সিট্টাকোসিস কাকে বলে?
সিট্টাকোসিস বা প্যারট ফিভার হল এক প্রকারের সংক্রমণ যা ক্লেমাইডিয়া সিটাকি নামক ব্যাকটেরিয়ামের ফলে ঘটে। এই ব্যাকটেরিয়াম পাখিদের সংক্রমিত করে, বিশেষত বিভিন্ন প্রকার টিয়া, মুরগি, টার্কি, তোতা পাখি, পায়রা, কাকাতুয়া এবং অন্যান্য পাখিদের যারা উড়তে পারে। আক্রান্ত পাখির সংস্পর্শে আসলে তার থেকে মানুষের মধ্যেও এই সংক্রমণ ছড়াতে পারে।
এর প্রধান লক্ষণ ও উপসর্গগুলি কি?
এই রোগে সংক্রমিত কিছু মানুষের মধ্যে কোন উপসর্গই দেখা নাও যেতে পারে; কিন্তু ইনকিউবেশন সময়সীমার পরে, সবথেকে পরিচিত যে উপসর্গগুলি সিট্টাকোসিসের দিকে ইঙ্গিত করে তারা হল:
- জ্বর ও গায়ে কাঁটা দেওয়া সহ ফ্লু-এর মত অন্যান্য উপসর্গ।
- বমিভাব ও বমি।
- ডায়রিয়া।
- ক্লান্তি এবং দুর্বলতা।
- গাঁটে ও পেশিতে ব্যথা।
সিট্টাকোসিসের ফলে সাধারণত ফ্লু-এর মত উপসর্গ দেখা যায়, কিন্তু মনে রাখতে হবে যে এই উপসর্গগুলো দেখা দিতে শুরু করে পূর্বে উল্লিখিত কোন সংক্রমিত পাখির সংস্পর্শে, বিশেষত বনাঞ্চলে, আসার 9-15 দিনের মধ্যে।
এর প্রধান কারণগুলি কি?
সিট্টাকোসিস রোগের মূল বা একমাত্র কারণ হলো কোন সংক্রমিত বা অসুস্থ পাখির সংস্পর্শে আসা। কোন পাখি ক্লেমাইডিয়া সিটাকি দ্বারা আক্রান্ত কিনা তা জানার সবথেকে সহজ উপায় হল পাখিটির মধ্যে নিচের উপসর্গগুলির উপস্থিতি লক্ষ করা:
- পাখিটির চোখ ও নাক থেকে তরল ঝরা এবং কম্পন।
- ঝিমুনি বা আলস্য, ঘুমভাব।
- খাওয়া কমে যাওয়া বা সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যাওয়া।
- মল বা মূত্রের রং পরিবর্তন (বিভিন্ন প্রকার সবুজ)।
- ডায়রিয়া।
কিভাবে এটি নির্ণয় করা হয় এবং এর চিকিৎসা কি?
সিট্টাকোসিসের নির্ণয়করণ বিশেষ পরিচিত নয়, এবং আক্রান্তের উচিত চিকিৎসককে সাম্প্রতিককালে যেকোন সংক্রমিত পাখির সংস্পর্শে আসার ঘটনা জানানো। সিট্টাকোসিস নির্ণয় নিশ্চিত করার জন্য সাধারণ রক্ত পরীক্ষা ও থুতুর কালচার করা হয়।
এছাড়া, ব্যাকটেরিয়াটির এন্টিবডির উপস্থিতি নিশ্চিত করার জন্য এন্টিবডি টাইটার টেস্টের নির্দেশ দেওয়া হতে পারে। শরীরে ব্যাকটেরিয়া জাতীয় বহিরাগত উপাদান (এন্টিজেন) চিহ্নিত হলে দেহের রোগপ্রতিরোধ ব্যবস্থা এন্টিবডি তৈরি শুরু করে। এই এন্টিবডির প্রকৃতি এবং মানুষের দেহে এর মাত্রা থেকেও সিট্টাকোসিস রোগটির নির্ণয় নিশ্চিত করা যায়।
সিট্টাকোসিসের চিকিৎসা হয় এন্টিবায়োটিক দিয়ে, সবথেকে বেশি ব্যবহৃত ওষুধদুটি হল ডক্সিসাইক্লিন এবং টেট্রাসাইক্লিন। জ্বর কমে যাওয়ার পরেও দীর্ঘ সময় এন্টিবায়োটিক খেতে হয়। এর সম্পূর্ণ নিরাময় সম্ভব তবে তার জন্য পর্যাপ্ত সময় লাগে।