প্লেগ রোগ কি?
প্লেগ রোগ একটি প্রচন্ড ছোঁয়াচে ব্যাকটেরিয়াঘটিত রোগ যেটা মানুষ এবং অন্যান্য স্তন্যপায়ী প্রাণীদের আক্রমণ করে। মধ্যযুগের ইউরোপে একসময় এই ব্যাধির জন্য হাজার লোকের মৃত্যু হয়েছিল। এই মড়ক কালো মৃত্যু নামে পরিচিত। বর্তমানে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পশ্চিমাঞ্চলে একভাবে মানুষের প্লেগ হতে থাকে, কিন্তু এটা আফ্রিকা এবং এশিয়ার দূরবর্তী ভাগে সবথেকে বেশি উল্লেখযোগ্যভাবে হয়।
এর প্রধান লক্ষণ ও উপসর্গগুলি কি কি?
প্লেগ তিন রকমের হয় এবং উপসর্গগুলি প্লেগের ধরনের উপর নির্ভর করে।
- বুবোনিক প্লেগের জন্য তীব্র প্রদাহ অথবা টন্সিলের ফোলা এবং খারাপ মেজাজ হয় ও এর উপসর্গগুলি ফলে, জ্বর, শরীরে ব্যথা, ফোলা ক্ষতর গঠন হয় যেগুলো ফেটে যায়, এবং লসিকা গ্রন্থিতে সংবেদনশীলতা হয়। এইধরনের প্লেগ লসিকা গ্রন্থি থেকে শরীরের অন্য অংশে ছড়িয়ে পড়তে পারে।
- সেপ্টিকেমিক প্লেগে যে উপসর্গগুলো দেখা যায় সেগুলো হল, প্রচন্ড দুর্বলতা, জ্বর, ঠান্ডা লাগা, প্রচন্ড পেটে ব্যথা, এবং পায়ের কালো হয়ে যাওয়া। এইধরনের প্লেগ অধিকাংশ ক্ষেত্রে বুবোনিক প্লেগের চিকিৎসা না করালে হতে পারে।
- নিউমোনিক প্লেগে যে উপসর্গগুলো দেখা যায় সেগুলো হল, বুকে ব্যথা, শ্বাস নিতে অসুবিধা, এককভাবে কাশি এবং নিউমোনিয়া।
এর প্রধান কারণগুলো কি কি?
এই সংক্রমণ প্রধানত ইয়ারসিনিয়া পেস্টিস নামক ব্যাকটিরিয়ামের কারণে হয়, যেটা প্রধানত ইঁদুর বা মাছির মধ্যে পাওয়া যায়। এই ব্যাকটেরিয়া সংক্রামিত ইঁদুর বা মাছির কামড়ের দ্বারা মানুষ এবং অন্যান্য স্তন্যপায়ী প্রাণীদের আক্রান্ত করতে পারে। সরাসরি স্পর্শেও এই ভয়ানক ছোঁয়াচে ব্যাধি ছড়িয়ে পড়ে।
এটি কিভাবে নির্ণয় ও চিকিৎসা করা হয়?
রক্ত এবং সংক্রামিত টিস্যুর নমুনা জড়িত একাধিক ডায়াগনস্টিক পরীক্ষাগুলি প্লেগের উপস্থিতি নিশ্চিত করার জন্য করা যেতে পারে। এই ব্যাধি একটি অবশ্য জ্ঞাপনীয় ব্যাধি এবং যাতে এই ব্যাধি ছড়িয়ে না পড়ে সেইজন্য তৎক্ষনাৎ স্থানীয় চিকিৎসা কর্তৃপক্ষকে এটার খবর দেওয়ার দরকার।
প্লেগ একটা গম্ভীর অসুখ যেটার তৎক্ষনাৎ চিকিৎসা করা দরকার। চিকিৎসা বিদ্যায় উন্নতির জন্য, অ্যান্টিবায়োটিকের সাহায্যে এখন প্লেগের চিকিৎসা করা যায়। তাড়াতাড়ি নির্ণয় হলে এবং তৎক্ষনাৎ চিকিৎসা করলে দ্রুত আরোগ্য পাওয়া সম্ভাবনা বেড়ে যায়।
যারা সংক্রামিত ব্যক্তির চিকিৎসা করেন তাদেরও নজরে রাখতে হবে এবং সংক্রমণটি প্রতিরোধের জন্য সরাসরি যোগাযোগ এড়াতে হবে। আজ পর্যন্ত এই ব্যাধির কোনো টীকা বেরোয়নি।