পেমফিগাস কি?
পেমফিগাস একটি অটোইমিউন ব্যধি যেখানে ব্যক্তির নিজস্ব রোগ প্রতিরোধক ব্যবস্থাপনা তার সুস্থ ত্বকের কোষকে আক্রমন করে। এটি একটি বিরল রোগ যা ত্বকে ফোস্কা তৈরি করে। এটা সম্ভবত মারাত্বক। এই রোগটি ছোঁয়াচে নয় এবং তাই এক ব্যক্তি থেকে অন্য ব্যক্তির মধ্যে ছরিয়ে পরে না। এটি যে কোন বয়সের মানুষদের মধ্যেই প্রভাব বিস্তার করতে পারে, তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রে 50 এর উর্ধের ব্যক্তির মধ্যে দেখা যায়।
এর প্রধান লক্ষণ ও উপসর্গগুলি কি কি?
চামড়ার উপরে অনেক ফোস্কা ছড়িয়ে পরে। এমনকি ফোস্কাটা মুখের ভিতর, নাকের এবং গলার শ্লৈষ্মিক আস্তরণেও হতে পারে। এগুলি সহজেই ফেটে যায় এবং তার ফলে যন্ত্রনাদায়ক ঘা হয়, বিশেষ করে এগুলি যদি মুখের মধ্যে হয় তাহলে, তা কিছু খেতে বা পান করতে অসুবিধা সৃষ্টি করে। যদি ফোস্কাগুলি স্বরযন্ত্রে ছড়িয়ে পরে, তাহলে কথা বলার সময় একটি কর্কশ শব্দ হয় এবং সেটা বেদনাদায়ক হ্য়। ফোস্কাগুলি চোখের পাতার ভিতরের অংশে হতে পারে। চামড়ার মধ্যে উন্মুক্ত ঘাগুলি কিছুদিন যন্ত্রণাদায়ক হয় এবং তারপর একত্রিত হয়ে শক্ত আস্তরন গড়ে আর তারপর শুকিয়ে যায়। চামড়ার রঙ স্থায়ীভাবে চলে যেতে পারে এবং ক্ষতর চিহ্ন নাও দেখা যেতে পারে।
এর প্রধান কারণ কি কি?
পেমফিগাস একটি অটোইমিউন অবস্থা যার প্রকৃত কারণ এখন জানা যায়নি। অর্থাৎ শরীরের নিজের কোষগুলিকে বহিরাগত বস্তু বলে মনে করে শরীরের রোগ প্রতিরোধকারী ব্যবস্থা তাদের আক্রমণ করে। এই ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থার বৃদ্ধির জন্য কিছু নির্দিষ্ট জিন দায়ী থাকতে পারে, যদিও এই রোগ পারিবারিক উত্তরাধিকার সুত্রে কমই ছড়ায়।
কিভাবে এর নির্ণয় ও চিকিৎসা করা হয়?
যদি চর্মরোগ বিশেষজ্ঞের ফোস্কাগুলি দেখে অস্বাভাবিক মনে হয়, তাহলে তিনি চামড়ার পরীক্ষা করতে পারেন এবং মুখ ও নাকের মিউকোসাল আস্তরনেরও পরীক্ষা করতে পারেন এবং পরবর্তী সময় পরীক্ষা করার জন্য একটি ছোট নমুনা সংগ্রহ করতে পারেন। বায়প্সি ছাড়াও রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে অ্যান্টিবডিগুলির মাত্রা নির্ণয় করতে সুবিধা হয় যা এই নির্ণয়কে নিশ্চিত করতে সাহায্য করে। পেমফিগাস একটি দীর্ঘ মেয়াদি ক্রনিক রোগ। এর কোন প্রতিকার নেই। কেবলমাত্র উপসর্গ নিয়ন্ত্রণই হলো এই রোগের সম্ভাব্য চিকিত্সা।
এই চিকিত্সার মধ্যে রয়েছে উচ্চমাত্রাযুক্ত স্টেরয়েডের ব্যবহার। এটি নতুন ফোস্কা গঠনে বাধা দেয় এবং এর ব্যাথাকে নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসে। স্টেরয়েডযুক্ত ওষুধ খুব অল্প মাত্রায় এবং অল্প কয়েক সপ্তাহের জন্য ব্যবহার করতে হবে। পরে ব্যাক্তিকে ইমিউন দমনের ওষুধ দেওয়া হয় যাতে রোগটিকে আটকানো যায়। সংক্রমণ এড়াতে ফোস্কাগুলির যত্ন নেওয়া নিজের জন্য অত্যন্ত জরুরী। ব্যক্তিগত পরিচ্ছন্নতার পাশাপাশি নিয়মিত ব্যান্ডেজ পরিবর্তনের পরামর্শ দেওয়া হয়।