘটনা তখন ঘটে, যখন কনুই অথবা হাতের অগ্রভাবে সরাসরি কোনও আঘাত লাগে।
এর প্রধান লক্ষণ এবং উপসর্গ কি কি?
সবচেয়ে সাধারণ উপসর্গগুলি হলো:
- জোড়ে বা জয়েন্টের জায়গায় তীব্র ব্যথা
- কনুইয়ের জোড়া বা জয়েন্ট নাডাচাড়া করা খুব কঠিন হয়ে যায়
- কনুইয়ে আড়ষ্ঠভাব
অন্যান্য লক্ষণ এবং উপসর্গগুলি:
- কনুইয়ের ভেঙে যাওয়া অংশ ফুলে ওঠা
- কনুইয়ের চারপাশে কালশিটে ভাব, তা উপরের দিকে কাঁধ পর্যন্ত অথবা নিচের দিকে কব্জি পর্যন্ত প্রসারিত হতে পারে
- আবেগপ্রবণতা
- এক বা একাধিক আঙুল, কব্জি বা হাতে অসাড় ভাব
- কনুই বা হাত নড়াচড়া করলে যন্ত্রণা
- কোনও ব্যক্তির হয়তো অনুভূতি আসতে পারে, কনুই তার জায়গা মতো নেই বা সরে গিয়েছে
এর প্রধান কারণ কি?
কনুই ফ্র্যাকচারের সাধারণ কারণগুলির মধ্যে রয়েছে:
- আঘাত: প্রসারিত হাতের উপর ভর দিয়ে পড়ে যাওয়া, দুর্ঘটনা অথবা খেলাধুলো জনিত চোট
- এই ধরণের চোট সাধারণত কনুইয়ের গাঁটে সরাসরি আঘাত লাগলে অথবা হাত মুচড়ে যাওয়ার কারণে আঘাত লাগলে হয়I
অন্যান্য অন্তর্ভুক্ত কারণ:
অস্টিওপোরোসিস অথবা ক্যান্সারের মতো কিছু অবস্থার সঙ্গেও চিড় অথবা ভাঙন ধরার ব্যাপারটি যুক্ত। এমনকি, সামান্য আঘাতও পর্যাপ্ত ক্ষতি ডেকে আনতে পারে আর তার থেকে কনুই ভেঙে যেতে পারে।
কিভাবে নির্ণয় ও চিকিৎসা করা হয়?
ভাঙা কনুই অবস্থা নির্ণয়ের জন্য শারীরিক পরীক্ষা অবশ্য প্রয়োজনীয়।
পরামর্শ দানের সময় চিকিৎসা জনিত ইতিহাসের তথ্য নিলে ভাঙনের অথবা ফাটলের মূল্যায়ণে সাহায্য হয়।
ইমেজিং টেস্টে অন্তর্ভুক্ত:
- এক্স-রে
- সিটি স্ক্যান
বেশিরভাগ ক্ষেত্রে হাড় ভাঙা সমস্যায় হাড়ের টুকরোগুলিকে আবার সাজিয়ে দেওয়া হয়, যাতে হাড়ের টুকরোগুলি সেরে উঠতে পারে। স্লিং, কাস্ট অথবা স্প্লিন্টের সাহায্যে আহত হাড়ের নড়াচড়া বন্ধ করা হয় আর তাতে নড়াচড়ার ফলে যে অস্বস্তি ও যন্ত্রণা হয়, তাও আটকায়। হাড়ের সেরে ওঠার ক্ষেত্রে এটা দারুণ উপকারী।
অ্যানালজেসিক যন্ত্রণা কমাতে সাহায্য করে।
রিহ্যাবিলিটেশন বা পুনর্বাসন প্রক্রিয়ায় অন্তুর্ভুক্ত রয়েছে - আড়ষ্ঠতা কমাতে ফিজিকাল থেরাপি, ম্যাসাজ এবং ঠাণ্ডা সেঁক।
হাড়ের টুকরো গুরুতরভাবে তার স্থান থেকে সরে গেলে, অস্ত্রোপচারের দরকার পড়তে পারে।