এরিথেমা মাল্টিফর্ম কি?
ইরিথেমা মাল্টিফর্ম (ই এম) হল এক ধরনের অত্যধিক সংবেদনশীল ব্যাধি যা কোন সংক্রমণ বা ওষুধের কারণে হয়। এটি হলে ত্বকে ফুসকুড়ি বা র্যাস প্রভৃতি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। ইরিথেমা মাল্টিফর্ম সাধারাণত শিশু এবং প্রাপ্তবয়স্ক যুবক-যুবতীদের মধ্যে দেখা যায় এবং মহিলাদের তুলনায় পুরুষদের মধ্যে এই রোগ বেশি হয়। ভারতে গবেষণা করে পাওয়া গেছে, ‘ইরিথেমা মাল্টিফর্ম’ আক্রান্তদের সংখ্যা 25% থেকে 30%।
এর প্রধান লক্ষণ এবং উপসর্গগুলি কি কি?
ইরিথেমা মাল্টিফর্ম দুই ধরণের হয়:
- প্রথম ধরনটি লঘু প্রকারের যা প্রধানত ত্বকে এবং মুখে ঘা সৃষ্টি করে
- আরেকটি বিরল প্রকারের হয় যা মুখ এবং ত্বক ছাড়াও শরীরের অন্যান্য অংশে মারাত্মকভাবে ছড়িয়ে পড়ে
উপসর্গগুলি হল:
- ত্বকে লালচে দাগ বা প্যাচ।
- ফোস্কা সৃষ্টি হয়
- সাধারণ দুর্বলতা
- ত্বকে চুলকানি
- হাড়ের সন্ধিতে ব্যথা
- ত্বকে একাধিক ঘা
2 থেকে 4 সপ্তাহের মধ্যে সাধারণত এটি সেরে যায়, কিন্তু এটি পুনরায় হতে পারে। প্রথমবার হওয়ার পর এটি দীর্ঘ সময় ধরে বছরে প্রায় 2 থেকে 3 বার হতে পারে।
এর প্রধান কারণগুলি কি কি?
এই রোগের পিছনে সঠিক কারণটি এখনও পরিস্কার নয়, তবে প্রধান অনুঘটকগুলি হল হারপিস সিমপ্লেক্স ভাইরাস (এইচ এস ভি) টাইপ 1 ও 2 এবং মাইকোপ্লাজমা নিউমোনি। 50% ক্ষেত্রে, এই রোগের কারণ হিসেবে পাওয়া গেছে কিছু ওষুধ যেমন অ্যান্টিপাইলিপটিক্স, সালফোনামাইডিস, অ্যান্টি-গাউট ওষুধ, ব্যথা-উপসমকারী ওষুধ এবং অ্যান্টিবায়োটিক্স। কিছু রোগীর ক্ষেত্রে, এটি বংশগত কারণে হতে পারে।
কিভাবে এই রোগ নির্ণয় এবং চিকিৎসা করা হয়?
ইরিথেমা মাল্টিফর্ম রোগ সাধারণত চিকিৎসা কেন্দ্রে নির্ণয় করা হয়। ডাক্তার র্যাসের ধরন,আকার, এবং রঙের পরীক্ষা করে রোগের অবস্থা নির্ণয় করেন। অন্যান্য অবস্থা জানার জন্য ত্বকের বায়োপসি করা হয়, কিন্তু তা শুধু ইরিথেমা মাল্টিফর্ম নির্ণয়ের জন্যই করা হয় না। এইচ এস ভি সংক্রমণ নির্ণয়ের জন্য পরীক্ষাগারে পরীক্ষা করা হতে পারে। অন্যান্য যে সকল রোগগুলি হয়ে থাকতে পারে এক্ষেত্রে ত্বকে ফুসকুড়ি, আমবাত, ভাইরাসঘটিত এক্সানথামস্ এবং অন্যান্য অতিসংবেদনশীল রোগ।
চিকিৎসার প্রথম ধাপ হল সংক্রমণের কারণ চিহ্নিত করা অথবা সমস্যা সৃষ্টিকারী ওষুধ বন্ধ করা। ইরিথেমা মাল্টিফর্ম রোগ লঘু মাত্রায় হলে সাধারণত চিকিৎসা ছাড়াই কয়েক সপ্তাহের মধ্যে সেরে যায়। উপসর্গগুলি থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য সাময়িক কিছু ওষুধ, পাশাপাশি অ্যান্টিসেপটিক, অ্যান্টিহিস্টামাইনস এবং মাউথওয়াশ ব্যবহার করা যেতে পারে। ব্যথা কমানোর জন্য ওষুধ দেওয়া হতে পারে। ছাল ওঠা বা ফোস্কা পড়া অবস্থা এবং ক্ষয়ে যাওয়া ত্বকের জন্য, ময়েস্ট কমপ্রেস বা জলীয় চাপান ব্যবহার করা যেতে পারে। অন্যান্য চিকিৎসাগুলি হল:
- সংক্রমণের জন্য অ্যান্টিবায়োটিক
- ব্যথা বা প্রদাহ কমানোর জন্য স্টেরয়েড