প্ল্যান্টার ফ্যাসাইটিস কি?
প্লান্টার ফ্যাসিয়া হল পায়ের পাতার নিচে অবস্থিত এক ধরনের মোটা টিস্যু অর্থাৎ পায়ের তালু। এই ফ্যাসিয়া গোড়ালির হাড়কে পায়ের আঙুলের সঙ্গে যুক্ত করে বলে ধনুকের ছিলার মতো দেখতে হয়। প্লান্টার ফ্যাসিয়ার প্রদাহকেই প্লান্টার ফ্যাসাইটিস বলে। পায়ের পাতা সংক্রান্ত সমস্যায় এর অভিযোগ সবচেয়ে বেশি পাওয়া গিয়েছে এবং এটি অক্ষমতাও ডেকে আনতে পারে।
এর সঙ্গে জড়িত লক্ষণ এবং উপসর্গগুলি কি?
যেহেতু লিগামেন্টের প্রদাহের কারণে এই অবস্থা সৃষ্টি হয়, তাই প্ল্যান্টার ফ্যাসাইটিসের প্রাথমিক উপসর্গ হল গোড়ালির ব্যথা এবং পায়ের তালুর যন্ত্রণা, তার সঙ্গে গোড়ালির অংশে লালচেভাব এবং ফোলা ভাব দেখা দিতে পারে। ব্যথা কখনও কখনও জ্বালাভাব হিসেবে অনুভূত হতে পারে। ব্যথা তীব্র বা নিস্তেজ হতে পারে। সাধারণত, সকালবেলা পায়ের পাতার ওপর ভর করে দাঁড়ানোর পর ব্যথা অনুভব হয়।
হাঁটাচলা, দৌড়ানো বা সিঁড়ি দিয়ে ওঠার মতো নানান শারীরিক ক্রিয়াকলাপের ফলে ব্যথা বা যন্ত্রণা বেড়ে যেতে পারে।
এর প্রধান কারণ কি?
প্ল্যান্টার ফ্যাসাইটিসের কারণ হতে পারে:
- খেলাধুলোর সময় গোড়ালিতে টান পড়া।
- বেশি ওজন।
- দীর্ঘক্ষণ ধরে দাঁড়িয়ে থাকা।
- দীর্ঘক্ষণ হিল দেওয়া জুতো পরে থাকা।
- এমন ধরনের জুতো পরা, যা পায়ের তালুকে কম সামাল দেয়।
- অত্যধিক দৌড়নো।
- লাফঝাঁপের ফলে আঘাত।
- গোড়ালি বাড়া (হাড়বাড়া রোগ)।
আর্থ্রাইটিসের মতো নির্দিষ্ট কিছু রোগ প্ল্যান্টার ফ্যাসাইটিসের হওয়ার ঝুঁকি বাড়িয়ে দিতে পারে।
এটি কিভাবে নির্ণয় এবং চিকিৎসা করা হয়?
অবস্থার নির্ণয়ের জন্য ডাক্তার প্রথমে ব্যথার শুরু ও তীব্রতার কথা জানতে চাইবেন এবং সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি সম্প্রতি কি কি শারীরিক ক্রিয়াকলাপে যুক্ত ছিলেন, তা জানতে চাইবেন। উপসর্গের বর্ণনা এবং শারীরিক পরীক্ষা অবস্থা নির্ধারণে চিকিৎসককে সাহায্য করবে। যেসমস্ত আঘাতের লক্ষণগুলি ডাক্তার সন্ধান করবেন:
- লালচেভাব।
- প্রদাহ অথবা ফোলাভাব।
- আড়ষ্ঠতা।
রোগ নির্ণয়ের ব্যাপারে নিশ্চিত হতে এবং কোনও অন্তর্নিহিত কারণের ফলে হচ্ছে কি না, তা অনুসন্ধানের জন্য এক্স-রে’র মতো ইমেজিং টেস্ট করা হতে পারে।
প্ল্যান্টার ফ্যাসাইটিসের চিকিৎসায় ডাক্তার পেইনকিলার নেওয়ার পরামর্শ দিতে পারেন, এতে প্রদাহ কমে এবং ব্য়থায় তৎক্ষণাৎ আরাম পাওয়া যায়। অন্যান্য উপায়:
- বিশ্রাম।
- ঘুমনো অথবা অন্যান্য শারীরিক ক্রিয়াকলাপের সময় নাইট স্প্লিন্টের ব্যবহার।
- আরামদায়ক জুতা পরা।
সময়ের সাথে উপসর্গগুলি উপশম হতে থাকে, কারণ লিগামেন্টে টান পড়া সেরে ওঠে।
কিছু ক্ষেত্রে, অস্ত্রোপচারের দরকার হতে পারে।
স্ব-যত্নের পদ্ধতিগুলির মধ্যে রয়েছে প্রদাহ এবং ব্যথা কমাতে 15-20 মিনিট ধরে একটি টাবে গরম জলে পা ডুবিয়ে রাখা।