অ্যানেস্থেসিয়া কী?
অ্যানেস্থেসিয়া একটি চিকিৎসা পদ্ধতি যাতে কোনো ব্যাক্তি অপারেশনের সময় যন্ত্রনা এড়াতে সমর্থ হয়। অ্যানেস্থেসিয়া বিভিন্ন রকমের ওষুধ ব্যাবহার করে করা হয় যাকে অ্যানেস্থেটিক ড্রাগ বলা হয়। বৃহত্তর অর্থে, অ্যানেস্থেটিক ড্রাগ বা অনুভূতিনাশক ওষুধ সাধারণত তিন প্রকারের হয়: লোকাল বা স্থানীয়, রিজিওনাল বা আঞ্চলিক, এবং জেনারেল বা সাধারণ অ্যানেস্থেসিয়া।
স্থানীয় ও আঞ্চলিক অ্যানেস্থেটিকস বা অনুভূতিনাশক পদার্থ ব্যাবহার করা হয় শরীরের বিশেষ একটি অংশ অবশ করতে যখন রোগী অপারেশন চলাকালে জেগে থাকেন। যেখানে,জেনারেল বা সাধারণ অ্যানেস্থেসিয়া রোগীকে অপারেশন চলাকালে ঘুম পাড়িয়ে রাখে।
কিভাবে এটি কাজ করে?
যখন জেনারেল অ্যানেস্থেসিয়া কোনও ব্যাক্তিকে দেওয়া হয়, তখন মস্তিষ্ক ও শরীরে স্নায়ুর সংকেত ব্যাহত হয়। এইক্ষেত্রে, ব্যাক্তি সম্পূর্ন তাঁর আশেপাশের ব্যাপারে অজ্ঞাত থাকেন। এটা মস্তিষ্ককে অনুমতি দেয় না ব্যাথা অনুভুতি বোঝার জন্য ফলে অঙ্গটি/শরীরের সেই অংশটি যেটা অ্যানেস্থেসিয়া করা হয়েছে সেটা অবশ অবস্থায় থাকে।
অ্যানেস্থেসিয়া শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়াকে স্থির রাখতে সাহায্য করে, যেমন হৃৎস্পন্দন, রক্তচাপ এবং শরীরের স্ট্রেস হরমোন নির্গমণ।
কাদের এটি প্রয়োজন হয়?
অ্যানেস্থেসিয়া কোন ব্যাক্তিকে দেওয়া হয় অত্যন্ত যন্ত্রনা থেকে মুক্তি পেতে। ব্যথার ধরণের উপর নির্ভর করে বা কী ধরনের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে তার উপর নির্ভর করে অ্যানেস্থেসিয়ার ব্যাবহার ও পরিবর্তন হয়।
এটা সাধারনত ব্যাবহার করা হয় যদি ত্বক ভেদ করার মতো চিকিৎসা ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হচ্ছে, যেটাতে দীর্ঘ সময় লাগতে পারে, শ্বাসগ্রহণকে প্রভাবিত করতে পারে, বা কোন গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গকে প্রভাবিত করতে পারে, যেমন হৃদযন্ত্র বা মস্তিষ্ক।
এটি কিভাবে কাজ করে?
সাধারণত, যে ব্যাক্তির এই চিকিৎসা পদ্ধতিটি গ্রহণ করে সে ইতিপূর্বেই তার অ্যানেস্থেটিস্ট-এর সাথে মিলিত হয়। এটা তাদের অনেক উপকৃত করে যাদের কোনো শারীরিক জটিলতা আছে বা চিকিৎসা সংক্রান্ত সমস্যা আছে। ব্যাক্তির পূর্ব ইতিহাস যাচাই করে, চিকিৎসক অনেক সময় কিছু ওষুধ নিতে মানা করেন যেগুলি অ্যানেস্থেসিয়ার আগে নিলে জটিলতা দেখা দিতে পারে।
অ্যানেস্থেসিয়া সাধারনত নিম্নলিখিত ভাবে দেওয়া হয়:
- ইনজেকশন বা সুঁচ প্রয়োগ
- ইন্হেলেশন বা শ্বাসগ্রহণের দ্বারা
- টপিক্যাল বা সাময়িক (চামড়ায় সরাসরি ব্যাবহার বা শরীরের কোনো অংশের উপড়ি স্তরে ব্যবহার) লোশন
- স্প্রে
- আই ড্রপস
- স্কিন প্যাচ বা চামড়ায় দাগ দেওয়ার মাধ্যমে
এটা প্রবেশ করানো্র সময় বৈদ্যুতিক যন্ত্র ব্যবহার করা হয় যা সমানে নজর রাখে শরীরের মুখ্য পরিমাপকগুলির উপর, যেমন রক্তচাপ, হৃদস্পন্দনের হার,এবং শ্বাস প্রশ্বাসের হার।
লোকাল বা রিজিওনাল অ্যানেস্থেসিয়াতে, ব্যাক্তি জেগেই থাকেন এবং চিকিৎসক অ্যানেস্থেসিয়া প্রয়োগ করেন অপারেশনের জায়গায়, যেমন দাঁতের চিকিৎসায় মুখের মধ্যে, শ্রোণী-সংক্রান্ত ছোট অপারেশনের জন্যে পিঠের নীচের দিকে, এইরকমই আরো ক্ষেত্রেও। এক্ষেত্রে, যে জায়গায় অ্যানেস্থেসিয়া প্রবেশ করানো হয় শুধু সেই জায়গাটাই অবশ হয় এবং কোনওরকম ব্যাথা ছাড়াই সার্জারী বা শল্যচিকিৎসা সম্পন্ন হয়।