WPW এর সিন্ড্রোম (উলফ-পারকিনসন-হোয়াইট সিনড্রোম) কি?
স্বাভাবিক অবস্থায়, হৃদযন্ত্রের বৈদ্যুতিক সংকেতই হৃদস্পন্দন নিয়ন্ত্রণ করে। এই বৈদ্যুতিক সংকেতগুলো হৃদযন্ত্রের উপরের প্রকোষ্ঠ থেকে নিচের প্রকোষ্ঠতে একটা টিস্যু বা শরীরকলার মাধ্যমে পৌঁছায় যাকে অ্যাট্রিওভেন্ট্রিকুলার নোড (এভি) বলা হয়। এই সংকেতগুলো ভেন্ট্রিকলসে ঢোকার আগে এভি নোডে একটু থামে। উলফ-পারকিনসন-হোয়াইট সিনড্রোমে (ডাবলুপিডাবলু), আরেকটা অতিরিক্ত পথ থাকে যেটির দ্বারা সংকেত এভি নোডে না থেমে নিচের প্রকোষ্ঠে সরাসরি প্রেরণ হয়। ফলে হৃদস্পনের মাত্রা বেড়ে যায়, যা মিনিটে প্রায় 200 বার পর্যন্ত হতে পারে স্বাভাবিক সময়ে যেখানে মিনিটে 70-80 হয় স্পন্দিত হয় হৃদপিন্ড।
এর প্রধান লক্ষণ ও উপসর্গগুলো কি কি?
WPW এর সিন্ড্রোমে নিম্নলিখিত উপসর্গগুলো দেখা যায়:
- অত্যন্ত দ্রুতগতিতে হৃদস্পন্দনের পর্যায় লক্ষ্য করা যায়।
- বুক ধড়ফড়।
- বুকে কঠিনভাব ও বুকে ব্যথা।
- শ্বাসকষ্ট।
- রক্তচাপ কমে যাওয়া।
- মাথা ঘোরা।
এর প্রধান কারণগুলো কি কি?
WPW এর কারণগুলো এখনো জানা যায় নি, কিন্তু নিচে বলা কারণগুলো এর জন্য দায়ী হতে পারে:
- পুং লিঙ্গের ব্যক্তিদেরই আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা।
- হৃদযন্ত্রের জিনগত ত্রুটি।
- মা বা বাবার থেকে এই রোগ পাওয়া।
এটি কিভাবে নির্ণয় করা হয় ও এর চিকিৎসা কি?
WPW নির্ণয়ের জন্য নিম্নলিখিত পরীক্ষাগুলো করা হয়:
- চিকিৎসাগত ইতিহাস জানতে চাওয়া হয় এবং ব্যাক্তির শারীরিক পরীক্ষা করা হয়।
- হৃদযন্ত্রের গঠনমূলক ত্রুটির সম্ভাবনা দূর করার জন্য ইকোকার্ডিওগ্রাম পরীক্ষা।
- হৃদযন্ত্রের বৈদ্যুতিক সংকেত চলাচল পরীক্ষা করার জন্য ইলেক্ট্রোকার্ডিওগ্রাম পরীক্ষা।
- হৃদযন্ত্রের কর্মসূচীর পরীক্ষা, এটা দেখার জন্য যে কর্মসূচীর সম্পাদনে কোন অস্বাভাবিকতা আছে কিনা।
- হৃদযন্ত্রের বৈদ্যুতিক সক্রিয়তা পরীক্ষার জন্য ইলেক্ট্রোফিজিওলজি পরীক্ষা।
WPW এর চিকিৎসা পদ্ধতি নিচে বলা হল:
- হৃদস্পন্দন কম করার জন্য বা যাতে হৃদস্পন্দন অতিরিক্ত না বেড়ে যায় তারজন্য অ্যান্টি-অ্যারিথমিক ওষুধ দেওয়া হয়।
- যখন ওষুধে কোনো কাজ হয় না তখন WPW সিন্ড্রোম নিয়ন্ত্রণের জন্য ইলেক্ট্রিকাল কার্ডিওভারশন পদ্ধতির সাহায্য নেওয়া হয়।
- ইলেক্ট্রোফিজিওলজি পরীক্ষা, যার সাহায্যে অবাঞ্ছিত পথটি একটা সংক্ষিপ্ত রেডিওফ্রিকোয়েন্সি চিকিৎসা পদ্ধতিতে বন্ধ করা হয়।
- ওপেন হার্ট সার্জারী করা হয় অবাঞ্ছিত অতিরিক্ত পথটি বন্ধ করার জন্য।