পটাশিয়ামের অভাব কি?
পটাশিয়ামের অভাব বা ঘাটতি একটি বিরল অবস্থা, যা চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় হাইপোক্যালেমিয়া নামে পরিচিত। এই অবস্থায় শরীরে নির্দিষ্ট লক্ষণ এবং উপসর্গ দেখা দেওয়ার মতো পটাশিয়ামের অভাব তৈরি হয়।
এর প্রধান লক্ষণ এবং উপসর্গগুলি কি কি?
পটাশিয়াম অভাবের প্রথম এবং সবচেয়ে সাধারণ উপসর্গ হল সারা শরীরে দুর্বলতা এবং ক্লান্তি। এই অভাবের অন্যান্য বিশেষ উপসর্গগুলি হল:
- খাবার হজমে সমস্যা।
- পেশীতে টান এবং আড়ষ্ঠতা।
- বুক ধড়ফড়ানি (লক্ষণীয়ভাবে দ্রুত, অনিয়মিত এবং জোরালো হৃদস্পন্দন)।
- শ্বাস নিতে সমস্যা।
- অঙ্গপ্রত্যঙ্গে অসাড় অথবা ঝিঁঝিঁভাব।
এর প্রধান কারণগুলি কি কি?
নানান চিকিৎসাজনিত অবস্থা এবং ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার ফলে পটাশিয়ামের অভাব হতে পারে। কিছু কারণ নিচে তালিকাভুক্ত করা হল:
- ডায়রিয়া এবং বমির গুরুতর ঘটনা।
- বিপুল পরিমাণে রক্ত হ্রাস।
- কিডনি খারাপ বা কিডনির বিকলতা।
- লিউকোমিয়া (ব্লাড ক্যান্সারের একটি ধরন)।
- হাঁপানি এবং এমফিসেমার ব্যবহৃত ওষুধের ফলে পটাশিয়ামের ঘাটতি হতে পারে।
এটি কিভাবে নির্ণয় এবং চিকিৎসা করা হয়?
উপরে উল্লেখিত উপসর্গগুলি নিয়ে হাজির হলে চিকিৎসক কিছু পরীক্ষা করানোর পরামর্শ দিতে পারেন, যেমন - রক্ত পরীক্ষা, এর সাহায্যে রক্তপ্রবাহে পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম এবং অন্যান্য খনিজ উপাদানের মাত্রা দেখা যেতে পারে।
হৃদপিণ্ডের অনিয়মিত স্পন্দনের ক্ষেত্রে, ইলেকট্রোকার্ডিওগ্রামের (ইসিজি) পরামর্শ দেওয়া হতে পারে, কারণ পটাশিয়ামের ঘাটতি হৃদস্পন্দনে প্রভাব ফেলতে পারে।
এই অবস্থার চিকিৎসা সহজ এবং উপসর্গের দ্রুত উন্নতি দেখা যায়। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির অবস্থা এবং উপসর্গের উপস্থিতির উপর নির্ভর করে চিকিৎসক বিভিন্ন ধরনের ওষুধের পরামর্শ দেবেন। যদি রক্তপ্রবাহে পটাশিয়ামের পরিমাণ বিপদজ্জনকভাবে কম না হয়, তাহলে চিকিৎসক নির্দিষ্ট কিছু ওষুধ অথবা পটাশিয়াম লবণ যুক্ত সিরাপ দিতে পারেন পটাশিয়ামের ভারসাম্যতা ফেরাতে।
যদি অবস্থা গুরুত্বর হয় এবং সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি যদি দ্রুত হৃদস্পন্দনের সমস্যা অনুভব করেন, তবে তার (পুরুষ অথবা মহিলা) শিরায় পটাশিয়ামের সম্পূরক প্রদান করা হয়।
পটাশিয়ামের ঘাটতির বিপদ এড়াতে যতটা সম্ভব মদ্যপান কম করা উচিত এবং সুষম খাদ্যতালিকা মেনে চলা উচিত।