ধনুষ্টঙ্কার (টিটেনাস) রোগ কি?
ধনুষ্টঙ্কার (টিটেনাস) রোগ বা দাঁতে দাঁতে লেগে যাওয়া একটি স্নায়বিক অবস্থা যা একটি টাটকা বা খোলা ক্ষত ক্লস্ট্রিডিয়াম টেটানি নামক ব্যাক্টেরিয়া দ্বারা সংক্রামিত হওয়ার ফলে হয়।
এটির প্রধান লক্ষণ এবং উপসর্গগুলি কি কি?
ধনুষ্টঙ্কার (টিটেনাস) এর প্রধান লক্ষণ হলো চোয়ালের পেশী শক্ত হয়ে যাওয়া, তাই এর নাম লকজ। ক্ষতের চারপাশে এবং পেশীতেও ব্যথা অনুভূত হয়। ধনুষ্টঙ্কার (টিটেনাস) এর অন্য বিশিষ্ট উপসর্গগুলি হলো:
- ডায়রিয়া।
- শরীরের উচ্চ তাপমাত্রা।
- মাথা যন্ত্রনা এবং ঘাম হওয়া।
- পেশীতে জোরে ঝাঁকুনি বা মৃদু ঝাঁকুনি দেত্তয়া।
- খাবার গিলতে অসুবিধা।
- উচ্চ রক্ত চাপ।
- হৃদস্পন্দনে বৃদ্ধি।
এর প্রধান কারণগুলি কি?
ধনুষ্টঙ্কার (টিটেনাস) ক্লোস্ট্রিডিয়াম টিটানি ব্যাকটেরিয়া থেকে বিষাক্ত পদার্থ নিঃসরণের কারণে হয়। এই ব্যাকটেরিয়া হোস্টের শরীরের বাইরে যথেষ্ট পরিমাণ সময় বেঁচে থাকতে পারে। এরা মাটিতে বা পশুদের মলের মধ্যে থাকে। এই ব্যাক্টেরিয়াগুলি মানবদেহে কোনও ক্ষত বা ঘায়ের মধ্যে দিয়ে প্রবেশ করে এবং দ্রুতগতিতে বংশবৃদ্ধি করে, সাধারণত 3 থেকে 21 দিনের মধ্যে। এরা একটি বিষাক্ত পদার্থ নিঃসরণ করে যা স্নায়ুকে প্রভাবিত করে এবং এর ফলে এর চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য প্রকাশ পায়।
এটি কিভাবে নির্ণয় এবং চিকিত্সা করা হয়?
যদি একজন ব্যক্তি সাম্প্রতিক ক্ষত বা পুড়ে যাওয়াতে ভোগে এবং তারপর তার মধ্যে উপরে উল্লেখ করা উপসর্গগুলি দেখা দেয় বা হঠাত্ করে পেশীতে টান ধরে তাহলে, চিকিত্সক ধনুষ্টঙ্কার (টিটেনাস) হওয়ার সম্ভাবনা মনে করতে পারে। চিকিত্সক ব্যক্তিটিকে জিজ্ঞাসা করতে পারেন যে তিনি আগে টিটেনাস ভ্যাকসিন নিয়েছেন কিনা, নাকি বুস্টার শটটা নেওয়া এখনো বাকি আছে। যেহেতু টিটেনাসের নির্ণয়ের জন্য কোনও নিশ্চিত পরীক্ষা নেই তাই এর চিকিত্সা উপসর্গগুলির এবং ইমিউনাইসেশনের ইতিহাসের উপর নির্ভর করে।
সংক্রমণ প্রতিরোধ করার জন্য প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেওয়া উচিত যার মধ্যে রয়েছে ক্ষতের সঠিক যত্ন নেওয়া এবং টিটেনাসের ভ্যাকসিন নেওয়া। টিটেনাস একটি চিকিত্সাগত জরুরী অবস্থা যার জন্য রোগীকে দ্রুত হাসপাতালে ভর্তি করা উচিত এবং ইন্টেসিভ মেডিকাল চিকিত্সা দেওয়া প্রয়োজনীয়। যদি একজন ব্যক্তি এই ব্যাক্টেরিয়া দ্বারা সংক্রামিত হয় তাহলে তাকে টিটেনাস ইমিউনোগ্লোবিউলিন (অ্যান্টিবডি যা ব্যাক্টেরিয়াকে নষ্ট করে) এবং ওষুধ যার মধ্যে রয়েছে অ্যান্টিবায়োটিক্স যেমন পেনিসিলিন এবং পেশীর জন্য রিলাক্স্যান্ট দেওয়া হয়। গুরুতর সংক্রমণের ক্ষেত্রে রোগী যাতে শ্বাস নিতে পারে তার জন্য তাকে কৃত্রিম শ্বাসযন্ত্রের অবলম্বন দেওয়া হয়।